নেক সন্তানের জন্য যেসব আমল করবেন
বাবা-মার জন্য সন্তান মহান আল্লাহ তাআলার নেয়ামত। নিঃসন্তান দম্পতিই সন্তান না থাকার সঠিক উপলব্ধি করতে পারেন। আল্লাহ বড়ই মেহেরবান। তিনি যাকে ইচ্ছা সন্তান দান করতে পারেন। এজন্য সুস্থ ও উত্তম সন্তান পাওয়ার জন্য আল্লাহর কাছে রহমত কামনা করা। তার রহমতেই মানুষ সন্তান পেয়ে থাকেন। এজন্য কিছু আমল করা যেতে পারে। কোরআন-সুন্নাহতে যে আমলগুলো করার দিকনির্দেশনা ও উৎসাহ দেওয়া হয়েছে। তাহলো-
দোয়া করা
আল্লাহর কাছে সন্তান চেয়ে বেশি বেশি দোয়া করা। এ দোয়ার বরকতে নবি-রাসুলগণ বৃদ্ধ বয়সেও সন্তান পেয়েছিলেন। সে দোয়াগুলো আল্লাহ তাআলা হুবহু কোরআনুল কারিমে এভাবে তুলে ধরেছেন-
رَبَّنَا هَبۡ لَنَا مِنۡ اَزۡوَاجِنَا وَ ذُرِّیّٰتِنَا قُرَّۃَ اَعۡیُنٍ وَّ اجۡعَلۡنَا لِلۡمُتَّقِیۡنَ اِمَامًا
উচ্চারণ: ‘রাব্বানা হাবলানা মিন আযওয়াঝিনা ওয়া জুররিয়্যাতিনা কুররাতা আইয়ুনাও ওয়াঝআলনা লিলমুত্তাক্বিনা ইমামা।’
অর্থ: ‘হে আমাদের রব! আপনি আমাদের এমন স্ত্রী ও সন্তানাদি দান করুন; যারা আমাদের চক্ষু শীতল করবে। আর আপনি আমাদের মুত্তাকিদের নেতা বানিয়ে দিন’।’ (সুরা ফুরকান: আয়াত ৭৪)
আবার যাদের সন্তান হয় না, তাদের জন্য এটি অত্যন্ত সুন্দর একটি দোয়া। বার্ধক্যে হজরত জাকারিয়া আলাইহিস সালামের সে আবেদনও মানুষের জন্য আল্লাহ তাআলা এভাবে তুলে ধরেছেন-
رَبِّ لَا تَذَرۡنِیۡ فَرۡدًا وَّ اَنۡتَ خَیۡرُ الۡوٰرِثِیۡنَ
উচ্চারণ: ‘রাব্বি লা তাজারনি ফারদাও ওয়া আংতা খায়রুল ওয়ারিছিনা।’
অর্থ: ‘হে আমার রব! আমাকে একা রেখো না, তুমি তো শ্রেষ্ঠ মালিকানার অধিকারী (অতএব আমাকে উত্তম ওয়ারিশ/সন্তান দান করুন)।’ (সুরা আম্বিয়া: আয়াত ৮৯)
হজরত জাকারিয়া আলাইহিস সালাম সন্তানের জন্য আরো একটি দোয়া করেন। সেই দোয়ায় আছে আল্লাহর প্রতি বিনয় ও নেক সন্তান পাওয়ার আশা। তাহলো-
رَبِّ هَبۡ لِیۡ مِنۡ لَّدُنۡکَ ذُرِّیَّۃً طَیِّبَۃً ۚ اِنَّکَ سَمِیۡعُ الدُّعَآءِ
উচ্চারণ: ‘রাব্বি হাবলি মিল্লাদুংকা জুররিয়াতান ত্বাইয়েবাতান; ইন্নাকা সামিউদ দোয়া।’
অর্থ: ‘হে আমার প্রভু! আমাকে তোমার পক্ষ থেকে পবিত্র সন্তান দান করো, নিশ্চয়ই তুমি দোয়া শ্রবণকারী।’ (সুরা আল-ইমরান: আয়াত ৩৮)
নেক সন্তান পাওয়ার সুন্নত আমল
নেক সন্তান পাওয়ার জন্য শয়তানের আক্রমণ থেকে বেঁচে থাকা জরুরি। তাই সহবাসের আগে সব সময় আল্লাহর কাছে এভাবে আবেদন করা-
بِسْمِ اللّهِ اللّهُمَّ جَنِّبْنَا الشَّيْطَانَ وَ جَنِّبِ الشَّيْطَانَ مَا رَزَقْتَنَا
উচ্চারণ: ‘বিসমিল্লাহি আল্লাহুম্মা জান্নিবনাশ শায়ত্বানা ওয়া জান্নিবিশ শায়ত্বানা মা রাযাক্বতানা।’
অর্থ: ‘আল্লাহর নামে, হে আল্লাহ, আমাদেরকে শয়তান থেকে দূরে রাখুন এবং আমাদের যা রিজিক (সন্তান) দেবেন তা থেকে শয়তানকে দূরে রাখুন।
নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, দাম্পত্য মিলনের আগে যদি কেউ এ কথা বলে তবে তাদের মিলনে সন্তান জন্ম নিলে তাকে শয়তান ক্ষতি করবে না। (বুখারি)
গুনাহ থেকে বিরত থাকা
নেক সন্তান বান্দার জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে বড় অনুগ্রহ। তাই নেক সন্তান পেতে স্বামী-স্ত্রীকেও নেককার হতে হবে। তাদের উভয়কে নেক আমল করতে হবে। গুনাহের কাজ থেকে বেঁচে থাকতে হবে। তবেই মহান আল্লাহ তাদের দান করবেন নেক সন্তান।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহর সবাইকে নেক সন্তান দান করুন। নিঃসন্তান দম্পতিকেও দান করুন নেক সন্তান। নেক সন্তান পেতে কোরআন-সুন্নাহর আমলগুলো মেনে চলার তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/এমএস