বদলি হজের কারণ ও নিয়ম কী?

ইসলাম ডেস্ক
ইসলাম ডেস্ক ইসলাম ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৪:৩৪ পিএম, ১৫ জুন ২০২২

ইসলামের পঞ্চ স্তম্ভ হজ। এটি মুসলিম উম্মাহর অন্যতম ইবাদতও এটি। তবে এ ইবাদতের জন্য রয়েছে বিশেষ দু’টি শর্ত। একটি হলো সম্পদশালী হওয়া আর অন্যটি হলো শারীরিকভাবে সক্ষম হওয়া। কিন্তু বদলি হজের নিয়ম ও কারণ কী? এ হজ কারা আদায় করবে?

বদলি হজের নিয়ম

হাদিসের একটি বর্ণনা থেকে বদলি হজের নিয়মটি ওঠে এসেছে। কোনো ব্যক্তির ওপর হজ ফরজ হওয়ার পর তা আদায় করার আগেই যদি ওই ব্যক্তি মারা যায় কিংবা স্বাস্থ্যগত কারণে হজ সম্পাদনে অক্ষম হয়ে পড়ে তবে উভয় অবস্থায় অন্যের দ্বারা হজ করানোই বদলি হজ। এ সম্পর্কিত একটি ঘটনা হাদিসের বর্ণনায় এভাবে ওঠে এসেছে-

হজরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, জুহায়না গোত্রের এক নারী নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে এসে বললেন, আমার মা হজের মানত করেছিলেন কিন্তু তা আদায় করার আগেই তিনি মারা গেছেন আমি কি তার পক্ষ থেকে হজ করবো?

নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘হ্যাঁ’, তার পক্ষ থেকে তুমি হজ করবে যদি তার কোনো ঋণ থাকে তবে কি তুমি তার ঋণ পরিশোধ করতে না? সুতরাং আল্লাহর ঋণ পরিশোধ কর কেননা আল্লাহ তাআলাই পাওনা পাওয়ার সর্বাধিক হকদার’ (বুখারি)

নবিজী যেখানে মান্নতের হজ আদায়ের ব্যাপারে বিশেষ গুরুত্বারোপ করেছেন, সেখানে ফরজ হজের ব্যাপারটিতো আরো গুরুত্বপূর্ণ।

বদলি হজের কারণ

১. হজ ফরজ হওয়ার পর আদায় করার আগে মৃত্যুবরণ;

২. হজ ফরজ হওয়ার পর তা আদায়ের আগে বন্দী হলে;

৩. এমন অসুস্থত হওয়া যে, জীবনে আর আরোগ্য হওয়ার কোনো সম্ভাবনাই নেই;

৪. শারীরিকভাবে খোঁড়া/আতুর তথা চলাচলে অক্ষম হয়ে যাওয়া;

৫. দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেলা বা একেবারেই অন্ধ হয়ে যাওয়া;

৬. এমন বয়োবৃদ্ধ হয়ে যাওয়া যে, বাহনে চলাচলের সক্ষমতাও নেই।

৭. যেসব নারীদের মাহরাম নেই;

৮. কোনো কারণে নিরাপত্তাহীনতার সম্মুখীন হলে।

বদলি হজ কারা করবেন?

নিজে কখনো হজ করেনি, এমন ব্যক্তি দ্বারা বদলি হজ করানো মাকরূহে তানজিহি। আর যদি বদলি হজকারী ব্যক্তির জন্যই হজ ফরজ। সে ব্যক্তি নিজের ফরজ আদায় না করে বদলি হজ করা মাকরূহে তাহরিমি তথা নিষিদ্ধের কাছাকাছি।’

তাই প্রত্যেক বিবেকবান মুসলিমের জন্য জরুরি যে, বদলি হজ করানোর আগে ব্যক্তি সম্পর্কে সুস্পষ্টভাবে জেনে নেওয়া। তারপর ওই ব্যক্তির মাধ্যমে বদলি হজ করানো উত্তম। বদলি হজের ক্ষেত্রে আরো সর্বোত্তম হচ্ছে-

১. যে ব্যক্তি আগে নিজের হজ সম্পাদন করেছেন; এমন ব্যক্তির দ্বারা বদলি হজ করানো।

২. একজন মুত্তাকি আলেম দিয়ে বদলি হজ করানো উত্তম।

মনে রাখতে হবে

যে ব্যক্তি বদলি হজ আদায় করবেন, তিনি ইহরামের সময় অবশ্যই যার বদলি হজ আদায় করছেন তার নামেই নিয়ত করতে হবে।

সুতরাং যার ওপর হজ ফরজ হয়েছে, কিন্তু হজ সম্পাদনের আগে মারা গেছে কিংবা শারীরিক সক্ষমতা নেই, দায়িত্বশীলদের উচিত যথাযথ যোগ্য লোকদের মাধ্যমে বদলি হজ আদায় করা।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে বদলি হজে করণীয় বিষয়গুলো যথাযথভাবে পালন করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

এমএমএস/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।