অজুর ফজিলত-আমল সম্পর্কে নবিজির চমৎকার ঘোষণা
ফরজ ইবাদত, ঈমান গ্রহণ, নামাজ, হজ, কোরআন তেলাওয়াতসহ অনেক ইবাদতে অজু করা আবশ্যক। প্রিয় নবি বলতেন যার অজু নেই; তার নামাজ নেই। ফরজ ইবাদত ছাড়াও অজুর সঙ্গে নফল ইবাদতের মর্যাদাও অনেক বেশি। প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অজুর শুরুতে এবং শেষে আল্লাহকে স্মরণ করার কথা বলেছেন। অধিক গুরুত্বসহ অজুর অনেক ফজিলত ও আমল ঘোষণা করেছেন।
অজুর ফজিলত বর্ণনায় অনেক হাদিস বর্ণনা করেছেন নবিজি। কেয়ামতের ময়দানে (অসংখ্য মানুষের মধ্য থেকে) মুমিন বান্দাকে চিনার একমাত্র উপায়ও হবে এই অজু। যারা দুনিয়াতে (আল্লাহর ইবাদত পালনে) অজু করবে কেয়ামাতের দিন তাদের অঙ্গগুলো অজুর কারণে নূরের আলোয় ঝলমল করতে থাকবে। যা দেখে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর উম্মতকে খুঁজে বের করে নেবেন। হাদিসের বর্ণনায় এসেছে-
১. হজরত আবু সাঈদ খুদরি রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যার অজু নেই, তার নামাজ নেই। আর যে ব্যক্তি অজুতে আল্লাহর নাম (বিসমিল্লাহ) উল্লেখ করে না, তার অজু (যথার্থ) হয় না।’ (ইবনে মাজাহ)
২. হজরত উকবা ইবনে আমির রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেন, উট দেখভালের দায়িত্ব ছিল আমাদের উপর। আমার পালা এলে, আমি সেগুলোকে সন্ধ্যার সময় নিয়ে আসি। এসে দেখতে পাই, আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দাঁড়িয়ে লোকদের সঙ্গে কথা বলছেন। আমি তাঁর এ কথাটুকু শুনতে পাই-
‘কোনো মুসলিম যদি অজু করে এবং তা সুন্দরভাবে সম্পন্ন করে, তার জন্য জান্নাত অবধারিত হয়ে যায়।’ এ কথাগুলো শুনে আমি বলি, ‘কী চমৎকার কথা!’ তখন আমার সামনে থাকা একজন বলে ওঠেন, ‘এর আগের কথাটি ছিল আরও চমৎকার!’ তকিয়ে দেখি (সামনে লোকটি) ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু! তিনি বলেন-
‘আমার মনে হয় আপনি এই মাত্র এসেছেন। (এর আগে) নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘তোমাদের কেউ যদি অজু করে এবং যথাযথভাবে তা সম্পন্ন করে; তারপর বলে-
أَشْهَدُ انْ لَا اِلَهَ اِلَّا اللهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيْكَ لهُ وَ اَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُاللهِ وَ رَسُوْلُهُ
উচ্চারণ : আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারিকা লাহু ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুল্লাহি ওয়া রাসুলুহু।’
অর্থ : আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া কোনো সর্বভৌম সত্তা নেই; তিনি একক, তাঁর কোনো শরিক নেই। আর আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আল্লাহর বান্দা এবং বার্তাবহক (রাসুল)।’
তার জন্য জান্নাতের ৮টি দরজা খুয়ে যাবে; যে দরজা দিয়ে ইচ্ছা; সে (জান্নাতে) প্রবেশ করতে পারবে।’ (মুসলিম)
৩. হজরত ওমর ইবনে খাত্তাব রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, আল্লাহর রাসুল বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি অজু করে এবং তা সুন্দরভাবে সম্পন্ন করে তারপর বলে-
أَشْهَدُ انْ لَا اِلَهَ اِلَّا اللهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيْكَ لهُ وَ اَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَ رَسُوْلُهُ اَللهُمَّ اجْعَلْنِىْ مِنَ التَّوَّابِيْنَ وَاجْعَلْنِىْ مِنَ الْمُتَطَهِّرِيْنَ
উচ্চারণ : আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারিকা লাহু ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রাসুলুহু। আল্লাহুম্মাঝ আলনি মিনাত তাওয়াবিনা ওয়াঝআলনি মিনাল মুতাত্বাহহিরিন।’
অর্থ : আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া কোনো সর্বভৌম সত্তা নেই; তিনি একক, তাঁর কোনো শরিক নেই। আর আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আল্লাহর বান্দা এবং বার্তাবহক (রাসুল)। হে আল্লাহ! আমাকে তাওবাকারীদের অন্তর্ভূক্ত করে দাও; আর আমাকে পবিত্রতা অর্জনকারীদের একজন বানিয়ে দাও’
তার জন্য জান্নাতের ৮টি দরজা খুয়ে যাবে; যে দরজা দিয়ে ইচ্ছা; সে (জান্নাতে) প্রবেশ করতে পারবে।’ (তিরমিজি)
৪. হজরত আবু সাঈদ খুদরি রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন-
سُبْحَانَكَ اللهُمَّ وَ بِحَمْدِكَ أَشْهَدُ أَنْ لَا اِلَهَ اِلَّا اَنْتَ أَسْتَغْفِرُكَ وَ اَتُوْبُ اِلَيْكَ
উচ্চারণ : ‘সুবহানাকাল্লাহুম্মা ওয়া বিহামদিকা আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লা আংতা আসতাগফিরুকা ওয়া আতুবু ইলাইকা।’
অর্থ : হে আল্লাহ! তুমি ত্রুটিমুক্ত; প্রশংসা শুধু তোমারই। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, তুমি ছাড়া কোনো সার্বভৌম সত্তা নেই; আমি তোমার কাছে ক্ষমা চাই এবং তোমার কাছে ফিরে আসছি।’
তা একটি চামড়ার মধ্যে লিখে সিলগালা করে দেওয়া হয় এবং কেয়ামত পর্যন্ত তা খোলা হবে না।’ (নাসাঈ)
৫. হজরত বারা ইবনে আযিব রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে বলেছেন-
إِذَا أَتَيْتَ مَضْجَعَكَ فَتَوَضَّأْ وُضُوءَكَ لِلصَّلَاةِ ثُمَّ اضْطَجِعْ عَلَى شِقِّكَ الْأَيْمَنِ
‘যখন তুমি তোমার শয্যা গ্রহণের ইচ্ছা করবে, তখন নামাজের ন্যায় অজু করে ডান কাত হয়ে শয়ন করবে।’ (বুখারি ও মুসলিম)
যে ব্যক্তি পবিত্রাবস্থায় (অজু অবস্থায় ) ঘুমায় তার সঙ্গে একজন ফেরেশতা নিয়োজিত থাকে। এরপর সে ব্যক্তি ঘুম থেকে জাগ্রত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই আল্লাহ্র সমীপে ওই ফেরেশতা প্রার্থনায় বলে থাকে, হে আল্লাহ্! তোমার অমুক বান্দাকে ক্ষমা করে দাও, কেননা সে পবিত্রাবস্থায় ঘুমিয়েছিল।’ (ইবনে হিব্বান)
৬. রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন-
أَلَا أَدُلّكُمْ عَلَى مَا يَمْحُو اللهُ بِهِ الْخَطَايَا، وَيَرْفَعُ بِهِ الدّرَجَاتِ؟ قَالُوا بَلَى يَا رَسُولَ اللهِ قَالَ: إِسْبَاغُ الْوُضُوءِ عَلَى الْمَكَارِهِ
‘আমি কি তোমাদের এমন বিষয়ের সংবাদ দেব না! যার মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা তোমাদের গুনাহসমূহ মিটিয়ে দেবেন (তোমাদের ক্ষমা করে দেবেন) আর (আল্লাহর কাছে) তোমাদের মর্যাদা ও সম্মান বৃদ্ধি করে দেবেন? সাহাবায়েকেরাম বললেন- অবশ্যই, হে আল্লাহর রাসুল! নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন- (শীত বা অন্য যে কোনো ঠাÐার) কষ্টকর মুহূর্তে ভালোভাবে অজু করা।’ (মুসলিম)
৭. হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘যে ব্যক্তি ভালোভাবে অজু করে মসজিদে গেলো। এরপর দেখলো মানুষ নামাজ পড়ে ফেলেছে। তখন আল্লাহ তাআলা ওই ব্যক্তিকে (জামাতে) নামাজ পড়া ব্যক্তিদের ন্যায় জামাতে নামাজ পড়ার সওয়াব দেবেন। এমনকি তাদের (জামাতে নামাজ পড়া ব্যক্তিদের) সওয়াবে একটুও ঘাটতি করা হবে না।’ (আবু দাউদ)
৮. হজরত আবু উমামা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘যে ব্যক্তি নিজ ঘর থেকে পবিত্রতার্জন (অজু) করে কোনো ফরজ নামাজ আদায়ের উদ্দেশ্যে বের হয় তার সওয়াব হবে একজন ইহরামরত হাজির ন্যয়।’ (আবু দাউদ)
৯. অজু করার শুরুতে, অজু করার সময় এবং শেষে ৪টি দোয়া পড়ার জন্য হাদিসের নির্দেশনা রয়েছে। এতে অনেক ফজিলত ঘোষণা করা হয়েছে। ফজিলতপূর্ণ দোয়াগুলো হলো-
> অজুর শুরুতে ‘বিসমিল্লাহ’ বলা-
بِسْمِ اللهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيْم
উচ্চারণ : ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম’
অর্থ : পরম করুনাময় ও দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি।
> অজু করার সময় এ দোয়াটি পড়তে থাকা-
اَللَّخُمَّ اغْفِرْلِىْ ذَنْبِى وَ وَسِّعْلِىْ فِىْ دَارِىْ وَبَارِكْ لِىْ فِىْ رِزْقِىْ
উচ্চারণ : আল্লাহুম্মাগফিরলি জামবি, ওয়া ওয়াসসিলি ফি দারি, ওয়া বারিক লি ফি রিযক্বি। (নাসাঈ)
অর্থ : ‘হে আল্লাহ! আমার গোনাহ মাফ করে দাও। আমার জন্য আমার বাসস্থান প্রশস্ত করে দাও। এবং আমার রিযিক্বে বরকত দিয়ে দাও।’
> অজুর শেষে কালেমার সাক্ষ্য ও উপকারিতা
أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلا اللَّهُ وَحْدَهُ لا شَرِيكَ لَهُ ، وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ
উচ্চারণ : ‘আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারিকা লাহু, ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রাসুলুহু।’
অর্থ : ‘আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া কোন মা’বুদ নেই। তিনি একক, তাঁর কোন শরিক নেই। আমি আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর বান্দা ও রাসুল।’ (মুসলিম, মিশকাত)
হজরত ওমর ইবনুল খাত্তাব রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি উত্তমরূপে অজু করে কালেমায়ে শাহাদাত পড়বে, তার জন্য জান্নাতের আটটি দরজা খুলে দেওয়া হবে; ওই ব্যক্তি যে দরজা দিয়ে ইচ্ছা সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। (মুসলিম, মিশকাত)
> এরপর এ দোয়াটি পড়া-
اللَّهُمَّ اجْعَلْنِي مِنْ التَّوَّابِينَ ، وَاجْعَلْنِي مِنْ الْمُتَطَهِّرِينَ
উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মাঝআলনি মিনাত তাউয়্যাবিনা ওয়াঝআলনি মিনাল মুতাত্বাহ্হিরিন।’
অর্থ : ‘হে আল্লাহ! আমাকে তওবাকারীদের অন্তর্ভূক্ত করুন এবং পবিত্রতা অবলম্বনকারীদের মধ্যে শামিল করে নিন।’ (তিরমিজি, মিশকাত)
১০. হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, আমি কি তোমাদের বলব না, আল্লাহ কি দিয়ে গুনাহ মুছে দেন এবং মর্যাদা বাড়িয়ে দেন? সাহাবাগণ বললেন, হে আল্লাহর রাসুল! (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হ্যাঁ, (বলে দিন)। তিনি বললেন-
> কষ্ট থাকার পরও ভালোভাবে ওজু করা।
> মসজিদের দিকে বেশি বেশি যাতায়াত করা। এবং
> এক নামাজ শেষ করে পরবর্তী নামাজের জন্য অপেক্ষায় থাকা। আর এটাই হলে ‘রিবাত’ (প্রস্তুতি)।’ (মুসলিম, তিরমিজি, ইবনে মাজাহ)
১১. হজরত আলি রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘নামাজের (সূচনা) চাবি হলো (অজু) পবিত্রতা। তার (নামাজের) নিষিদ্ধকারী হলো তাকবিরে তাহরিমা এবং তার হালালকারী হলো (শেষ বৈঠকের পর) সালাম ফিরানো। (দারাকুতনি)
১২. রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, (মুসলিম বা মুমিন) বান্দা ওজু করার সময় যখন মুখমন্ডল ধৌত করে তখন (অজুর) পানির সঙ্গে ঐ সব গুনাহ বের হয়ে যায়, যা সে দু’চোখ দ্বারা করেছিল। যখন সে দুই হাত ধৌত করে তখন হাত দ্বারা করা গুনাহ পানির সঙ্গে বের হয়ে যায়। যখন সে দুই পা ধৌত করে তখন পা দ্বারা সংঘটিত গুনাহ পানির সঙ্গে বের হয়ে যায়। আর এভাবেই সে গুনাহ থেকে পরিত্রাণ লাভ করে। (মুসলিম)
১৩. প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরও বলেছেন, ‘কোনো মুসলিম যখন উত্তমরূপে অজু করার পর তাঁর চেহারা ও মন উভয়টি আল্লাহ তাআলার অভিমুখী করে (নামাজে) দাঁড়ায় এবং দু’রাকাআত নামাজ আদায় করে; তখন তার জন্য জান্নাত ওয়াজিব হয়ে যায়।’ (মুসলিম)
১৪. হজরত ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু বর্ণনা করেছেন, নিশ্চয়ই রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন- ‘তোমরা তোমাদের শরীরকে পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন করো, আল্লাহ রাব্বুল আলামিন তোমাদেরকে পরিচ্ছন্ন করে দেবেন। আর যখন আল্লাহর কোনো বান্দা অজু করে বিছানায় ঘুমাতে যায়, আল্লাহ ওই ব্যক্তির সঙ্গে (তার জন্য ক্ষমা প্রার্থনায়) একজন ফেরেশতা নিযুক্ত করে দেন। ঘুমের মধ্যে ওই বান্দা যখনই নড়াচড়া করে কিংবা এপাশ-ওপাশ করে তখনই ওই ফেরেশতা তার জন্য এ বলে দোয়া করে-
اَللَّهًمَّ اغْفِرلِعَبْدِكَ
‘আল্লাহুম্মাগফির লি-আবদিকা’
অর্থ : হে আল্লাহ! আপনার এ বান্দাকে ক্ষমা করে দিন। কেননা সে পবিত্রতা অর্জন করে ঘুমিয়েছে।’ (তাবারানি)
১৫. নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘কোনো বান্দা যখন অজু করে পবিত্র হয়ে ঘুমায় আর ঘুমানোর পর যদি কোনো কারণে রাতে তার ঘুম ভেঙে যায় তবে সে যেন (একটু হলেও) আল্লাহর জিকির করে। যদি কেউ আল্লাহ জিকির করার পর তার কাছে দুনিয়া ও আখেরাতের কল্যাণ কামনা করে তবে আল্লাহ তাআলা তাকে (চাহিদা মোতাবেক) তা-ই দিয়ে দেন।’ (মুসনাদে আহমদ)
আল্লাহ তাআলা উম্মতে মুসলিমাহকে যথাযথভাবে অজু করার তাওফিক দান করুন। অজুর আমল ও ফজিলতগুলো নিজেদের জীবনে বাস্তবায়ন করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/জিকেএস