শিক্ষকের মর্যাদায় নবিজির (সা.) ঘোষণা

ইসলাম ডেস্ক
ইসলাম ডেস্ক ইসলাম ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৬:৪৭ পিএম, ০৫ অক্টোবর ২০২২

বিশ্ব শিক্ষক দিবস আজ। মানুষ গড়ার কারিগর সারা পৃথিবীর সব শিক্ষককে জানাই আন্তরিক শ্রদ্ধা, সম্মান ও অভিনন্দন। হাদিসে এসেছে, ‘তোমরা জ্ঞান অর্জন কর এবং জ্ঞান অর্জনের জন্য আদব-শিষ্টাচার শেখ। যার কাছে তোমরা জ্ঞান অর্জন কর, তাঁকে সম্মান কর।’

যার কাছে কোনো কিছু শেখা হয়, তিনিই মহান শিক্ষক। ইসলামে রয়েছে শিক্ষকের অনন্য মর্যাদা ও সম্মান। শিক্ষকের প্রতি সম্মান দেখাতেই প্রতি বছর ৫ অক্টোবর পালিত হয় বিশ্ব শিক্ষক দিবস।

একবার হজরত জায়েদ ইবনে সাবিত রাদিয়াল্লাহু আনহু তার সওয়ারিতে ওঠার জন্য রেকাবে পা রাখলেন। তখন হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু রেকাবটি শক্ত করে ধরেন। তখন হজরত জায়েদ ইবনে সাবিত বললেন, হে আল্লাহর রাসুলের চাচাতো ভাই! আপনি (সাওয়ারির রেকাব থেকে) হাত সরান। উত্তরে হজরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, ‘না’আলেম (শিক্ষক) ও বড়দের সঙ্গে এমন সম্মানসূচক আচরণই করতে হয়।

শিক্ষকই মানুষকে সঠিক পথের দিক নির্দেশনা দিয়ে থাকেন। যে কথা বলেছেন নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। তিনি মুসলিম উম্মাহর উদ্দেশ্যে বলেছেন, ‘আমাকে (তোমাদের) শিক্ষক হিসেবে পাঠানো হয়েছে।’

নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের এ কথার মূল উদ্দেশ্য হলো- ‘জ্ঞানই মানুষের যথার্থ শক্তি ও মুক্তির পথ-নির্দেশ দিতে পারে।’ নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম শিক্ষা, শিক্ষা উপকরণ, শিক্ষক ও শিক্ষার ব্যাপকীকরণে সদা সচেষ্ট ছিলেন। তা ছিল এমন-

বদরের যুদ্ধের পর শিক্ষিত যুদ্ধবন্দীদের সঙ্গে যে আচরণ করা হয়েছিল তা থেকে এর প্রমাণ পাওয়া যায়। বদরের যুদ্ধে যারা বন্দী হয়েছিলো, তাদের মুক্তির ব্যাপারে এরকম একটি সিদ্ধান্ত হয় যে- যারা যে বিষয়ে পারদর্শী, তারা সে বিষয়টি মদিনার শিশুদের শিক্ষা দেওয়ার বিনিময়ে মুক্তি পাবে। যা বিশ্বের ইতিহাসে আজও বিরল ঘটনা।

হজরত আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, একদিন এক বয়স্ক ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দরবারে এলে উপস্থিত সাহাবায়েকেরাম নিজ স্থান থেকে সরে তাকে জায়গা করে দেন। তখন তিনি ইরশাদ করেন, 'যারা ছোটদের স্নেহ ও বড়দের সম্মান করে না, তারা আমাদের দলভুক্ত নয়।' (তিরমিজি)

দুঃখজনক হলেও সত্য, বর্তমান সময়ে সামাজিক দায়িত্ব ও মর্যাদার দিক থেকে শিক্ষকতার পেশাকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্যের দৃষ্টিতে দেখা হয়।  অথচ শিক্ষকতার পেশা অত্যন্ত মহান ও গুরুত্বপূর্ণ পেশা। ইসলামের দৃষ্টিতেও শিক্ষকতা অতি সম্মানিত ও মহান পেশা।

শিক্ষকদের প্রতি সম্মান দেখানোর মাধ্যমেই তৈরি হয় আদর্শ সমাজ। শিক্ষকদের প্রতি মানসিক কিংবা শারীরিক নিপীড়ন বা অপমান নয়। শিক্ষকদের প্রতি সম্মান দেখানোই মহৎ কাজ। নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ঘোষণা থেকেই তা সুস্পষ্ট। তাহলো-

‘শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা ছাড়া কেউই আমার আপন নয়।’

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে শিক্ষকের প্রতি মর্যাদা দেওয়ার এবং যারা শিক্ষা গ্রহণ করে তাদের মর্যাদা দেওয়ার তাওফিক দান করুন। সুন্দর সমাজ বিনির্মাণে শিক্ষকদের সহযোগিতা করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

এমএমএস/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।