গুনাহগার বান্দাদের জন্য আল্লাহর আশ্বাসবাণী

ওমর ফারুক ফেরদৌস
ওমর ফারুক ফেরদৌস ওমর ফারুক ফেরদৌস , আলেম ও লেখক
প্রকাশিত: ০৬:৩১ পিএম, ৩০ অক্টোবর ২০২৩

দুনিয়ার জীবন মানুষের জন্য পরীক্ষাক্ষেত্র। শয়তান ও নফসে আম্মারা বা কুপ্রবৃত্তি মানুষকে পাপাচারে লিপ্ত করার জন্য অনবরত চেষ্টা করতে থাকে। সুস্থ বিবেকের অধিকারী কেউ মূলত খারাপ হতে চায় না। আল্লাহর যা অপরাধ বা গুনাহ গণ্য করেছেন, তা প্রত্যেকটা সুস্থ বিবেকের কাছেই খারাপ কাজ। এরপরও প্রবৃত্তির তাড়নায় ও শয়তানের ধোঁকায় পড়ে মানুষ খারাপ কাজ করে ফেলে।

আল্লাহর অনেক বড় রহমত যে তিনি বারবার গুনাহগার বান্দাকে ক্ষমা করেন। গুনাহগার যখনই যথাযথভাবে লজ্জিত হয়, গুনাহ ছেড়ে দেয় এবং তওবা করে, তিনি তাকে ক্ষমা করে দেন। কোরআনের অনেকগুলো আয়াতে আল্লাহ ঘোষণা করেছেন তিনি গাফুর ও রাহিম অর্থাৎ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। গুনাহ করে ফেললে আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হতে নিষেধ করে সব গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে আল্লাহ বলেন,

قُلْ يٰعِبَادِيَ الَّذِيْنَ اَسْرَفُوْا عَلٰۤي اَنْفُسِهِمْ لَا تَقْنَطُوْا مِنْ رَّحْمَةِ اللهِ اِنَّ اللهَ يَغْفِرُ الذُّنُوْبَ جَمِيْعًا اِنَّهٗ هُوَ الْغَفُوْرُ الرَّحِيْمُ.
বলো, ‘হে আমার বান্দাগণ, যারা নিজদের উপর বাড়াবাড়ি করেছ তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। অবশ্যই আল্লাহ সব পাপ ক্ষমা করে দেবেন। নিশ্চয় তিনি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। (সুরা জুমার: ৫৩)

কোরআনের আরেকটি আয়াতে একইরকম প্রতিশ্রুতি দিয়ে আল্লাহ বলেছেন,

وَ مَنْ يَّعْمَلْ سُوْٓءًا اَوْ يَظْلِمْ نَفْسَهٗ ثُمَّ يَسْتَغْفِرِ اللهَ يَجِدِ اللهَ غَفُوْرًا رَّحِيْمًا.
যে ব্যক্তি মন্দ কাজ করবে কিংবা নিজের ওপর জুলুম করবে তারপর আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইবে, সে আল্লাহকে পাবে ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। (সুরা নিসা: ১১০)

তবে এই সুযোগ থাকে মৃত্যু বা আল্লাহর শাস্তি চলে আসা পর্যন্ত। মৃত্যু উপস্থিত হলে, বা আল্লাহর শাস্তি চলে এলে তওবায় আর কোনো লাভ হয় না। আল্লাহ বলেন,

اِنَّمَا التَّوۡبَۃُ عَلَی اللّٰهِ لِلَّذِیۡنَ یَعۡمَلُوۡنَ السُّوۡٓءَ بِجَهَالَۃٍ ثُمَّ یَتُوۡبُوۡنَ مِنۡ قَرِیۡبٍ فَاُولٰٓئِکَ یَتُوۡبُ اللّٰهُ عَلَیۡهِمۡ وَ کَانَ اللّٰهُ عَلِیۡمًا حَکِیۡمًا وَ لَیۡسَتِ التَّوۡبَۃُ لِلَّذِیۡنَ یَعۡمَلُوۡنَ السَّیِّاٰتِ حَتّٰۤی اِذَا حَضَرَ اَحَدَهُمُ الۡمَوۡتُ قَالَ اِنِّیۡ تُبۡتُ الۡـٰٔنَ وَ لَا الَّذِیۡنَ یَمُوۡتُوۡنَ وَ هُمۡ کُفَّارٌ اُولٰٓئِکَ اَعۡتَدۡنَا لَهُمۡ عَذَابًا اَلِیۡمًا
নিশ্চয় তাদের তওবা কবুল করা আল্লাহর জিম্মায় যারা অজ্ঞতাবশত মন্দ কাজ করে। তারপর শীঘ্রই তওবা করে। আল্লাহ এদের তওবা কবুল করবেন আর আল্লাহ মহাজ্ঞানী, প্রজ্ঞাময়। এমন লোকেদের তওবা নিস্ফল যারা গুনাহ করতেই থাকে, তারপর মৃত্যুর মুখোমুখী হলে বলে, আমি এখন তওবা করছি এবং (তাদের তওবাও নিস্ফল) যাদের মৃত্যু হয় কাফির অবস্থায়। এরাই তারা যাদের জন্য আমি ভয়াবহ শাস্তির ব্যবস্থা করে রেখেছি। (সুরা নিসা: ১৭, ১৮)

তাই শয়তানের ধোঁকায় পড়ে গুনাহ করে ফেললে যতো দ্রুত সম্ভব তওবা করা উচিত। আমরা কেউ জানি না কবে আমাদের জীবন শেষ হয়ে যাবে, মৃত্যু বা আল্লাহর শাস্তি এসে উপস্থিত হবে।

ওএফএফ/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।