জুমার প্রথম খুতবা: হজের সফর কেমন হবে?

ইসলাম ডেস্ক
ইসলাম ডেস্ক ইসলাম ডেস্ক
প্রকাশিত: ১২:৫১ পিএম, ২৬ মে ২০২৩

আজ শুক্রবার। বরকতময় হজের প্রস্তুতির মাস জিলকদের প্রথম জুমা আজ। ২৬ মে ২০২৩ ইংরেজি, ১২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০ বাংলা, ০৫ জিলকদ ১৪৪৪ হিজরি। আজকের জুমার আলোচ্য বিষয়- হজের সফর কেমন হবে?

প্রিয় মুসল্লিগণ!
হজ ইসলামের পাঁচ স্তম্ভের একটি। প্রাপ্ত বয়স্ক, সুস্থ মস্তিষ্কসম্পন্ন যে ব্যক্তির মালিকানায় নিত্য প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র এবং নিজের ও পরিবারের ভরণ-পোষণের খরচের অতিরিক্ত এমন পরিমাণ টাকা-পয়সা, স্বর্ণ-রূপা বা জমিজমা রয়েছে, যা দ্বারা সে হজে যাওয়া-আসার ব্যয় এবং হজকালীন সময়ে সাংসারিক খরচ মেটাতে সক্ষম। তার ওপর হজ আদায় করা ফরজ। আর এ হজ জীবনে একবারই ফরজ। ফরজ হজ আদায়ের পর বার বার হজ করলে তা নফল হিসেবে গণ্য হবে।

সামথ্যবান মানুষের ওপর হজ করা ফরজ। কোরআনুল কারিমে মহান আল্লাহ তাআলা বিষয়টি সুস্পষ্টভাবে তুলে ধরেছেন-
وَ لِلّٰهِ عَلَی النَّاسِ حِجُّ الۡبَیۡتِ مَنِ اسۡتَطَاعَ اِلَیۡهِ سَبِیۡلًا ؕ
‘আর সামর্থ্যবান মানুষের উপর আল্লাহর জন্য বাইতুল্লাহর হজ করা ফরজ।’ (সুরা আল-ইমরান: আয়াত ৯৭)
প্রিয় মুসল্লিগণ!
এ আয়াতে কারিমায় মহান আল্লাহ তাআলা সামথ্যবান মানুষকে তাঁর ইবাদত হজ করার নির্দেশ দিয়েছেন। যার সেখানে যাওয়ার সামর্থ্য আছে। সম্পূর্ণ রাহা-খরচ পূরণ হওয়ার মত যথেষ্ট পাথেয় যার কাছে আছে। অনুরূপ রাস্তার ও জান-মালের নিরাপত্তা এবং শারীরিক সুস্থতা ইত্যাদিও সামর্থ্যের অন্তর্ভুক্ত। নারীর জন্য মাহরাম (স্বামী অথবা যার সঙ্গে তার বিবাহ চিরতরে হারাম এমন কোন লোক) থাকাও জরুরি। (ফাতহুল কাদির) এই আয়াত প্রত্যেক সামর্থ্যবান ব্যক্তির উপর হজ ফরজ হওয়ার দলিল। হাদিস দ্বারা এ কথাও পরিষ্কার হয়ে যায় যে, হজ জীবনে একবারই ফরজ। (ইবনে কাসির)

প্রিয় মুসল্লিগণ!
হজ ফরজ হওয়ার জন্য নগদ টাকা থাকা জরুরি নয়; বরং প্রয়োজনের অতিরিক্ত হজের খরচ সমপরিমাণ জমিজমা কিংবা ব্যবসার মাল থাকলেও হজ ফরজ হবে।

নারীর হজ
আর নারীর হজ আদায়ের জন্য মাহরাম থাকা জরুরি। মাহরামের ব্যবস্থা না হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। অবশেষে মৃত্যুর আগে বা মাজুর হয়ে পড়লে কাউকে দিয়ে বদলি হজ করাবে। কিন্তু কোনো অবস্থায় মাহরাম পুরুষ ছাড়া হজে যাওয়া জায়েয হবে না। এমনকি এমন নারী আত্মীয়, যার সাথে মাহরাম আছে তার সঙ্গী হয়েও যাওয়া যাবে না।’ (মানাসিক ৫৫-৫৭; গুনইয়াতুন নাসিক ২৬)

হাদিসে পাকে এসেছে, হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছেন যে, কোনো পুরুষ বেগানা নারীর কাছে নির্জনে অবস্থান করবে না এবং কোনো নারী মাহরাম পুরুষ ছাড়া সফর করবে না। তখন এক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে বললেন, হে আল্লাহর রাসুল! আমি তো (অমুক) যুদ্ধে যাওয়ার জন্য নাম লিখিয়েছি অথচ আমার স্ত্রী হজের সফরে বের হয়েছে। রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করলেন, তুমিও যাও! তোমার স্ত্রীর সঙ্গে হজ কর।’ (বুখারি ৩০০৬)

হাদিসের অন্য বর্ণনায় এসেছে, আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, কোনো নারী যেন মাহরাম ছাড়া হজে (সফরে) বের না হয়। (দারাকুতনি ২/২২৩)

হজের ফজিলত
হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন-
مَنْ حَجَّ لِلّهِ فَلَمْ يَرْفُثْ وَلَمْ يَفْسُقْ رَجَعَ كَيَوْمٍ وَلَدَتْهُ اُمُّهُ
‘যে ব্যক্তি আল্লাহর উদ্দেশ্যে এভাবে হজ করবে যে, অশ্লীল কথাবার্তা বলবে না এবং গুনাহের কাজ করবে না; সে ঐ দিনের মতো নিষ্পাপ হয়ে হজ থেকে ফিরে আসবে যেদিন সে মায়ের গর্ভ থেকে ভূমিষ্ঠ হয়েছিল।’ (বুখারি ১৫২১, মুসলিম ১৩৫০)

হজরত আতা ইবনে ইয়াসার রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন-
مَنْ حَجَّ الْبَيْتَ فَقَضَي مَنَاسِكَهُ وَسَلِمَ الْمُسْلِمُوْنَ مِنْ لِسَانِهِ وَيَدِهِ غُفِرَ لَهَ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ.
‘যে ব্যক্তি বাইতুল্লাহর হজ করবে, হজের কাজগুলো যথাযথভাবে আদায় করবে এবং মুসলমানরা তার মুখ ও হাত থেকে নিরাপদ থাকবে তার আগের গুনাহসমূহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে।’ (মুসান্নাফ আবদুর রাযযাক ৮৮১৭)

হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন-
اَلْعُمْرَةُ اِلَي الْعُمْرَةِ كَفَّارَةٌ لِمَا بَيْنَهُمَا، وَالْحَجُّ الْمَبْرُوْرُ لَيْسَ لَهُ جَزَاءٌ اِلاَّ الْجَنَّةُ.
‘এক ওমরার পর আরেক ওমরা করলে মধ্যবর্তী সময়ের গুনাহসমূহ মাফ হয়ে যায়। আর হজে মাবরুর (মাকবুল হজ)-এর প্রতিদান একমাত্র জান্নাত।’ (বুখারি ১৭৭৩, মুসলিম ১৩৪৯)

হজরত জাবির রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন-
اَلْحُجَّاجُ وَالْعُمَّارُ وَفْدُ اللهِ، دَعَاهُمْ فَاَجَابُوْهُ وَسَئَلُوْهُ فَاَعْطَاهُمْ.
‘হজ ও ওমরাকারীগণ আল্লাহ তাআলার দল। তিনি তাদেরকে ডেকেছেন, তারা সাড়া দিয়েছে। তারা আল্লাহ তাআলার কাছে চায় তিনি তা কবুল করেন।’ (মুসনাদে বাযযার ১১৫৩, মাজমাউয যাওয়াইদ ৫২৮৮)

অন্য এক বর্ণনায় এসেছে, হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন-
اَللّهُمَّ اغْفِرْ لِلْحَاجِّ وَلِمَنْ اِسْتَغْفَرَ لَهُ الْحَاجُّ
‘হে আল্লাহ! আপনি হজ আদায়কারীকে ক্ষমা করে দিন এবং সে যার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে তাকেও ক্ষমা করে দিন।’ (ইবনে খুযাইমা ২৫১৬, মুসতাদরাকে হাকেম ১৬৫৪)

হজের করণীয়
আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন-
اَلْحَجُّ اَشْهُرٌ مَّعْلُوْمٰتٌ فَمَنْ فَرَضَ فِیْهِنَّ الْحَجَّ فَلَا رَفَثَ وَ لَا فُسُوْقَ وَلَا جِدَالَ فِی الْحَجِّ ؕ وَ مَا تَفْعَلُوْا مِنْ خَیْرٍ یَّعْلَمْهُ اللّٰهُ
‘হজ সুবিদিত মাসসমূহে হয়ে থাকে। যে ব্যক্তি সেসব মাসে (ইহরাম বেঁধে) নিজের উপর হজ অবধারিত করে নেয় সে হজের সময় কোনো অশ্লীল কথা বলবে না, কোনো গুনাহ করবে না এবং কোনো ঝগড়াও করবে না। তোমরা যা কিছু সৎকর্ম কর আল্লাহ তা জানেন।’ (সুরা বাকারা: আয়াত ১৯৭)

এই আয়াতে ইহরামকারীকে মোট তিনটি বিষয় থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে-
১. অশ্লীল কথা বলবে না। স্ত্রীর সাথেও কামোত্তেজক কথাবার্তা বলা থেকে বিরত থাকতে হবে।
২. সকল প্রকার গুনাহ থেকে বিরত থাকতে হবে। ইহরামের কারণে বিশেষভাবে যা নিষিদ্ধ এবং সাধারণ অবস্থায় যা গুনাহ; উভয় প্রকার নিষিদ্ধ কাজ থেকেই বিরত থাকতে হবে।
প্রকাশ থাকে যে, সাধারণ অবস্থায় যা করা গুনাহ ও নিষিদ্ধ ইহরাম অবস্থায় তা আরও কঠোরভাবে নিষিদ্ধ; যেমন, অন্যকে কষ্ট দেওয়া, কু-দৃষ্টি ও গিবত-শেকায়েত ইত্যাদি।
৩. ঝগড়া-বিবাদ থেকে বিরত থাকতে হবে। এটিও সব সময়ের জন্য নিষিদ্ধ ও গুনাহের কাজ। এ হিসেবে এটি দ্বিতীয় প্রকারের অন্তর্ভুক্ত। তথাপি আল্লাহ তাআলা বিশেষভাবে তা উল্লেখ করেছেন, যেন ঝগড়া-বিবাদ থেকে মুক্ত হয়ে হজের মতো মহান ইবাদত নির্বিঘ্নে আদায় করা যায়।

হজের সময় যেসব বিষয়ে ধৈর্য ধরতে হবে
প্রিয় মুসল্লিগণ!
হজ গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। হজের মধ্যে এমন কিছু কিছু ক্ষেত্র আছে, যেখানে অনেকে ধৈর্যধারণ করতে পারেন না। অথচ এই সফরের পুরো সময় আল্লাহ তাআলার এই হুকুম রয়েছে। তাই খুব সজাগ থাকতে হবে। কেউ বড় অন্যায় করে ফেললেও তার সঙ্গে ঝগড়া-বিবাদ করা যাবে না। মনে রাখতে হবে, মানুষকে ক্ষমা করে দিলে আল্লাহর কাছে ক্ষমা পাওয়া যাবে। বড় সফলতা অর্জিত হবে। হজের সফরে সাধারণত ঝগড়া-বিবাদ হতে দেখা যায় এমন কিছু ক্ষেত্র হল-
১. গ্রুপ লিডারের আচরণে কষ্ট পেলে কিংবা তাঁর দেওয়া প্রতিশ্রুতির উল্টো হলে।
২. হজের সফরের খাওয়া-দাওয়া নিয়ে।
৩. হোটেল নির্বাচন ও থাকার জায়গা নিয়ে।
৪. মিনা ও আরাফায় নামায পড়া নিয়ে।
৫. বিশেষ করে মিনায় থাকার জায়গা নিয়ে তো অনেকের একচোট ঝগড়া হয়েই যায়।
৬. মসজিদে হারামে জায়গা ধরে রাখা নিয়ে।
৭. বাসের সিট নিয়ে ইত্যাদি।
অতএব নিজের হজ কবুল হওয়ার স্বার্থেই এসব বিষয়ে ঝগড়া থেকে বিরত থাকুন।

হজের সময় যেসব রূহানি হেদায়েত জরুরি
প্রিয় মুসল্লিগণ!
হজ ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ একটি রোকন। জীবনে তা একবারই ফরজ হয়। সুদীর্ঘ সফর এবং বড় ধরনের খরচের মাধ্যমে শ্রমসাধ্য এ ইবাদতটি সম্পন্ন হয়। এজন্য এর সওয়াবও বেশি। সুতরাং হাজিদের উচিত হজের সকল কষ্টকে সৌভাগ্য মনে করে বরণ করে নেওয়া। হজের সকল কাজের উৎপত্তি ও সূচনাতে কষ্ট ও মুজাহাদার সাক্ষ্য রয়েছে। হজরত ইবরাহিম ও ইসমাঈল আলাইহিস সালামের মুজাহাদা এবং হাজেরা রাদিয়াল্লাহু আনহার কষ্ট ও মুজাহাদা দিয়ে এর সূচনা। যার কিছু ছিটেফোঁটার সম্মুখীন হাজীগণ আজও হয়ে থাকেন। তাই এখানের কষ্টকে হজের রূহ জেনে সৌভাগ্যের সঙ্গে তা মেনে নেওয়া জরুরি। এখান থেকে আল্লাহর জন্য কষ্ট সহ্য করার এবং সবরের সবক নেওয়াও আবশ্যক। তাহলো-
১. হজ ও ওমরাহ আদায়কারী আল্লাহ তাআলার মেহমান। মেহমানের বিশেষ পোশাক হল সেলাইবিহীন ইহরামের কাপড়। আল্লাহর মেহমান হওয়ার সৌভাগ্য হয়েছে এই অনুভূতি সর্বদা জাগ্রত রাখা এবং এর স্বাদ অনুভব করার চেষ্টা করা। খেয়াল রাখা, মেজবান (আল্লাহ তাআলা) অসন্তুষ্ট হন এমন কোনো কাজ যেন না হয় এবং তাঁর ঘরের অসম্মান হয়-এমন কোনো আচরণ যেন প্রকাশ না পায়।

২. ভদ্র মেহমান মেজবানের বাড়ির কোনো কিছু নিয়ে সমালোচনা করে না। এমনকি ব্যবস্থাপনাসংক্রান্ত কোনো ত্রুটি বা মেজবানের বাড়ির চাকর-নওকরের দোষ-ত্রুটিরও সমালোচনা করে না। আল্লাহর ঘরের মেহমানকেও ভদ্রতা রক্ষা করতে হবে।

৩. মক্কা মুকাররামা ও মদিনা মুনাওয়ারার মাঝে তুলনা না করা; বরং যখন যেখানে থাকার সৌভাগ্য হয় সেখানের সংশ্লিষ্ট কাজ ও ইবাদত-বন্দেগীতে মগ্ন থাকা।

৪. হজের সকল আমলের অন্যতম উদ্দেশ্য হল আল্লাহ তাআলার স্মরণ তাজা করা। তাই প্রতিটি কাজে এর খেয়াল রাখা। স্মরণ ছুটে গেলেই ইসতেগফার দ্বারা ক্ষতিপূরণ করে নেওয়া। ২৪ ঘণ্টা আল্লাহর হয়ে থাকা, বসা- শোয়া, হাঁটা সর্বদা তাঁর খেয়াল তাজা রাখার সবক নেওয়া। সকল ক্ষেত্রে শরীয়তের প্রতি এবং সুন্নত ও আদাবের প্রতি খুব খেয়াল রাখা।

৫. প্রতিটি পদক্ষেপে আল্লাহ তাআলার সাহায্য প্রার্থনা করা। ‘হে আল্লাহ! হেফাজত করুন, সহজ করুন এবং কবুল করুন। আপনার সন্তুষ্টির সঙ্গে সমাপ্ত করার তাওফিক দিন।’ হজের সকল কাজ এই মিনতি ও প্রার্থনা দ্বারা শুরু ও শেষ করা।

৬. তাওয়াফ অবস্থায় যদিও কথা বলা জায়েয, কিন্তু যথাসম্ভব আল্লাহ তাআলার ধ্যানে মগ্ন থাকা। তাঁর সন্তুষ্টি, রহমত, বরকত ও মাগফেরাত এবং মুহাব্বত পাওয়ার উদ্দেশ্যে তাঁর ঘরের চারপাশে ভিক্ষুকের মতো ঘুরছেন-এ ধরনের ধ্যানে বিভোর থাকা।

৭. তাওয়াফ, সাঈ এবং হজের সকল ক্ষেত্রে ভিডিও করা, ছবি তোলা থেকে সম্পূর্ণরূপে বিরত থাকা। হারামের এলাকায় সব ধরনের গুনাহ বিশেষ করে চোখের গুনাহ থেকে বিরত থাকা। কেননা বাইতুল্লাহ হলো গুনাহ মোচনের স্থান। সেখান থেকে মানুষ পবিত্র হয়ে আসে। কেউ যদি সেখান থেকে গুনাহর বোঝা বাড়িয়ে নিয়ে আসে তাহলে এই হতভাগা তার গুনাহ থেকে পাক হবে কোথায় গিয়ে?!!

৮. অনুরূপভাবে সাফা-মারওয়ার সাঈর সময় আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি, তাঁর মুহাব্বত ও মাগফেরাত পাওরয়ার উদ্দেশ্যে ছোটাছুটি করা হচ্ছে এবং এগুলোর সন্ধান করছেন এমন নিয়ত করা। ভাববেন, মারওয়াতে গেলে বুঝি ওসবের সন্ধান মিলবে। আবার সেখানে গিয়ে ভাববেন, সাফাতে গেলে মাওলা হয়ত দিয়েই দিবেন।

৯. হজ-উমরাতে কোনো নির্দিষ্ট দোয়া পড়া জরুরি নয়। এমন কোনো দোয়া নেই, যা না পড়লে হজ-ওমরাহ হবে না। শুধু তালবিয়া ভালোভাবে মুখস্থ করে নেওয়া। তারপরও হজ গাইডে/হিসনুল মুসলিমিনে গুরুত্বপূর্ণ ছোটখাটো কিছু দোয়া উল্লেখ রয়েছে।

১০. হজে দোয়া-মোনাজাত বাংলাতেও করা যায়। আরবি না পারলে তরজমা দেখে দেখে দোয়া-মুনাজাত করা। আর তালবিয়া, জিকির, দরুদ শরিফ, তাসবিহ, কালিমা তাইয়্যিবা, কোরআন তেলাওয়াত ইত্যাদি এ সফরে আপনার সর্বোত্তম আমল।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহর সব হজ পালনকারীকে হজের সফরে এ বিষয়গুলোর প্রতি লক্ষ্য রাখার তাওফিক দান করুন। আমিন।

এমএমএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।