হজ-ওমরার ইহরাম বাঁধলে যেসব কাজ করা যাবে না

ইসলাম ডেস্ক
ইসলাম ডেস্ক ইসলাম ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৪:৪৫ পিএম, ১৩ জুন ২০২৩

হজ কিংবা ওমরার উদ্দেশ্যে ইহরাম বাঁধা হলো প্রথম কাজ। ইহরাম বাঁধার পর অন্য স্বাভাবিক সময়ের অনেক বৈধ কাজও নিষিদ্ধ হয়ে যায়। তাহলে ইহরাম অবস্থায় হজ-ওমরা পালনকারীকে কোন কোন বিষয় থেকে বিরত থাকতে হবে?

ইহরাম অবস্থার নিষিদ্ধ বিষয়াবলি। ইহরামের কারণে যা থেকে হজ-ওমরা পালনকারীকে এ বিষয়গুলো থেকে বিরত থাকতে হয়। তাহলো-

১. মাথার চুল মুণ্ডন করা
ইসলামিক স্কলারগণ মাথার চুলের সঙ্গে শরীরের সমস্ত পশমকে অন্তর্ভুক্ত করেছেন। অনুরূপভাবে নখ কাটা ও ছোট করাও এর অন্তর্ভুক্ত। আল্লাহ তাআলার বাণী, ‘আর তোমরা ততক্ষণ পর্যন্ত মাথা মুণ্ডন করবে না, যতক্ষণ না কোরবানির পশু যথাস্থানে পৌঁছে যাবে।’ (সুরা বাকারা: আয়াত ১৯৬])

২. সুগন্ধি ব্যবহার করা
ইহরামের পর কাপড়ে হোক কিংবা শরীরে; খাবার-দাবারে হোক কিংবা গোসলের সামগ্রীতে কিংবা অন্য যে কোন কিছুতে। অর্থাৎ ইহরাম অবস্থায় সুগন্ধি ব্যবহার করা হারাম। দলিল হচ্ছে- যে ব্যক্তিকে (ইহরামরত) একটি উট পায়ের নিচে চাপা দিয়ে মেরে ফেলেছে। সে ব্যক্তি সম্পর্কে নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বাণী, ‘তাকে পানি ও বরই পাতা দিয়ে গোসল দাও। দুই কাপড়ে তাকে কাফন দাও। তার মাথা ঢাকবে না। তাকে হানুত দিবে না”। হানুত হচ্ছে- এক জাতীয় সুগন্ধির মিশ্রণ যা মৃত ব্যক্তির গায়ে লাগানো হয়।’

৩. সহবাস করা
ইহরামকারীর জন্য স্ত্রী সহবাস নিষিদ্ধ। কেননা আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হজের নির্দিষ্ট কয়েকটি মাস আছে। যে ব্যক্তি সেসব মাসে নিজের ওপর হজ অবধারিত করে নেয়, সে হজের সময় কোনো যৌনাচার করবে না, কোনো গুনাহ করবে না এবং ঝগড়া করবে না।’ (সুরা বাকারা: আয়াত ১৯৭)

৪. উত্তেজনাসহ স্ত্রীকে ছোঁয়া
হজ-ওমরার ইহরামকারী তাঁর স্ত্রীকে উত্তেজনাসহ স্পর্শ করতে পারবে না। যেহেতু এটি আল্লাহ তাআলার বাণী- فَلَا رَفَثَ ‘যৌনাচার নেই’ এর অধীনে পড়বে। কারণ মুহরিম ব্যক্তির জন্য বিয়ে করা কিংবা বিয়ের প্রস্তাব দেওয়াও জায়েজ নেই। সুতরাং ছোঁয়া জায়েজ না হওয়াটা আরও স্বাভাবিক।

৫. কোনো শিকার হত্যা করা
গাছ কাটা মুহরিম ব্যক্তির জন্য হারাম নয়; তবে মক্কার হারামের সীমানার ভেতরের কোনো গাছ হলে তা কাটা হারাম হবে এবং সেটি মুহরিম ব্যক্তি। শুধু মুহরিম নয় এমন ব্যক্তি- যা সবার জন্য হারাম। তাই আরাফার মাঠে মুহরিম ব্যক্তির জন্যেও গাছ উপড়ানো জায়েজ। কারণ গাছ কাটার বিষয়টি হারাম এলাকার সাথে সম্পৃক্ত; ইহরামের সঙ্গে নয়। তবে ইহরাম অবস্থায় শিকার করা যাবে না। আল্লাহ তাআলার বাণী, ‘হে ঈমানদারগণ, তোমরা ইহরাম অবস্থায় শিকার বধ করো না।’ (সুরা মায়েদা: আয়াত ৯৫)

৬. সেলাই করা কাপড়
ইহরাম অবস্থায় পুরুষের জন্য খাস নিষিদ্ধ বিষয়াবলীর মধ্যে রয়েছে, সেলাই করা জামা, টুপি, পায়জামা, পাগড়ি ও মোজা পরিধান করা। নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে যখন জিজ্ঞাসা করা হয়েছে যে, মুহরিম কী পরবে? তখন তিনি বলেন, ‘মুহরিম ব্যক্তি জামা, টুপি, পায়জামা, পাগড়ি ও মোজা পরবে না। তবে যে ব্যক্তির পরার মত লুঙ্গি নেই নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে পায়জামা পরার অনুমতি দিয়েছেন এবং যার জুতা নেই তাকে মোজা পরার অনুমতি দিয়েছেন।

৭. নেকাব পরা
ইহরাম অবস্থায় নারীদের জন্য খাস নিষিদ্ধ বিষয়াবলীর মধ্যে রয়েছে- নেকাব পরা। নেকাব হচ্ছে এমনভাবে মুখ ঢাকা যাতে চোখ দুটো ছাড়া আর কিছু দেখা যায় না। অনুরূপভাবে স্কার্ফ পরাও নিষিদ্ধ। ইহরাম অবস্থায় নারীগণ নেকাব বা স্কার্ফ পরবে না। নারীর মুখ খোলা রাখা শরিয়তসঙ্গত। তবে বেগানা পুরুষের পাশ দিয়ে অতিক্রমকালে মুখ ঢেকে নেবে; যে কাপড় দিয়ে মুখ ঢাকবে সেটা যদি মুখ স্পর্শ করে তাতে কোনো অসুবিধা নেই।

এমএমএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।