জামাতে নামাজ আদায় কেন গুরুত্ব?
মুসলিম উম্মাহর সর্বোত্তম আদর্শ নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সারা জীবন জামাতের সঙ্গেই নামাজ আদায় করেছেন। এমনকি তাঁর ইন্তিকালের আগ মুহূর্তে অসুস্থতার সময়ও তিনি জামাত ছাড়েননি। সাহাবায়ে কেরামেরও পুরো জীবন জামাতে নামাজ আদায় করেছেন। জামাতে নামাজ পড়া প্রসঙ্গে আল্লাহ তাআলা এভাবে নির্দেশ দেন-
وَ اَقِیۡمُوا الصَّلٰوۃَ وَ اٰتُوا الزَّکٰوۃَ وَ ارۡکَعُوۡا مَعَ الرّٰکِعِیۡنَ
‘আর তোমরা যথাযথভাবে নামাজ পড় এবং জাকাত দাও আর নামাজিদের সঙ্গে (জামাতে) নামাজ আদায় কর।’ (সুরা বাকারা : আয়াত ৪৩)
কারণ জামাতে নামাজের ফজিলত ও গুরুত্ব একাকী নামাজ আদায়ের চেয়ে ২৭ গুণ বেশি। জামাতে নামাজ আদায়ের ফজিলতগুলোই জামাতের গুরুত্বগুলো সবার সামনে তুলে ধরে। জামাতে নামাজ পড়ার আরও অনেক উপকারিতা রয়েছে। আসুন, জেনে নিই উপকারিতাগুলো-
১. সওয়াব বেশি ২৭ গুণ
নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘জামাতে নামাজের ফজিলত একাকী নামাজের চেয়ে ২৭ গুণ বেশি।’ (বুখারি)
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পুরো জীবন জামাতের সঙ্গেই নামাজ আদায় করেছেন। এমনকি ইন্তেকাল আগ মুহূর্তে অসুস্থতার সময়ও জামাত ছাড়েননি। সাহাবায়ে কেরামের পুরো জীবনও সেভাবে অতিবাহিত হয়েছে।’ (বুখারি)
২. জাহান্নাম থেকে মুক্তি
হজরত আনাস ইবনে মালিক রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, রাসুলুল্লাহ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি ৪০ দিন পর্যন্ত তাকবিরে উলার (প্রথম তাকবিরের) সঙ্গে জামাতে নামাজ আদায় করবে, আল্লাহ তাআলা তাকে দুটি পুরস্কার দান করবেন। এক. জাহান্নাম থেকে মুক্তি। দুই. মুনাফিকের তালিকা থেকে তার নাম কেটে দেবেন।’ (তিরমিজি)
৩. জামাত পরিত্যাগকারীর প্রতি সতর্কতা
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘যার হাতে আমার প্রাণ, তার শপথ করে বলছি, আমার ইচ্ছা হয় আমি কাঠ সংগ্রহ করার নির্দেশ দেই আর নামাজের আজান দেওয়ার জন্য হুকুম দেই। এরপর আমি এক ব্যক্তিকে হুকুম করি, যেন সে লোকদের নামাজের ইমামতি করে। আর আমি ওই সব লোকদের দিকে যাই, যারা নামাজের জামাতে হাজির হয়নি এবং তাদের বাড়িঘরগুলো আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেই।’ (বুখারি)
জামাতে নামাজ পড়ার সওয়াব বেশি হওয়ার কারণ
হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,‘কোনো ব্যক্তির জামাতের সঙ্গে নামাজের সওয়াব, তার নিজের ঘরে ও বাজারে আদায়কৃত নামাহের সওয়াবের চেয়ে পঁচিশ গুণ বাড়িয়ে দেওয়া হয়। এর কারণ এই যে, সে যখন উত্তমরূপে অজু করলো, এরপর একমাত্র নামাজের উদ্দেশে মসজিদে রওয়ানা করলো তখন তার প্রতি কদমের বিনিময়ে একটি মর্যাদা বাড়িয়ে দেওয়া হয় এবং একটি গুনাহ মাফ করা হয়। নামাজ আদায়ের পর সে যতক্ষণ নিজ নামাজের স্থানে থাকে, মালাকগণ (ফেরেশতাগণ) তার জন্য এ বলে দোয়া করতে থাকেন-
‘হে আল্লাহ! আপনি তার উপর রহমত বর্ষণ করুন এবং তার প্রতি অনুগ্রহ করুন।’
আবার তোমাদের কেউ যতক্ষণ নামাজের অপেক্ষায় থাকে ততক্ষণ পর্যন্ত সে নামাজে রত বলে গণ্য হয়।(বুখারি)
আল্লাহ তাআলা মুমিন মুসলমানের জন্য প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ- ফজর, জোহর, আসর, মাগরিব, ইশা, জুমা, ঈদুল ফিতর এবং ঈদুল আজহার নামাজ জামাতে পড়াকে আবশ্যক করেছেন। সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, জামাতে নামাজ আদায় করা। কোরআন-সুন্নাহর তাগিদ মেনে এবং ঘোষিত ফজিলতগুলো পাওয়ার সর্বোচ্চ চেষ্টা করা।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে জামাতে নামাজ পড়ার তাওফিক দান করুন। জামাতে নামাজ পড়ার গুরুত্ব উপলব্দি ও ফজিলতগুলো অর্জনের তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/এমএস