দারিদ্র্য ও ঋণ থেকে মুক্তি পেতে রাসুলের (সা.) শেখানো ৩টি দোয়া

ওমর ফারুক ফেরদৌস
ওমর ফারুক ফেরদৌস ওমর ফারুক ফেরদৌস , আলেম ও লেখক
প্রকাশিত: ০৪:৩১ পিএম, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৩

ঋণ ও দারিদ্র্য অনেক বড় মসিবত। দারিদ্র্য ও ঋণভারে জর্জরিত থাকলে মানুষের কটুকথা শুনতে হয়, মানুষের কাছে ছোট হয়ে থাকতে হয়। জীবন অসহনীয় হয়ে ওঠে। দুনিয়ার কাজকর্ম যেমন ঠিকভাবে করা যায় না, শরিয়তের নির্ধারিত কর্তব্যগুলোও ঠিকভাবে পালন করা যায় না, আল্লাহর ইবাদতেও মন লাগে না। রাসুল (সা.) দারিদ্র্য ও ঋণের বোঝা থেকে আল্লাহর আশ্রয় চেয়েছেন।

দারিদ্র্য ও ঋণ থেকে মুক্তি পেতে রাসুলের (সা.) শেখানো যে ৩টি দোয়া আমরা করতে পারি

১. রাসুল (সা.) দোয়া করতেন,
اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْفَقْرِ وَالْقِلَّةِ وَالذِّلَّةِ وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ أَنْ أَظْلِمَ أَوْ أُظْلَمَ
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইন্নি আউযুবিকা মিনা-লফাকরি ওয়া-লকিল্লাতি ওয়ায-যিল্লাতি ওয়া আউযুবিকা মিন আন আযলিমা আও উযলামা

অর্থ: হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে দারিদ্র্য থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি। আশ্রয় প্রার্থনা করছি আপনার কম অনুকম্পা ও অসম্মান থেকে এবং আমি কারও প্রতি জুলুম করা থেকে বা নিজে জুলুমের শিকার হওয়া থেকে। (সুনানে আবু দাউদ, সুনানে নাসাঈ)

২. রাসুল সা. দোয়া করতেন,

‏اللَّهُمَّ رَبَّ السَّمَوَاتِ وَرَبَّ الأَرْضِ وَرَبَّ الْعَرْشِ الْعَظِيمِ رَبَّنَا وَرَبَّ كُلِّ شَىْءٍ فَالِقَ الْحَبِّ وَالنَّوَى وَمُنْزِلَ التَّوْرَاةِ وَالإِنْجِيلِ وَالْفُرْقَانِ أَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ كُلِّ شَىْءٍ أَنْتَ آخِذٌ بِنَاصِيَتِهِ اللَّهُمَّ أَنْتَ الأَوَّلُ فَلَيْسَ قَبْلَكَ شَىْءٌ وَأَنْتَ الآخِرُ فَلَيْسَ بَعْدَكَ شَىْءٌ وَأَنْتَ الظَّاهِرُ فَلَيْسَ فَوْقَكَ شَىْءٌ وَأَنْتَ الْبَاطِنُ فَلَيْسَ دُونَكَ شَىْءٌ اقْضِ عَنَّا الدَّيْنَ وَأَغْنِنَا مِنَ الْفَقْرِ
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা রাব্বিল-আরশি ওয়া রাব্বি কুল্লি শাইইন ফালিকা-ল হাব্বি ওয়ান-নাওয়া ওয়া মুনযিলাত-তাওরাতি ওয়াল-ইনজিলি ওয়া-ল ফুরকাত আউযুবিকা মিন শাররি কুল্লি শাইইন আনতা আকিযুন বিনাসিয়াতিহি আল্লাহুম্মা আনতাল-আউয়ালু ফালাইসা কাবলাকা শাইউন ওয়া আনতাল-আখিরু ফালাইসা বা’দাকা শাইউন ওয়া আনতায-যাহিরু ফালাইসা ফাওকাকা শাইউন ওয়া আনতাল-বাতিনু ফালাইসা দুনাকা শাইউন ইকযি আন্না-দাইনা ওয়া আগনিনা মিনাল-ফাকরি।

অর্থ: হে আল্লাহ! আপনি আকাশ, জমিন ও মহান আরশের প্রতিপালক। আমাদের প্রতিপালক ও সব কিছুর প্রতিপালক। আপনি বীজ ও উদ্ভিদের সৃষ্টিকর্তা, আপনি তাওরাত, ইনজীল ও ফুরকানের অবতীর্ণকারী। আমি আপনার কাছে এমন সব ধরণের অনিষ্ট থেকে মুক্তি চাই, আপনি যার নিয়ন্ত্রক। হে আল্লাহ! আপনিই আদি, আপনার আগে কোনো কিছু নেই এবং আপনিই অন্ত আপনার পরে কোনো কিছু নেই। আপনি প্রকাশ্য, আপনার ঊর্ধ্বে কেউ নেই। আপনিই অপ্রকাশ্য, আপনার অগোচরে কিছু নেই। আমাদের ঋণ পরিশোধ করে দিন এবং দারিদ্র্য থেকে আমাদের মুক্ত করে দিন। (সহিহ মুসলিম)

৩. আবু সাঈদ খুদরী (রা.) বলেন, একদিন রাসুল (সা.) মসজিদে প্রবেশ করে আনসারি সাহাবি আবু উমামাকে (রা.) দেখতে পেয়ে জিজ্ঞাসা করলেন, আবু উমামা! মসজিদে বসে আছ কেন? এখন তো নামাজের সময় নয়।
আবু উমামা বললেন, ঋণভারে জর্জরিত ও সীমাহীন দুশ্চিন্তার কারণে অসময়ে মসজিদে বসে আছি হে আল্লাহর রাসুল!
রাসুল (সা.) বললেন, আমি কি তোমাকে এমন দোয়া শিখিয়ে দেবো, যে দোয়া করলে আল্লাহ তোমার দুশ্চিন্তা দূর করবেন এবং তোমার ঋণ পরিশোধের ব্যবস্থা করবেন?
আবু উমামা বললেন, অবশ্যই, হে আল্লাহর রাসুল!

রাসুল (সা.) বললেন, তুমি সকালে ও সন্ধ্যায় এ দোয়া করবে,

اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْهَمِّ وَالْحَزَنِ وَأَعُوذُ بِكَ مِنَ الْعَجْزِ وَالْكَسَلِ وَأَعُوذُ بِكَ مِنَ الْجُبْنِ وَالْبُخْلِ وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ غَلَبَةِ الدَّيْنِ وَقَهْرِ الرِّجَالِ

উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইন্নী আউযুবিকা মিনাল-হাম্মি ওয়াল-হুযনি, ওয়া আউযুবিকা মিন গালাবাতিদ-দাইনি ওয়া কাহরির রিজাল।

অর্থ: হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি চাই। আশ্রয় চাই অপারগতা ও অলসতা এবং কৃপণতা ও কাপুরুষতা থেকে এবং ঋণের বোঝা ও মানুষের কঠোরতা থেকে।

আবু উমামা (রা.) বলেন, আমি এ রকম আমল করি এবং এর ফলে আল্লাহ তাআলা আমার দুশ্চিন্তা দূর করেন, ঋণ পরিশোধের ব্যবস্থা করে দেন। (সুনানে আবু দাউদ)

ওএফএফ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।