সাফল্য পাওয়ার পর শুকরিয়া ও দোয়া
আল্লাহর শুকরিয়া আদায়ের জন্য সাফল্য কোনো শর্ত নয়। বরং সুঃখে-দুঃখে সব সময় আল্লাহর শুকরিয়া ও দোয়া করাই মুমিন মুসলমানের একান্ত কাজ। কিন্তু হজরত ইউসুফ আলাইহিস সালামের জীবনের উপর ঘটে যাওয়া সব বিপদের পর তিনি যখন পুনরায় বাবা-ভাইদের সঙ্গে মিলিত হলেন তখন তিনি মহান আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করে দোয়া করেছিলেন। যা মহান আল্লাহ তাআলা উম্মতে মুহাম্মাদিরে জন্য কোরআনুল কারিমে তুলে ধরেছেন। এমন সফলতা পেলে এই দোয়াটি হতে পারে সবার জন্য অনুকরণীয়-
فَاطِرَ السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضِ ۟ اَنۡتَ وَلِیّٖ فِی الدُّنۡیَا وَ الۡاٰخِرَۃِ ۚ تَوَفَّنِیۡ مُسۡلِمًا وَّ اَلۡحِقۡنِیۡ بِالصّٰلِحِیۡنَ
উচ্চারণ : ‘ফাতিরাস সামাওয়াতি ওয়াল আরদি আংতা ওয়ালিয়্যি ফিদদুনইয়া ওয়াল আখিরাতি তাওয়াফফানি মুসলিমাওঁ ওয়া আলহিক্বনি বিস-সালিহিন।’
অর্থ : (হে) আসমান ও জমিনের স্রষ্টা! আপনিই দুনিয়া ও আখেরাতে আমার কার্যনির্বাহী অভিভাবক। আমাকে পূর্ণ আনুগত্যশীল অবস্থায় দুনিয়া থেকে উঠিয়ে নিন এবং আমাকে পরিপূর্ণ নেক বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত রাখুন।’
শুকরিয়া জ্ঞাপনের এ দোয়ার সংক্ষিপ্ত ঘটনা
হজরত ইউসুফ আলাইহিস সালাম যখন বাবা-মা ও ভাইদের সঙ্গে সাক্ষাতের ফলে তাঁর জীবনে প্রশান্তি এলো, তখন তিনি সরাসরি আল্লাহর প্রশংসা ও তার কাছে দোয়ায় মশগুল হয়ে গেলেন এবং বললেন-
رَبِّ قَدۡ اٰتَیۡتَنِیۡ مِنَ الۡمُلۡکِ وَ عَلَّمۡتَنِیۡ مِنۡ تَاۡوِیۡلِ الۡاَحَادِیۡثِ ۚ فَاطِرَ السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضِ ۟ اَنۡتَ وَلِیّٖ فِی الدُّنۡیَا وَ الۡاٰخِرَۃِ ۚ تَوَفَّنِیۡ مُسۡلِمًا وَّ اَلۡحِقۡنِیۡ بِالصّٰلِحِیۡنَ
‘হে আমার প্রভু! আপনি আমাকে রাষ্ট্রক্ষমতা দান করেছেন এবং আমাকে স্বপ্নের ব্যাখ্যা শিখিয়েছেন। হে আসমান ও যমীনের স্রষ্টা! আপনিই দুনিয়া ও আখেরাতে আমার কার্যনির্বাহী। আমাকে পূর্ণ আনুগত্যশীল অবস্থায় দুনিয়া থেকে উঠিয়ে নিন এবং আমাকে পরিপূর্ণ সৎ বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত রাখুন।’ (সুরা ইউসুফ : আয়াত ১০১)
মনে রাখতে হবে
যেহেতু দুনিয়ার প্রতিটি প্রাণীকেই মৃত্যুর স্বাদ নিতে হবে। তাই আল্লাহ তাআলা কোরআনুল কারিমে এ ব্যাপারে সুস্পষ্ট বক্তব্য দিয়েছেন যে, দুনিয়ার প্রত্যেক মুসলমান বান্দার চূড়ান্ত কামনা হলো, সে যেন ঈমানদার মুমিন মুসলমান হিসেবে মৃত্যুবরণ করতে পারে।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে মুসলমান হিসেবে ঈমান নিয়ে উপস্থিত হতে কোরআনের এ আয়াতটি দোয়া হিসেবে দান করেছেন। হজরত ইউসুফ আলাইহিস সালাম যখন তাঁর স্বজনদের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিলেন। দীর্ঘ সময় পর যখন তাদের সন্ধ্যান পান তখন তিনি এভাবে শুকরিয়া ও দোয়া করেছিলেন।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে সব সময় নামাজের পর সব সাফল্যের কথা স্মরণ করে এ দোয়ার মাধ্যমে কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন ও মুসলিম হিসেবে মৃত্যুবরণের সৌভাগ্য অর্জন করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/এএসএম