সুরা আল বালাদ: ৮টি শিক্ষা ও নির্দেশনা

ইসলাম ডেস্ক
ইসলাম ডেস্ক ইসলাম ডেস্ক
প্রকাশিত: ১১:৩০ এএম, ১৮ আগস্ট ২০২৩

সুরা আল বালাদ কোরআনের ৯০তম সুরা; রুকু বা অনুচ্ছেদ সংখ্যা ১, আয়াত সংখ্যা ২০। সুরা বালাদ অবতীর্ণ হয়েছিল মক্কায়। বালাদ শব্দটি মক্কা নগরীকে নির্দেশ করছে। বালাদ শব্দের মূল অর্থ নগরী, সুরার শুরুতে আল্লাহ ‘হাযাল বালাদ’ বা এই নগরী বলে মক্কাকে নির্দেশ করে শপথ করেছেন।

সুরা আল বালাদ
১. শপথ করি এই নগরীর; ২. এই নগরীতে তুমি মুক্ত। ৩. শপথ জনকের এবং যা সে জন্ম দিয়েছে। ৪. নিশ্চয়ই আমি মানুষকে শ্রমনির্ভর রূপে সৃষ্টি করেছি। ৫. সে কি মনে করে তার ওপর কেউ ক্ষমতাবান নেই? ৬. সে বলে আমি প্রচুর ধন-সম্পদ ব্যয় করেছি। ৭. সে কি মনে করে যে তাকে কেউ দেখেনি? ৮. আমি কি তাকে দেইনি চক্ষুদ্বয়, ৯. জিহ্বা ও ওষ্ঠদ্বয়? ১০. বস্তুত আমি তাকে দুটি পথ প্রদর্শন করেছি। ১১. অতঃপর সে ধর্মের ঘাঁটিতে প্রবেশ করেনি। ১২. আপনি কি জানেন সে ঘাঁটি কী? ১৩. তা হচ্ছে দাসমুক্তি ১৪. অথবা খাদ্য দান করা দুর্ভিক্ষের দিনে। ১৫. এতিম আত্মীয় ১৬. অথবা ধূলিমলিন মিসকীনকে ১৭. অতঃপর তাদের অন্তর্ভুক্ত হওয়া, যারা ঈমান আনে এবং পরস্পরকে উপদেশ দেয় ধৈর্যের, উপদেশ দেয় দয়ার; ১৮. তারাই সৌভাগ্যবান। ১৯. আর যারা আমার আয়াতসমূহ অস্বীকার করে তারাই হতভাগ্য; তারা অগ্নিপরিবেষ্টিত অবস্থায় বন্দি থাকবে।

এ সুরায় আল্লাহ আমাদের যে শিক্ষা ও নির্দেশনা দিয়েছেন:

১. মক্কা বিশেষ মর্যাদাপূর্ণ নগরী। আল্লাহ এই সুরায় মক্কা নগরীর শপথ করেছেন। নবিজির জন্মভূমি ও আবাসস্থল হওয়ার কারণেও মক্কা সম্মানিত।

২. আদম (আ.) ও তার নেক সন্তানরাও আল্লাহর কাছে সম্মানিত, আল্লাহ এই সুরায় আদি পিতা ও তার সন্তানদের শপথ করেছেন।

৩. মানুষের দুনিয়ার জীবন শ্রমনির্ভর; নানা রকম কষ্ট ও পরিশ্রমের মধ্য দিয়ে তার জীবন অতিবাহিত হয়। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত পরিপূর্ণ সুখ বা বিশ্রাম মানুষ পায় না। অবশেষে মুমিন ও নেক আমলকারীরা জান্নাতে প্রবেশ করে চিরস্থায়ী সুখ ও বিশ্রামের সুযোগ পাবে। কাফের ও বদ আমলকারীরা জাহান্নামে গিয়ে কঠিন শাস্তির মুখোমুখী হবে।

৪. দুনিয়ার জীবনে মানুষ যে সম্পদ-ঐশ্বর্য অর্জন করে, তা মূলত আল্লাহরই দান; আল্লাহই মানুষকে সামর্থ দিয়েছেন, দৃষ্টি ও বাকশক্তি দান করেছেন, আল্লাহর ইচ্ছার বাইরে মানুষের কোনো ক্ষমতা নেই। তাই নিজের শক্তি-সামর্থ, অর্থ-বিত্ত নিয়ে অহংকার করা উচিত নয়।

৫. আল্লাহ মানুষকে ভালো-মন্দ, সুন্দর-অসুন্দর, কল্যাণ-অকল্যাণের মধ্যে পার্থক্য করার জ্ঞান দান করেন, পৃথিবীতে নবি রাসুল পাঠিয়ে সঠিক পথের দিশা দান করেন। মানুষের উচিত ভালো, সুন্দর ও কল্যণের পথ গ্রহণ করা।

৬. আল্লাহর দান করা অর্থ-সম্পদ আল্লাহর পথে, মানুষের কল্যাণে ও সৎ কাজে ব্যয় করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দরিদ্র আত্মীয়-স্বজনের খোঁজ-খবর রাখা, খাদ্যাভাবের সময় সামর্থ অনুযায়ী ক্ষুধার্তদের আহার করানো অনেক বড় পূণ্যের কাজ ও আমাদের কর্তব্য।

৭. বিশ্বাসী মুমিন হিসেবে আমাদের কর্তব্য হলো একে অপরকে ভালো কাজের উপদেশ দেওয়া, উত্তম পরামর্শ দেওয়া, পরস্পরের প্রতি সহানুভূতিশীল হওয়া, অনুগ্রহ ও দয়া করা।

৮. যারা আল্লাহর আয়াতসমূহ অস্বীকার করে। সত্য, কল্যাণ ও সুন্দরের পথ ছেড়ে অকল্যাণের পথ গ্রহণ করে, তাদের জন্য পরকালে কঠিন শাস্তি অপেক্ষা করছে।

ওএফএফ/এসইউ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।