হাদিস থেকে শিক্ষা

ছোট ভালো কাজও তুচ্ছ নয়

ওমর ফারুক ফেরদৌস
ওমর ফারুক ফেরদৌস ওমর ফারুক ফেরদৌস , আলেম ও লেখক
প্রকাশিত: ১০:০৩ এএম, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩

আবু জর (রা.) থেকে বর্ণিত নবিজি (সা.) বলেছেন,
لا تَحقِرَنَّ مِنَ المَعْرُوف شَيْئًا، وَلَو أنْ تَلقَى أخَاكَ بوجهٍ طليقٍ
তোমরা কোনো ভালো কাজকেই তুচ্ছ ভেবো না; যদি সেটা তোমার ভাইয়ের সাথে হাসি মুখে দেখা করাও হয়। (সহিহ মুসলিম)

এ হাদিস থেকে যে শিক্ষাগুলো আমরা পাই

১. হাদিসে নেক কাজ বোঝাতে ব্যবহৃত হয়েছে মারুফ শব্দটি। মারুফ অত্যন্ত ব্যাপক শব্দ। ইতিবাচক ও ভালো যে কোনো কাজই মারুফ কাজ। তাই হাদিসের নির্দেশনা অনুযায়ী ইতিবাচক কোনো কাজের সুযোগই হাতছাড়া করা উচিত নয়। যেমন কাউকে নিজের শ্রম ও সম্পদ দিয়ে সাহায্য করা মারুফ কাজ, আবার তাকে শুধু উত্তম পরামর্শ দিয়ে সাহয্য করাও মারুফ কাজ। কেউ বিপদে পড়লে যে কোনো ভাবে তার সাহায্যে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা উচিত।

২. রাসুল (সা.) হাদিসে কোনো নেক কাজকে তুচ্ছ ভাবতে নিষেধ করেছেন। আল্লাহ বান্দার ছোট বড় সব নেক কাজই পছন্দ করেন। তাই আমাদের উচিত সব ধরনের উত্তম কাজ করার জন্যই উদগ্রীব থাকা, কোনো নেক কাজকে তুচ্ছ মনে না করা। অনেকের ক্ষেত্রে আখেরাতে মুক্তির কারণ হবে খুব সহজ কোনো আমল। আদি ইবনে হাতেম (রা.) বলেন, নবি (সা.) বলেছেন, আগুন থেকে আত্মরক্ষা করো যদি তা এক টুকরো খেজুর দিয়েও হয়, যদি তাও সম্ভব না হয়, তাহলে একটি সুন্দর কথা দিয়ে হলেও। (সহিহ বুখারি, সহিহ মুসলিম)

৩. সহজ নেক আমলও আমলকারী বা আমলের অবস্থার কারণে আল্লাহর কাছে বড় হতে পারে। অনেক সময় নেক নিয়তের কারণে আমল বড় হয়ে যায়। যেমন আব্দুল্লাহ ইবনে মুবারক বলেছেন, অনেক ছোট আমল নিয়তের কারণে বড় হয়ে যায়, আবার অনেক বড় আমল নিয়তের কারণে ছোট হয়ে যায়। (সিয়ারু আ’লামিন-নুবালা) অনেক সময় দেখা যায় আমলকারী তার সাধ্যের মধ্যে সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছে অথবা নিজের প্রয়োজন সত্ত্বেও আরেকজনকে প্রাধান্য দিয়েছে -এ কারণে তার সওয়াব বহুগুণ বেড়ে যায়। অনেক সময় এমন অবস্থায়, এমন জায়গায় বা এমন সময় কেউ কারো সাহায্য করে, যখন যে মুহূর্তে তার সাহায্যের খুব প্রয়োজন ছিলো। এভাবে স্থান, কাল ও পাত্র হিসেবে আল্লাহর কাছে ছোট আমলের সওয়াবও বহুগুণ বেড়ে যায়। আল্লাহ বলেন,

فَلَا اقۡتَحَمَ الۡعَقَبَۃَ وَ مَاۤ اَدۡرٰىکَ مَا الۡعَقَبَۃُ فَکُّ رَقَبَۃٍ اَوۡ اِطۡعٰمٌ فِیۡ یَوۡمٍ ذِیۡ مَسۡغَبَۃٍ یَّتِیۡمًا ذَا مَقۡرَبَۃٍ اَوۡ مِسۡکِیۡنًا ذَا مَتۡرَبَۃٍ
অতঃপর সে ধর্মের ঘাঁটিতে প্রবেশ করেনি। আপনি কি জানেন সে ঘাঁটি কী? তা হচ্ছে দাসমুক্তি অথবা খাদ্য দান করা দুর্ভিক্ষের দিনে। এতিম আত্মীয় অথবা ধূলিমলিন মিসকিনকে। (সুরা বালাদ: ১১-১৬)

ওএফএফ/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।