জান্নাতে যেতে পেরেশানি থাকবে না যাদের!
আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের আনীত জীবন বিধান অনুযায়ী নিজেদের পরিচালনাকারীদের চিরস্থায়ী ঠিকানা জান্নাত। যারা জান্নাতের অধিবাসী হবেন তারা কেমন হবেন আর জান্নাতই বা কেমন হবে তা ওঠে এসেছে কোরআন-সুন্নাহর দিকনির্দেশনায়। জান্নাতের সৃষ্টি সম্পর্কে হাদিসে পাকে প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তুলে ধরেছেন চমৎকার তথ্য। কী সেই তথ্য?
আল্লাহ তাআলা সত্য জীবন ব্যবস্থাসহ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন। যারা কুরআন অনুযায়ী নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দেখানো পথ ও মতে চলবে তাদের জন্যই রয়েছে পরকালীন জীবনের সুখ-শান্তির চিরস্থায়ী জান্নাতের । এ শান্তিময় জীবন-যাপন করতে আল্লাহ তাআলা এভাবে জান্নাতিদের ডাকবেন-
یٰعِبَادِ لَا خَوۡفٌ عَلَیۡکُمُ الۡیَوۡمَ وَ لَاۤ اَنۡتُمۡ تَحۡزَنُوۡنَ - اَلَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا بِاٰیٰتِنَا وَ کَانُوۡا مُسۡلِمِیۡنَ - اُدۡخُلُوا الۡجَنَّۃَ اَنۡتُمۡ وَ اَزۡوَاجُکُمۡ تُحۡبَرُوۡنَ
‘হে আমার বান্দাগণ! আজকের দিনে তোমাদের কোনো ভয় নেই, তোমরা চিন্তিতও হবে না। যারা আমার আয়াতসমূহে বিশ্বাস স্থাপন করেছিলে এবং তোমরা আত্মসমার্পন করেছিলে (আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রতি)। তোমরা এবং তোমাদের বিবিগণ সানন্দে জান্নাতের প্রবেশ কর।’ (সুরা যুখরুফ : আয়াত ৬৮-৭০)
যে জান্নাতে প্রবেশের জন্য আল্লাহ তাআলা তার অনুগত বান্দাদের ডাকবেন; সে জান্নাত তিনি কী দিয়ে সৃষ্টি করেছেন। যেখানে শুধু শান্তি আর শান্তি। থাকবেনা কোনো পেরেশানি ও দুঃখ-বেদনা। সে জান্নাতের সৃষ্টি ও সুখ-শান্তির বর্ণনা তুলে ধরা হয়েছে হাদিসের বর্ণনায়-
হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু একদিন নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মজলিশে আরজ করলেন, হে আল্লাহর রাসুল! (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জান্নাত কেমন! এর বিবরণ দান করুন। তখন নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বর্ণনা করেন-
‘জান্নাতের একটি ইট স্বর্ণের, আর একটি রূপার। কংকর হবে মুক্তার। জাফরানের মাটি আর কস্তুরির গারা। যে জান্নাতে প্রবেশ করবে, সে সর্বদা আনন্দ-উল্লাসে মত্ত মুদ্ধ মাতোয়ারা থাকবে। বেহেশতে কেউ চিন্তিত হবে না, কোনো দিনও মৃত্য আসবে না। পোশাক-পরিচ্ছদ পুরনো হবে না, কোনো দিন বৃদ্ধকাল আসবে না। জান্নাতে দুধ, পানি, মধুর নহরসমূহ প্রবাহিত থাকবে। বেহেশতবাসীগণ যা চাইবে সঙ্গে সঙ্গে তাই পাবে।’
এ জান্নাত কারা পাবে?
আল্লাহ তাআলা কোরআনুল কারিমে জান্নাত প্রাপ্তির সুসংবাদ দিয়ে তাদের পরিচয়ও সংক্ষেপে তুলে ধরেছেন এভাবে-
اَلَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا بِاٰیٰتِنَا وَ کَانُوۡا مُسۡلِمِیۡنَ
‘যারা আমার আয়াতসমূহে বিশ্বাস স্থাপন করেছিলে এবং তোমরা আত্মসমার্পন করেছিলে (আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রতি)।’ (সুরা যুখরূফ : আয়াত ৬৯)
অর্থাৎ কোরআন-সুন্নাহর উপর শুধু বিশ্বাস স্থাপনই নয় বরং তা অনুযায়ী জীবন পরিচালনা করেছিলো এবং এসব দিকনির্দেশনার উপর নিজের সব সিদ্ধান্তের বিষয়ে আত্মসমার্পন করেছিলো। আর তারাই হবে মূল্যবান এ জান্নাতের চিরস্থায়ী অধিবাসী।
সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, আখেরাতের সীমাহীন জীবনে জান্নাতের নেয়ামাত ভোগ-বিলাস এবং আল্লাহর সাক্ষাৎ পাওয়ার জন্য কুরআন-সুন্নাহ মোতাবেক জীবন-যাপন করা।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে দুনিয়ার জীবনের সব কিছু কোরআন-সুন্নাহ অনুযায়ী পালন করার তাওফিক দান করুন। দ্বীন ইসলামের ওপর আত্মসমার্পন করার তাওফিক দান করুন। চিরস্থায়ী শান্তির ঠিকানা জান্নাতের অধিবাসী হওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/জিকেএস