যে ১২ কারণে রোজার কাজা আবশ্যক

ইসলাম ডেস্ক
ইসলাম ডেস্ক ইসলাম ডেস্ক
প্রকাশিত: ১২:১০ পিএম, ১৬ এপ্রিল ২০২২

মাহে রমজানের অন্যতম বিধান সিয়াম সাধনা। এর জন্য প্রয়োজন সংযম। এ মাসে কিছু বর্জনীয় এমন রয়েছে, যা রোজার দিনে আমাদের অজান্তেই ঘটে যায়। তখন রোজা ভেঙে যায় এবং সেই রোজার শুধু কাজা আবশ্যক হয়, কাফফারা লাগে না। এমন ১২টি বিষয় নিয়ে লিখেছেন মুনশি মুহাম্মদ উবাইদুল্লাহ

অনিচ্ছাকৃতভাবে গলার ভেতর পানি যাওয়া
অজু বা গোসলের সময় রোজার কথা স্মরণ থাকা অবস্থায় অনিচ্ছাকৃতভাবে গলার ভেতর পানি চলে গেলে রোজা ভেঙে যাবে। তাই রোজা অবস্থায় অজু-গোসলের সময় নাকের নরম স্থানে পানি পৌঁছানো এবং গড়গড়াসহ কুলি করা যাবে না। রমজানের পরে এ রোজার কাজা করা লাগবে, কাফফারার প্রয়োজন নেই। (সুনানে আবি দাউদ : ২৩৬৩, ফতোয়ায়ে শামি : ২/৪০১)।

আহারযোগ্য নয়, এমন খাবার খাওয়া
যা সাধারণত আহারযোগ্য নয় বা কোনো উপকারে আসে না, তা খেলেও রোজা ভেঙে যাবে। রমজানের পরে এ রোজার কাজা করা লাগবে, কাফফারার প্রয়োজন নেই। (বোখারি : ১/২৬০, রদ্দুল মুহতার : ২/৪১০)।

রক্ত থুথুর সঙ্গে গলার ভেতর যাওয়া
দাঁত থেকে রক্ত বেরিয়ে যদি তা থুথুর সঙ্গে গলার ভেতর চলে যায়, তাহলে রক্তের পরিমাণ থুথুর সমান বা বেশি হলে রোজা ভেঙে যাবে। রমজানের পরে এ রোজার কাজা করা লাগবে, কাফফারার প্রয়োজন নেই।(রদ্দুল মুহতার : ২/৩৯৬)।

হস্তমৈথুনে বীর্যপাত হওয়া
হস্তমৈথুনে বীর্যপাত হলে রোজা ভেঙে যাবে। আর এটা যে ভয়াবহ গোনাহের কাজ, তা বলাই বাহুল্য। রমজানের পরে এ রোজার কাজা করা লাগবে, কাফফারার প্রয়োজন নেই। (বোখারি : ১/২৫৪, ফতোয়ায়ে শামি : ২/৩৯৯)।

ইচ্ছাকৃতভাবে বমি গিলে ফেলা
মুখে বমি চলে আসার পর ইচ্ছাকৃতভাবে গিলে ফেললে রোজা ভেঙে যাবে; যদিও তা পরিমাণে অল্প হয়। রমজানের পরে এ রোজার কাজা করা লাগবে, কাফফারার প্রয়োজন নেই। (আদ্দুররুল মুখতার : ২/৪১৫)।

হায়েজ বা নেফাস শুরু হওয়া
রোজা অবস্থায় হায়েজ বা নেফাস শুরু হলে রোজা ভেঙে যাবে। রমজানের পরে এ রোজার কাজা করা লাগবে, কাফফারার প্রয়োজন নেই। (বোখারি : ১/৪৪, আন নুতাফ ফিল ফাতাওয়া : ১০০)।

পেটের ক্ষতে ওষুধ লাগানো
পেটের এমন ক্ষতে ওষুধ লাগালে রোজা ভেঙে যাবে, যা দিয়ে ওষুধ পেটের ভেতর চলে যায়। বিশেষ প্রয়োজনে এমন ক্ষতে ওষুধ লাগাতে হলে পরে সে রোজার কাজা করে নিতে হবে। (রদ্দুল মুহতার : ২/৪০২)।

নাকে ওষুধ বা পানি দেওয়া
নাকে ওষুধ বা পানি দিলে তা যদি গলার ভেতর চলে যায়, তাহলে রোজা ভেঙে যাবে। রমজানের পরে এ রোজার কাজা করা লাগবে, কাফফারার প্রয়োজন নেই। (রদ্দুল মুহতার : ২/৪০২)।

মলদ্বারের ভেতর ওষুধ বা পানি যাওয়া
মলদ্বারের ভেতর ওষুধ বা পানি ইত্যাদি গেলে রোজা ভেঙে যাবে। রমজানের পরে এ রোজার কাজা করা লাগবে, কাফফারার প্রয়োজন নেই। (রদ্দুল মুহতার : ২/৪০২)।

সময় আছে ভেবে পানাহার বা স্ত্রীসঙ্গম করা
সুবহে সাদিকের পর সেহরির সময় আছে ভেবে পানাহার বা স্ত্রীসঙ্গম করলে রোজা ভেঙে যাবে। তেমনি ইফতারির সময় হয়ে গেছে ভেবে সূর্যাস্তের আগে ইফতার করে নিলে রোজা নষ্ট হয়ে যাবে। রমজানের পরে এ রোজার কাজা করা লাগবে, কাফফারার প্রয়োজন নেই। (আল বাহরুর রায়েক : ২/২৯১)।

রোজা নষ্ট হয়ে গেছে ভেবে ইচ্ছাকৃতভাবে পানাহার করা
রোজা রাখা অবস্থায় ভুলবশত পানাহার করে রোজা নষ্ট হয়ে গেছে ভেবে ইচ্ছাকৃতভাবে পানাহার করলে রোজা নষ্ট হয়ে যাবে। রমজানের পরে এ রোজার কাজা করা লাগবে, কাফফারার প্রয়োজন নেই। (আদ্দুররুল মুখতার : ২/৪০১)।

বমির কারণে রোজা নষ্ট হয়েছে ভেবে রোজা ভেঙে ফেলা
অনিচ্ছাকৃত বমি হওয়ার কারণে রোজা নষ্ট হয়ে গেছে মনে করে রোজা ভেঙে ফেললে রমজানের পরে এ রোজার কাজা করা লাগবে, কাফফারার প্রয়োজন নেই। (মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা ৬/১৪৯, আদ্দুররুল মুখতার : ২/৪০১)।

মুনশি/এসইউ/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।