ঈদের দিন যেসব কাজ মোস্তাহাব ও বৈধ

ইসলাম ডেস্ক
ইসলাম ডেস্ক ইসলাম ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৪:৩৪ পিএম, ২৮ জুন ২০২৩

মুমিন মুসলমানের প্রধান ধর্মীয় উৎসব ঈদ। ঈদের দিন ও নামাজ সংশ্লিষ্ট অনেক বিষয়, মোস্তাহাব ও করণীয় রয়েছে। যেসব মাসআলা-মাসায়িল, নিয়ম-কানুনগুলো জেনে নেওয়া আবশ্যক। তাহলো-

ঈদের দিনের মোস্তাহাব কাজ

১. সামর্থ্য অনুযায়ী বেশি বেশি দান-খয়রাত করা। (দুররুল মুখতার)

২. ঈদ আল্লাহর পক্ষ থেকে মনে করে আনন্দ এবং খুশি প্রকাশ করা। (তাহতাবি আলা মারাকিল ফালাহ)

৩. নিজ মহল্লার মসজিদে ফজরের নামাজ আদায় করা। ফজরের নামাজ জামাতের সঙ্গে সর্বদা আদায় করা অত্যন্ত জরুরি এবং আবশ্যক। তবে দুই ঈদের ফজরের নামাজ মহল্লার মসজিদে জামাতের সঙ্গে আদায় করা বেশি উত্তম। (তাহতাবি আলা মারাকিল ফালাহ)

ঈদের বিশেষ মাসাইল

১. ঈদের নামাজের জন্য মসজিদের বিছানা, চাটাই, শামিয়ানা ইত্যাদি ঈদগাহে নিয়ে যাওয়া বৈধ। (ফাতাওয়ায়ে শামি)

২. দাড়ি মুন্ডানো বা একমুষ্ঠির কম দাড়ি রেখে কাটা ব্যক্তিকে ইমাম বানানো জায়েজ নেই। ঈদ এবং অন্যান্য নামাজের ক্ষেত্রে একই হুকুম। ইমামতের বেলায় উত্তরাধিকারীর দাবি গ্রহণযোগ্য নয়। বরং শরিয়তের দৃষ্টিতে ইমামতির যোগ্য হওয়া জরুরি। (দুররুল মুখতার)

৩. ঈদের দিন নামাজের আগে নিজ ঘরে বা ঈদগাহে ইশরাক, চাশত ইত্যাদি নফল নামাজ পড়া নিষিদ্ধ। ঈদের জামাতের পরেও ঈদগাহে নফল নামাজ পড়া মাকরুহ। তবে হ্যাঁ, ঘরে ফিরে ইশরাক, চাশত নফল পড়তে কোনো অসুবিধা নেই। (দুররুল মুখতার)

৪. ঈদের নামাজের সালাম ফেরানোর পর মোনাজাত করা মোস্তাহাব। ঈদের খুতবার পরে মোনাজাত করা মুস্তাহাব নয়। (মুসনাদে আহমদ)

৫. ইসলামি শরিয়তের ওজর ছাড়া ঈদের নামাজ মসজিদে আদায় করা সুন্নতের খেলাফ। (দুররুল মুখতার) উত্তম হলো খোলা আকাশের নিচে ঈদের নামাজ পড়া।

৬. যদি ইমাম অতিরিক্ত তাকবিরসমূহ ভুলবশতঃ না বলে, আর ঈদের জামাত অনেক বড় হয়, তাহলে ফেতনা ফাসাদের আশংকায় সেজদায়ে সাহু ওয়াজিব হয় না। সুতরাং সেজদায়ে সাহু করবে না। আর যদি এমন হয় যে উপস্থিত সকলেই সেজদায়ে সাহু সম্পর্কে অবগত হতে পারে তাহলে সেজদায়ে সাহু ওয়াজিব হবে। (দুররুল মুখতার)

৭. ঈদের দ্বিতীয় রাকাতের রুকুর তাকবির ওয়াজিব। যদি কোন ব্যক্তি দ্বিতীয় রাকাতের রুকুতে শরিক হয় তাহলে সে প্রথমে দাঁড়িয়ে তাকবিরে তাহরিমা বলবে। এরপর দাঁড়ানো অবস্থায় হাত তুলে অতিরিক্ত তিন তাকবির বলবে। এরপর রুকুর তাকবির বলে রুকুতে শামিল হবে। (দুররুল মুখতার)

৮. যদি কেউ প্রথম রাকাতে রুকুর আগে জামাতে শরিক হয় এবং তাকবিরে তাহরিমার পর দাঁড়ানো অবস্থায় হাত তুলে অতিরিক্ত তিন তাকবির বলার সুযোগ না পায় তাহলে রুকুতে গিয় অতিরিক্ত তিন তাকবির বলবে। তবে সে ক্ষেত্রে কান পর্যন্ত হাত ওঠাবে না। (দুররুল মুখতার)

৯. যদি প্রথম রাকাত ছুটে যায় তাহলে ইমামের সালামের পর দাঁড়িয়ে প্রথমে সুরা, কেরাত পড়বে। এরপর রুকুর আগে তিন বার হাত তুলে তিন তাকবির দেবে। তারপর রুকুর তাকবির বলে রুকু সিজদা করে যথা নিয়মে নামাজ সম্পন্ন করবে। (রুদ্দুল মুহতার)

১০. ঈদের ময়দানে জানাজার নামাজ পড়া জায়েজ। প্রথম ঈদের নামাজ এরপর জানাজার নামাজ এরপর খুতবা হবে। (রদ্দুল মুহতার)

১২. নামাজের পর ঈদের দুই খুতবা শোনা ওয়াজিব। যদি খুতবা শোনা না যায়, তাহলে চুপচাপ বসে থাকা। অনেক লোক সালামের পর খুতবা না শুনেই চলে যায়। যা সুন্নতের খেলাফ। (দুররুল মুখতার)

১৩. খুতবার সময় মুসল্লিদের কথাবার্তা বলা নিষেধ। এমন কি নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নাম উচ্চারিত হলে উচ্চস্বরে দরুদ পড়া নিষেধ। তবে মনে মনে পড়তে পারবে।

১৪. খুতবা চলাকালীন সময় দান বাক্স বা রুমাল চালানোও নিষেধ এবং গুনাহের কাজ। (মুসনাদে আহমদ, দুররুল মুখতার)

১৪. উভয় খুতবা শেষ হওয়ার মাধ্যমে ঈদের নামাজের সব কাজ শেষ হবে। এরপর ঈদের আর কোনো কাজ বাকি থাকে না। তাই খুতবা শেষ হলে সকলেই নিজের বাড়ি ফিরে আসবে। ঈদুল আজহার সময় ঈদের নামাজ পরে বাড়িতে এসে কোরবানি সম্পন্ন করা।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহর সবাইকে জিলহজ মাসের সব আমল যার যার সাধ্য অনুযায়ী করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

এমএমএস/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।