পবিত্রতা অর্জনে অজু করার নিয়ম

ইসলাম ডেস্ক
ইসলাম ডেস্ক ইসলাম ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৬:৫৩ পিএম, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২২

‘অজু’ আরবি শব্দ। সুন্দর, পরিচ্ছন্ন ও স্বচ্ছ থাকাই অজু। এ জন্য বিশেষ নিয়মে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গকে ধারাবাহিকভাবে ধৌত করার নামই অজু। এটি নামাজের জন্য অপরিহার্য শর্ত। নামাজ ছাড়াও অনেক ইবাদতের জন্যই অজু করতে হয়। তবে নামাজর জন্য অজুর বিধান সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা এ মর্মে  নির্দেশ দেন যে-

‘হে মুমিনগণ! তোমরা যখন নামাজের জন্য প্রস্তুত হবে তখন তোমাদের মুখমণ্ডল ও উভয় হাত কনুই পর্যন্ত ধৌত করবে। আর মাথা মাসেহ করবে এবং উভয় পা টাখনু (গ্রন্থি) পর্যন্ত ধৌত করবে...।’ (সুরা মায়েদা : আয়াত ৬)

অজুতে এই কাজ ৪টি আদায় করা ফরজ। এর কোনোটি বাদ পড়লে কিংবা কোনটি সম্পাদনে চুল পরিমান কোনো স্থান শুকনো থাকলেও অজু হবে না। ধারাবাহিকভাবে অজুর ফরজ ও নিয়মগুলো তুলে ধরা হলো-

১. পুরো মুখমণ্ডল ধৌত করা। এর সীমানা হলো, কপালের উপরিভাগে চুলের উৎপাদনস্থল থেকে থুতনির নিচ পর্যন্ত, এক কানের লতি থেকে অন্য কানের লতি পর্যন্ত। (সুরা মায়েদা : আয়াত ৬, আল কামুসুল ফিকহি)

২. উভয় হাত কনুইসহ ধৌত করা। (সুরা মায়েদা : আয়াত ৬, বুখারি)

৩. মাথা মাসেহ করা। এর পরিমাণ হলো- মাথার চার ভাগের এক ভাগ মাসেহ করা। (সুরা মায়েদা : আয়াত ৬, মুসলিম)

৪. উভয় পা টাখনুসহ ধৌত করা। (সুরা মায়েদা : আয়াত ৬, বুখারি)

এ চারটি কাজের কোনো একটি বা অজুর এই সীমানার মধ্যে চুল পরিমান স্থান শুকনো থাকলেও অজু হবে না। তবে অজুর ৪টি ফরজ ছাড়াও অজুর সুন্নত ও মুস্তাহাব কাজ আছে। সেগুলো অজুকে আরো ফজিলতপূর্ণ করে তোলে।

ফরজ, সুন্নত ও মুস্তাহাবের আলোকে ধারাবাহিক ওজুর নিয়ম-

১. নিয়্যাত করা। (সুন্নত)

২. অজুর শুরুতে বিসমিল্লাহ বলা। (সুন্নত)

৩. উভয় হাত কব্জি পর্যন্ত ধৌত করা। (সুন্নত)

৪. মিসওয়াক করা। (সুন্নত)

৫. কুলি করা। (সুন্নত)

৬. নাকে পানি দেওয়া। (সুন্নত)

৭. পুরো মুখমণ্ডল ধৌত করা। (ফরজ)

৮. দাড়ি ঘন হলে আঙুল দিয়ে খিলাল করা। (সুন্নত)

৯. উভয় হাত কনুইসহ ধৌত করা। (ফরজ)

১০. মাথার চার ভাগের এক ভাগ মাসেহ করা। (ফরজ)

১১. সমস্ত মাথা একবার মাসেহ করা। (সুন্নত)

১২. কান মাসেহ করা। (সুন্নত)

১৩. ঘাড় বা গর্দান হাতের আঙ্গুলের পিঠ দিয়ে মাসেহ করা। (মুস্তাহাব)

কান ও গর্দান মাসেহের ক্ষেত্রে নতুন করে পানি নেওয়ার দরকার নেই। মাথা মাসেহ করার পানি দিয়ে করলেই চলবে।

১৪. উভয় পা টাখনুসহ ধৌত করা। (ফরজ)

১৫. উভয় হাত এবং পায়ের আঙ্গুলগুলো খিলাল করা। (সুন্নত)

১৬. প্রত্যেক অঙ্গকে তিনবার করে ধৌত করা। (সুন্নত)

১৭. ধারবাহিকভাবে ওজু করা। (সুন্নত)

১৮. এক অঙ্গ শুকানোর আগেই পরবর্তী অঙ্গ ধৌত করা। (সুন্নত)

১৯. ডানদিক থেকে অজু শুরু করা। (সুন্নত)

অজুর ফজিলত

হজরত নুআইম মুজমির (রাহমাতুল্লাহি আলাইহি বর্ণনা করেছেন, আমি আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহুর সঙ্গে মসজিদের ছাদে উঠলাম। এরপর তিনি অজু করে বলেন, ‘আমি আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি, কেয়ামতের দিন আমার উম্মতকে এমন অবস্থায় ডাকা হবে যে অজুর প্রভাবে তাদের হাত-পা ও মুখমণ্ডল উজ্জ্বল থাকবে। তাই তোমাদের মধ্যে যে এ উজ্জ্বলতা বাড়িয়ে নিতে পারে, সে যেন তা করে।’ (বুখারি)

আল্লাহ তাআলা উম্মতে মুসিলমাকে যথাযথভাবে অজু করার তাওফিক দান করুন। অজুর ফজিলত ও বরকত পাওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।

এমএমএস/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।