নেক সন্তান দুনিয়া-আখেরাতের পাথেয়

ওমর ফারুক ফেরদৌস
ওমর ফারুক ফেরদৌস ওমর ফারুক ফেরদৌস , আলেম ও লেখক
প্রকাশিত: ০৭:১৭ পিএম, ১৮ জানুয়ারি ২০২৪

নেক সন্তান আল্লাহর অনেক বড় নেয়ামত। ইহজীবনে যেমন নেক সন্তান চোখের শীতলতা ও সওয়াবের কারণ হয়, মৃত্যুর পরও নেক সন্তানের কারণে মানুষের সওয়াব জারি থাকে। আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, আদম সন্তান যখন মারা যায়, তখন তার তিন প্রকার আমল ছাড়া অন্য সব আমলের ধারা বন্ধ হয়ে যায়; ১. সদকায়ে জারিয়া (ফায়েদা অব্যাহত থাকে এ রকম সদকা যেমন মসজিদ নির্মাণ করা, কূপ খনন করে দেওয়া ইত্যাদি) ২. ইলম বা জ্ঞান যা দ্বারা মানুষ উপকৃত হতে থাকে ৩. সুসন্তান যে তার জন্য নেক দোয়া করতে থাকে। (সহিহ মুসলিম)

রাসুল (সা.) আরও বলেছেন, কোনো কোনো ব্যক্তি জান্নাতে উচ্চ মর্যাদা লাভ করে বলবে আমার এত মর্যাদার অধিকারী কীভাবে হলাম? তাকে বলা হবে, তোমার জন্য তোমার সন্তানের দোয়া ও ইস্তেগফারের কারণে তুমি এত মর্যাদা পেয়েছ। (সুনানে ইবনে মাজা, মুসনাদে আহমদ)

কোরআনে আল্লাহ মানুষকে নিজে জাহান্নামের শাস্তি থেকে বাঁচার পাশাপাশি নিজের পরিবার-পরিজনদেরও জাহান্নাম থেকে বাঁচানোর নির্দেশ দিয়েছেন। আল্লাহ তাআলা বলেন,

وَأْمُرْ أَهْلَكَ بِالصَّلاةِ وَاصْطَبِرْ عَلَيْهَا

তুমি তোমার পরিবারপরিজনদের নামাজের আদেশ দাও এবং তাতে অবিচলিত থাক। (সুরা ত্বহা: ১৩২)

আরেক আয়াতে আল্লাহ বলেছেন,

یٰۤاَیُّهَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا قُوۡۤا اَنۡفُسَکُمۡ وَ اَهۡلِیۡکُمۡ نَارًا وَّ قُوۡدُهَا النَّاسُ وَ الۡحِجَارَۃُ عَلَیۡهَا مَلٰٓئِکَۃٌ غِلَاظٌ شِدَادٌ لَّا یَعۡصُوۡنَ اللّٰهَ مَاۤ اَمَرَهُمۡ وَ یَفۡعَلُوۡنَ مَا یُؤۡمَرُوۡنَ

হে বিশ্বাসীগণ! তোমরা নিজেদের এবং তোমাদের পরিবার-পরিজনকে রক্ষা কর আগুন হতে, যার ইন্ধন হবে মানুষ ও পাথর, যাতে নিয়োজিত আছে নির্মম-হৃদয়, কঠোর-স্বভাব ফিরিশতাগণ, যারা আল্লাহ যা তাদেরকে আদেশ করেন তা অমান্য করে না এবং তারা যা করতে আদিষ্ট হয় তাই করে। (সুরা তাহরিম: ৬)

আল্লাহর নবি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) শিশুকাল থেকেই সন্তানদের উত্তম শিক্ষা ও দীনি আমলে উদ্বুদ্ধ করতে নির্দেশ দিয়েছেন। আমর ইবনে শুয়াইব (রা.) থেকে বর্ণিত আল্লাহর নবি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, তোমরা নিজের সন্তানদের সাত বছর বয়স থেকে নামাজের নির্দেশ দাও। দশ বছর বয়সে নামাজ না পড়লে তাদের প্রহার করো। (আবু দাউদ: ৪৯৫)

এ যুগে বিষয়টা যেন গুরুত্বহীন হয়ে গেছে। মানুষ নিজের কাজ, নিজের ব্যস্ততা নিয়ে ব্যস্ত থাকে, সম্পদ বৃদ্ধি করে যায়। কিন্তু সন্তানের যথাযোগ্য তরবিয়ত হচ্ছে কি না সেই খবর রাখে না। ফলে অনেক সময় যে সন্তান দুনিয়া আখেরাতের কল্যাণের কারণ হতে পারতো, সে দুনিয়া আখেরাতের অকল্যাণের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তখন আফসোস করেও কোনো লাভ হয় না।

ওএফএফ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।