পরকালে সর্বপ্রথম যে নেয়ামতের হিসাব নেওয়া হবে

ইসলাম ডেস্ক
ইসলাম ডেস্ক ইসলাম ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৯:০০ পিএম, ২২ আগস্ট ২০২২

নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কোরআনের সুরা তাকাসুর পড়ছিলেন, ‘সম্পদের প্রাচুর্যের মোহ তোমাদেরকে আল্লাহ তাআলা থেকে উদাসীন করে ফেলেছে।’ এরপর নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, আদম সন্তান বলে, আমার মাল; আমার সম্পত্তি। কিন্তু যে জিনিস তুমি দান-খয়রাত করেছ (আল্লাহ তাআলার খাতায়) তা জমা রেখেছ, যা খেয়ে শেষ করেছ কিংবা যা পরিধান করে পুরাতন করেছ, এগুলো ছাড়া তোমার সম্পদ বলতে কিছু নেই।’ (মুসলিম, তিরমিজি)

সুরা তাকাসুর অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি সুরা। এ সুরার শেষ আয়াতটি খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। যে আয়াতের প্রেক্ষাপটে ওঠে এসেছে পরকালে সর্বপ্রথম নেয়ামত সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদের ব্যাপারটি। তা কী?

সুরা তাকাসুরের শেষ আয়াতে মহান আল্লাহ ঘোষণা করেন- ‏ثُمَّ لَتُسْأَلُنَّ يَوْمَئِذٍ عَنِ النَّعِيمِ ‘তারপর তোমাদেরকে সেদিন অবশ্যই নেয়ামত সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।’ (সুরা তাকাসুর : আয়াত ৮) এ আয়াতটি সম্পর্কে হাদিসের একাধিক বর্ণনা এসেছে। তাহলো-

১. হজরত আবদুল্লাহ ইবনু যুবাইর ইবনুল আওওয়াম রাহমাতুল্লাহি আলাইহি তার বাবার সূত্রে বর্ণনা করেছেন, যখন অবতীর্ণ হলো- ‘তারপর তোমাদেরকে সেদিন অবশ্যই নেয়ামত সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।’ সে সময় যুবাইর রাদিয়াল্লাহু আনহু বললেন, হে আল্লাহর রাসুল! আমাদেরকে কোন নেয়ামত সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে? আমাদের নিকট তো শুধুমাত্র দু’ধরনের জিনিস রয়েছে? খেজুর ও পানি। নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনঃ সে (সম্পত্তি) তো অদূর ভবিষ্যতে অর্জিত হবে।’ (তিরমিজি)

২. হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, যখন ‘তারপর তোমাদেরকে সেদিন নেয়ামত সম্পর্কে অবশ্যই জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে’ আয়াত অবতীর্ণ হয়; সে সময় লোকেরা বলল, হে আল্লাহর রাসুল! আমাদেরকে কোন সব নেয়ামত প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হবে? আমাদের কাছে তো শুধু দুটি কালো জিনিস (খেজুর ও পানি) রয়েছে; আর সর্বদা দুশমন প্রস্তুত রয়েছে এবং আমাদের তরবারিগুলো আমাদের কাধে ঝুলন্ত রয়েছে? তিনি বললেন, এটা অদূর ভবিষ্যতে হবে।’ (তিরমিজি)

নেয়ামতের বর্ণনা

৩. হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু  আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘কেয়ামতের দিন বান্দার কাছে সর্বপ্রথম যে নেয়ামত প্রসঙ্গে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে সে প্রসঙ্গে তাকে বলা হবে-

> আমি কি তোমার শরীর সুস্থ রাখিনি?

> আর সুশীতল পানির মাধ্যমে তোমাকে তৃপ্ত করিনি?’ (তিরমিজি, মিশকাত)

সুতরাং মানুষের উচিত, সুস্থতার জন্য মহান আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করা। সুশীতল পানি পানের জন্য আল্লাহর কাছে কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করা। তবেই আল্লাহর কাছে এ নেয়ামত দুটি সম্পর্কে জবাবদিহি করা সম্ভব হবে।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে মহান রবের সব নেয়ামতের শুকরিয়া আদায় করার তাওফিক দান করুন। কোরআন-সুন্নাহ মোতাবেক জীবন পরিচালনা করে তাঁর রহমত কামনার তাওফিক দান করুন। আমিন।

এমএমএস/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।