প্রস্রাব চেপে রেখে নামাজ পড়া যাবে কি?

ইসলাম ডেস্ক
ইসলাম ডেস্ক ইসলাম ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৭:৩৮ পিএম, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

নামাজ বা যে কোনও ইবাদতের আগে প্রস্রাবের বেগ পেলে কেউ কেউ নতুন করে ওজু করতে অলসতার কারণে তা চেপে রাখেন। এক্ষেত্রে অনেকেই প্রস্রাবে বিলম্ব করেন এবং প্রস্রাবের চাপ রেখেই নামাজে দাঁড়িয়ে যান। এ সম্পর্কে ইসলাম কী বলে?

হাদিসে পাকে নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রস্রাব-পায়খানা ও বায়ুর চাপ নিয়ে নামাজ আদায় করতে নিষেধ করেছেন। হাদিসের একাধিক বর্ণনা থেকে জানা যায়-
১. হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আরকাম রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, ‘আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি-
إِذَا أُقِيمَتِ الصَّلاَةُ وَوَجَدَ أَحَدُكُمُ الْخَلاَءَ فَلْيَبْدَأْ بِالْخَلاَءِ
‘যখন নামাজে দাঁড়িয়ে যায় আর তোমাদের কারও প্রস্রাব-পায়খানার প্রয়োজন দেখা দেয় সে যেন প্রথমে প্রয়োজন সেরে নেয়।’ (তিরমিজি ১৪২)

২. হজরত সাওবান (রা.) থেকে বর্ণিত- রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন-
إِذَا أُقِيمَتِ الصَّلاَةُ وَوَجَدَ أَحَدُكُمُ الْخَلاَءَ فَلْيَبْدَأْ بِالْخَلاَءِ
‘... আর কেউ যেন প্রস্রাব-পায়খানার চাপ নিয়ে নামাজ না পড়ে।’ (তিরমিজি : ৩৫৭)

হজরত নাফে রহমাতুল্লাহি আলাইহিকে জিজ্ঞাসা করা হলো যে, এক ব্যক্তি পেটে বায়ুর চাপ বোধ করে। তিনি বললেন, ‘বায়ুর চাপ বোধ করা অবস্থায় সে যেন নামাজ না পড়ে।’ (মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা : ৮০২২)

এসব হাদিস ও আসারের ওপর ভিত্তি করে ইসলামী আইন ও ফিকাহ শাস্ত্র বিশেষজ্ঞদের মত হলো- সাধারণত প্রস্রাব-পায়খানা ও বায়ুর চাপ নিয়ে নামাজ পড়া মাকরুহ তাহরিমি। আর স্বাভাবিক অবস্থায় নামাজ শুরু করার পর নামাজের ভেতরে এমন চাপ সৃষ্টি হলে নামাজের পর্যাপ্ত ওয়াক্ত বাকি থাকা সত্ত্বেও এ অবস্থায় নামাজ চালিয়ে যাওয়া মাকরুহ। এ ধরনের ক্ষেত্রে নামাজ ছেড়ে দিয়ে অজু-ইস্তিঞ্জা সেরে পূর্ণ চাপমুক্ত হয়ে নামাজ আদায় করা কর্তব্য। কেননা এতে নামাজের খুশু-খুজু বিঘ্নিত হয়। এক ধ্যানে নামাজ আদায় করা যায় না। প্রাকৃতিক এসব চাপ থেকে মুক্ত হয়ে পূর্ণ স্থিরতা ও একাগ্রতার সঙ্গে নামাজ আদায় করা কর্তব্য।

তবে হ্যাঁ, নামাজের ওয়াক্ত যদি এত স্বল্প থাকে যে, প্রয়োজন সারতে গেলে নামাজের ওয়াক্ত থাকবে না। বা নামাজ কাজা হয়ে যাবে তাহলে সম্ভব হলে এ অবস্থায়ই নামাজ পড়ে নিবে। অবশ্য পর্যাপ্ত ওয়াক্ত থাকার পরও কোনো ইমাম বা একাকি নামাজ আদায়কারী যদি এ অবস্থায় নামাজ পড়ে নেয় তবে এমনটি করা মাকরুহ হলেও তাদের নামাজ আদায় হয়ে যাবে। (রদ্দুল মুহতার ১/৩৪১-৬৪৪)

এমএমএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।