যে আমলে মিলবে গুনাহ ও আজাব থেকে মুক্তি

ইসলাম ডেস্ক
ইসলাম ডেস্ক ইসলাম ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৯:৪৩ পিএম, ১৫ জুন ২০২২

নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘নিশ্চয়ই দান-সাদকাহ (মানুষের) পাপাচারের কারণে আল্লাহর গজবের যে আগুন সৃষ্টি হয় তাকে নিভিয়ে দেয়; যেভাবে আগুন পানিকে নিভিয়ে দেয়।’ (তিরমিজি)

আল্লাহ তাআলা মানুষকে দান-সাদকার ফলে কৃত অপরাধের গুনাহ মাফ করে দেবেন। জাহান্নামের আগুন থেকে সুরক্ষা দেবেন। কেয়ামতের দিন আল্লাহর আরশের ছায়া দিয়ে সম্মানিত করবেন। শারীরিক ও আত্মিক রোগমুক্ত করবেন। এমনকি সম্পদের বরকত দান করবেন। হাদিসে এসেছে-

নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘সাদকার মাধ্যমে তোমাদের রোগীদের চিকিৎসা কর’ (আবু দাউদ, সহিহ জামে)

সর্বোত্তম দান

দান-সাদকার মধ্যে সর্বোত্তম দান হলো সম্পদের সল্পতা সত্ত্বেও যে ব্যক্তি অভাবগ্রস্ত লোকদের মধ্যে গোপনে দান করে। হাদিসে এসেছে-

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘৩ ব্যক্তি আল্লাহর অত্যন্ত প্রিয়-

১. যে ব্যক্তি রাতে জেগে কোরআনুল কারিম তেলাওয়াত করে;

২. যে ব্যক্তি ডান হাতে আল্লাহর পথে ব্যয় করে অথচ বাম হাত তা জানে না এবং

৩. সে ব্যক্তি যে জেহাদে অংশগ্রহণ করে তার সঙ্গী পরাজিত হয়ে পলায়ন করে কিন্তু সে দুশমনের মোকাবেলায় সুদৃঢ় থাকে।’ (তিরমিজি)

অন্য হাদিসে এসেছে, নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আলাদা আলাদাভাবে এমন ৩ (আমলকারী) ব্যক্তির বর্ণনা দিয়েছেন যাদেরকে আল্লাহ পছন্দ করে; আবার ৩ শ্রেণির ব্যক্তিকে অপছন্দ করেন। হাদিসে এসেছে-

হজরত আবু জর রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘আল্লাহ তাআলা ৩ ব্যক্তিকে পছন্দ করেন আর ৩ ব্যক্তিকে অপছন্দ করেন। তারা হলো-

যাদেরকে পছন্দ করেন

১. একজন সাহায্য প্রার্থী আল্লাহর ওয়াস্তে কিছু লোকের কাছে সাহায্য প্রার্থনা করে, যাদের সঙ্গে তার আত্মীয়তার বন্ধন নেই মজলিশের কেউ তাকে সাহায্য করে না এমন অবস্থায় এক ব্যক্তি মজলিশ থেকে ওঠে গিয়ে এমন গোপনীয়তার সঙ্গে ওই ব্যক্তিকে সাহায্য করে যে, আল্লাহ ছাড়া অন্য কেউ তা জানেন না

২. মুসলমানদের একটি দল শত্রুর সঙ্গে যুদ্ধে লিপ্ত। রাতের শেষ প্রহরে মানুষ যখন ঘুমে মগ্ন; সে সময় যে ব্যক্তি জেগে থেকে আল্লাহর দরবারে প্রার্থনা করে ও কোরআন তেলাওয়াত করতে থাকে।

৩. সে ব্যক্তি, যে জেহাদে অংশ গ্রহণ করে, জেহাদে পরাজিত হয়ে তার সঙ্গীরা পলায়ন করলেও সে শত্রুর মোকাবেলায় শাহাদাত বরণ করার আগ পর্যন্ত কিংবা বিজয় লাভ করা পর্যন্ত জেহাদে রত থাকে।

যে ৩ ব্যক্তিকে আল্লাহর অপছন্দ করেন

১. বৃদ্ধ ব্যভিচারী;

২. অহংকারি ভিক্ষুক এবং

৩. অত্যাচারী সম্পদশালী ব্যক্তি।

উল্লেখিত হাদিসগুলোর আলোকেও বুঝা যায় যে, দানের গুরুত্ব অপরিসীম। যে কাজ অর্থ-সম্পদ ও সময় ব্যয় করে অর্জন করা সম্ভব নয়; শুধুমাত্র দান-সাদকার মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা মানুষকে তা দান করেন।

মানুষের উচিত চরম অর্থাভাবেও আল্লাহর রাস্তায় দান করা। দ্বীন ও ইসলামের পথে অকাতরে দান করা। যে কারণে ইসলামের প্রাথমিক যুগে দান-সাদকার প্রতিযোগিতা করেছিলেন হজরত আবু বকর, ওমর, ওসমান রাদিয়াল্লাহু আনহুমসহ অগণিত সাহাবায়ে কেরাম। মুসলিম উম্মাহর শিক্ষা গ্রহণের লক্ষ্যে যা ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে লিখা রয়েছে।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে সুখ-দুঃখ, স্বচ্ছল ও অস্বচ্ছল অবস্থায় গরিব দুঃখীর মাঝে আল্লাহর ওয়াস্তে অকাতরে দান করার তাওফিক দান করুন। দান-সাদকার মাধ্যমে সুস্থতা, গুনাহ ও আল্লাহর কঠিন পরীক্ষা ও আজাব থেকে মুক্ত থাকার তাওফিক দান করুন। আমিন।

এমএমএস/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।