যার জন্য কোরবানি দেওয়া ওয়াজিব
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ২৯ জুন অনুষ্ঠিত হবে পবিত্র ঈদুল আজহা তথা কোরবানি। যাদের সামর্থ্য আছে তারা অবশ্যই কোরবানিতে অংশ নেবেন। কেননা তাদের জন্য কোরবানি দেওয়া ওয়াজিব।
অনেক সময় দেখা যায় অনেকে সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও কোরবানি না দেওয়ার চিন্তা-ভাবনা করেন। সামর্থ্যবানদের কোরবানি না দেওয়ার চিন্তা করা অবশ্যই ভুল। কেননা পরিস্থিতি যা-ই হোক না কেন; সামর্থ্যবানদের অবশ্যই কোরবানি দিতে হবে। এটাই ইসলামের নির্দেশ ও শিক্ষা।
নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ‘ঈদুল আজহা’ উপলক্ষে নিজেও কোরবানি করতেন এবং তার সাহাবায়ে কেরাম রাদিয়াল্লাহু আনহুমকেও কোরবানি করার জন্য তাগিদ দিতেন। ইসলামের প্রথম যুগে মুসলমানরা কতই না কষ্টের সম্মুখিন ছিলেন। তারপরও ঈদুল আজহার দিনে পশু কোরবানি করা থেকে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং তার সাহাবারা বিরত থাকেননি। হাদিসে এসেছে-
হজরত আব্দুল্লাহ বিন ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হিজরতের পর মদিনায় ১০ বছর অবস্থান করেন এবং তিনি প্রতি বছরই ‘ঈদুল আজহা’ উপলক্ষে মদিনায় কোরবানি করতেন।’ (তিরমিজি)
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের এতদূর খেয়াল ছিল যে, ওফাতের আগে তিনি তাঁর জামাতা হজরত আলি রাদিয়াল্লাহু আনহুকে অসিয়ত করে বলেছিলেন, তাঁর ওফাতের পর যেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পক্ষে ঈদুল আজহা উপলক্ষে সব সময় কোরবানি করা হয়। হজরত আলি রাদিয়াল্লাহু আনহুও তাই করেছিলেন যা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নির্দেশ দিয়েছিলেন।
হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘ঈদুল আজহার দিন মানুষের কোনো আমল আল্লাহ তাআলার কাছে কোরবানির চেয়ে বেশি প্রিয় নয়। কোরবানির পশু কেয়ামতের দিন তার শিং, পশম ও ক্ষুরসহ উপস্থিত হবে। অর্থাৎ কোরবানিদাতা ওই জিনিসগুলোর বিনিময়ে সওয়াব পাবেন। কোরবানির রক্ত মাটিতে পড়ার আগেই তা আল্লাহ তাআলার কাছে একটি বিশেষ স্থানে পৌঁছে যায়। তাই তোমরা খুশি মনে কোরবানি করো। বেশি খরচ হয়ে গেলেও মন খারাপ করো না।’ (তিরমিজি)
সামর্থ্য আছে, অবশ্যই কোরবানিতে অংশ নিতে হবে। কেননা সামর্থ্যবানদের জন্যই কোরবানি। হাদিসে এসেছে-
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও যে ব্যক্তি কোরবানি করেনি, সে যেন আমাদের ঈদগাহের কাছেও না আসে।’ (মুসনাদ আহমাদ)
সুতরাং আল্লাহ তাআলা যাদের সামর্থ্য দিয়েছেন; তারা যেন কোরবানি দেওয়ার বিষয়ে কোনো বাহানা না করে কিংবা উপায় না খোঁজে। আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনে কোরবানিতে অংশগ্রহণ করে। আল্লাহ তাআলা কবুল করুন। আমিন।
এমএমএস/এমএস