আল্লাহর কাছে সবচেয়ে বেশি ঘৃণিত ব্যক্তি কে?

ইসলাম ডেস্ক
ইসলাম ডেস্ক ইসলাম ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৪:৫১ পিএম, ২৭ আগস্ট ২০২২
প্রতীকী ছবি

লোকজনের সঙ্গে উত্তমরূপে বসবাস করা নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সুন্নাহ। আবার উত্তম বসবাসে সমস্যা সৃষ্টির কারণেই মানুষ আল্লাহর কাছে সবচেয়ে বেশি ঘৃণিত। হাদিসের পরিভাষায় সেই কারণটি কী?

আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, কেয়ামতের দিন সে ব্যক্তি আল্লাহর কাছে বেশি ঘৃণিত হবে, যার খারাপ ব্যবহারের কারণে মানুষ তার সঙ্গে মেলামেশা করা থেকে বিরত থাকবে। হাদিসে পাকে বিষয়টি এভাবে ওঠে এসেছে-

হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, এক ব্যক্তি নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে আসার জন্য অনুমতি চাইলে তিনি বললেন, গোত্রের কতই না খারাপ লোক। এরপর নবিজি বললেন, আসতে দাও! যখন সে ভিতরে এলো তার সঙ্গে তিনি নম্রভাবে কথা বললেন (সে চলে গেলে) হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহু বললেন, হে আল্লাহর রাসুল! আপনি এ ব্যক্তির সঙ্গে নম্রভাবে কথা বললেন, অথচ এরআগে আপনি তার সম্পর্কে অন্যরকম মন্তব্য করেছিলেন। তিনি বললেন, কেয়ামতের দিন আল্লাহর কাছে ঐ ব্যক্তিই সবচেয়ে খারাপ হবে, যাকে মানুষ তার অশালীন কথার ভয়ে ত্যাগ করেছে।’ (আবু দাউদ, বুখারি, মুসলিম)

লোকজনের সঙ্গে উত্তমরূপে বসবাসের ব্যাপারে নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম খুবই সতর্ক ছিলেন এবং অন্যদেরকেও সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে আরও কয়েকটি হাদিস এসেছে, যার প্রতিটিই মুমিন ব্যক্তিদের জন্য মূল্যবান নসিহত। তাহলো-

১. হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘মুমিন ব্যক্তি সরল ও ভদ্র প্রকৃতির হয়ে থাকে, কিন্তু পাপীষ্ঠ ব্যক্তি ধোঁকাবাজ ও নির্লজ্জ হয়।’ (আবু দাউদ, বুখারি, তিরমিজি)

২. হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বলেন, নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ‘হে আয়েশা! সবচেয়ে খারাপ মানুষ তারাই যাদেরকে মানুষ তাদের জিহ্বার অনিষ্ট থেকে আত্মরক্ষার জন্য সম্মান করে।’ (আবু দাউদ, বুখারি, আদাবুল মুফরাদ)

৩. হজরত আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে কোনো ব্যক্তি এসে কানে কানে কথা বললে সে তার কান না সরানোর আগে তাঁকে কখনো নিজের কান সরিয়ে নিতে দেখিনি। আর কোনো ব্যক্তি তার হাত ধরলে যতক্ষণ সে হাত না ছাড়তো ততক্ষণ তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর হাত সরাতেন না।’ (আবু দাউদ, মুসনাদে আহমাদ)

৪. হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বর্ণনা করেছেন, এক ব্যক্তি নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে আসার অনুমতি চাইলে নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ‘গোত্রের নিকৃষ্ট ভাই। এরপর লোকটি প্রবেশ করলে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার সঙ্গে হাসিমুখে কথা বললেন। লোকটি চলে গেলে আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! লোকটি যখন প্রবেশের জন্য আপনার অনুমতি চেয়েছিল আপনি তখন তার সম্পর্কে বলেছিলেন, গোত্রের নিকৃষ্ট ভাই; কিন্তু প্রবেশ করলে আপনি তার সঙ্গে হাসিমুখে কথা বললেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ‘হে আয়েশা! মহান আল্লাহ অশালীন ভাষীকে ভালবাসেন না।’ (আবু দাউদ)

সুতরাং মানুষ যতই খারাপ কিংবা মন্দ হোক না কেন, তার সঙ্গেও উত্তম আচরণের শিক্ষা দেয় ইসলাম। এটি ইসলামের সৌন্দর্য ও আদর্শ। ইসলামের এ সৌন্দর্য ও আদর্শ সব মানুষের জন্য অনুসরণ ও অনুকরণ যোগ্য।

আল্লাহ তাআলা উম্মাতে মুসলিমাকে নবিজির হাদিসের অনুসরণ ও অনুকরণে যথাযথ আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

এমএমএস/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।