দোয়া সম্পর্কে নবিজি (সা.) কী বলেছেন?

ইসলাম ডেস্ক
ইসলাম ডেস্ক ইসলাম ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৮:১৭ পিএম, ২৪ নভেম্বর ২০২২

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, দোয়াই (মূল) ইবাদাত। এরপর তিনি কোরআনের এ আয়াত তেলাওয়াত করলেন, ‘এবং তোমাদের রব বলেছেন, তোমরা আমার কাছে দোয়া করো, আমি তোমাদের দোয়া কবুল করবো।’ (মিশকাত ২২৩০, তিরমিজি, আবু দাউদ, নাসাঈ, ইবনু মাজাহ)

দোয়া গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। হাদিসের অনেক বর্ণনায় দোয়ার এসব গুরুত্ব, মর্যাদা ও ফজিলত ওঠে এসেছে। তাহলো-

১. হজরত আনাস রাদিয়াল্লাহু  আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, দোয়া হলো ইবাদাতের মগজ বা মূলবস্তু।‘ (মিশকাত ২২৩১, তিরমিজি)

২. হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘আল্লাহর কাছে দোয়ার চেয়ে কোনো জিনিসের অধিক মর্যাদা (উত্তম) নেই। (মিশকাত ২২৩২, তিরমিজি, ইবনু মাজাহ)

দোয়ার উপকারিতা

৩. হজরত সালমান আল ফারসি রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, দোয়া ছাড়া অন্য কিছুই তাকদিরের লিখনকে পরিবর্তন করতে পারে না এবং নেক আমল ছাড়া অন্য কিছু বয়স বাড়াতে পারে না।’ (মিশকাত ২২৩৩, তিরমিজি)

৪. হজরত আবদুল্লাহ ইবনু ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘নিঃসন্দেহে দোয়া ঐসব কিছুর জন্যই কল্যাণকামী যা সংঘটিত হয়েছে এবং যা এখনো সংঘটিত হয়নি। সুতরাং হে আল্লাহর বান্দাগণ! তোমরা দোয়া করাকে নিজের প্রতি খুবই জরুরী মনে করবে বা যত্নবান হবে। (মিশকাত ২২৩৪, তিরমিজি)

৫. হজরত জাবির রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে কোনো ব্যক্তি আল্লাহর কাছে কোনো দোয়া করলে আল্লাহ তাআলা তার হয়ত সে দোয়া কবুল করেন অথবা এরূপ কোনো বিপদকে তার ওপর থেকে দূরে সরিয়ে দেন, যদি সে কোনো গুনাহের অথবা আত্মীয়তার সম্পর্কচ্ছেদের জন্য দোয়া না করে।’ (মিশকাত ২২৩৬, তিরমিজি)

৬. হজরত আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘আল্লাহর কাছে তাঁর অনুগ্রহ কামনা করো। কেননা আল্লাহ তাঁর কাছে প্রার্থনা করাকে পছন্দ করেন। আর ইবাদাতের (দোয়ার) সর্বোত্তম দিক হলো স্বচ্ছলতার অপেক্ষা করা।’ (মিশকাত ২২৩৭, তিরমিজি)

৭. হজরত আবদুল্লাহ ইবনু ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করছেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘তোমাদের মধ্যে যার জন্য দোয়ার দরজা খোলা, তার জন্য রহমতের দরজাও খোলা। আর আল্লাহর কাছে কুশল ও নিরাপত্তা কামনা করা ছাড়া আর কোনো কিছু কামনা করা এত প্রিয় নয়।’ (মিশকাত ২২৩৯, তিরমিজি)

৮. হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘তোমরা দোয়া কবুল হওয়ার দৃঢ়তা ও নিশ্চয়তা মনে রেখেই আল্লাহ তাআলার কাছে দোয়া কর। জেনে রেখ! আল্লাহ তাআলা অবহেলাকারী আস্থাহীন মনের দোয়া কবুল করেন না। (তিরমিজি ২২৪১)

দোয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। এ কারণেই রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দোয়ার গুরুত্ব ও মর্যাদা তুলে ধরার পাশাপাশি আল্লাহর কাছে দোয়া না করলে তিনি রাগান্বিত হন বলেও ঘোষণা দিয়েছেন। আবার কখন বেশি বেশি দোয়া করতে হবে তাও উল্লেখ করেছেন এভাবে-

৯. হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর কাছে (দোয়া) কামনা করে না, আল্লাহ তার ওপর রাগান্বিত হন।’ (মিশকাত ২২৩৮, তিরমিজি)

১০. হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি চায় বিপদাপদে আল্লাহ তার দোয়া কবুল করুন। সে যেন তার সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যের সময়েও আল্লাহর কাছে বেশি বেশি দোয়া করে।’ (মিশকাত ২২৪০, তিরমিজি)

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে নিয়মিত দোয়া করার তাওফিক দান করুন। দোয়া করার মাধ্যমে আল্লাহর ইবাদতে নিয়োজিত থাকার তাওফিক দান করুন। আমিন।

এমএমএস/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।