অজুর শুরু-শেষে আল্লাহর জিকিরের গুরুত্ব ও ফজিলত

ইসলাম ডেস্ক
ইসলাম ডেস্ক ইসলাম ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৮:২৪ এএম, ০৬ ডিসেম্বর ২০২১

ফরজ ইবাদত ঈমান গ্রহণ, নামাজ, হজ, কোরআন তেলাওয়াতসহ অনেক ইবাদতে অজু করা আবশ্যক। প্রিয় নবি বলতেন যার অজু নেই; তার নামাজ নেই। ফরজ ইবাদত ছাড়াও অজুর সঙ্গে নফল ইবাদতের মর্যাদাও অনেক বেশি। প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অজুর শুরুতে এবং শেষে আল্লাহকে স্মরণ করার কথা বলেছেন। কিন্তু কেন তিনি অজুর শুরু ও শেষে জিকির করতে বলেছেন?

১. হজরত আবু সাঈদ খুদরি রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যার অজু নেই, তার নামাজ নেই। আর যে ব্যক্তি অজুতে আল্লাহর নাম (বিসমিল্লাহ) উল্লেখ করে না, তার অজু (যথার্থ) হয় না।’ (ইবনে মাজাহ)

২. হজরত উকবা ইবনে আমির রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেন, উট দেখভালের দায়িত্ব ছিল আমাদের উপর। আমার পালা আসলে, আমি সেগুলোকে সন্ধ্যার সময় নিয়ে আসি। এসে দেখতে পাই, আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দাঁড়িয়ে লোকদের সঙ্গে কথা বলছেন। আমি তাঁর এ কথাটুকু শুনতে পাই-

‘কোনো মুসলিম যদি অজু করে এবং তা সুন্দরভাবে সম্পন্ন করে, তার জন্য জান্নাত অবধারিত হয়ে যায়।’

এ কথাগুলো শুনে আমি বলি, ‘কী চমৎকার কথা!’ তখন আমার সামনে থাকা একজন বলে ওঠেন, ‘এর আগের কথাটি ছিল আরও চমৎকার!’ তকিয়ে দেখি (সামনে লোকটি) ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু! তিনি বলেন-

‘আমার মনে হয় আপনি এই মাত্র এসেছেন। (এর আগে) নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘তোমাদের কেউ যদি অজু করে এবং যথাযথভাবে তা সম্পন্ন করে; তারপর বলে-

أَشْهَدُ انْ لَا اِلَهَ اِلَّا اللهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيْكَ لهُ وَ اَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُاللهِ وَ رَسُوْلُهُ

উচ্চারণ : আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারিকা লাহু ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুল্লাহি ওয়া রাসুলুহু।’

অর্থ : আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া কোনো সর্বভৌম সত্তা নেই; তিনি একক, তাঁর কোনো শরিক নেই। আর আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আল্লাহর বান্দা এবং বার্তাবহক (রাসুল)।’

তার জন্য জান্নাতের ৮টি দরজা খুয়ে যাবে; যে দরজা দিয়ে ইচ্ছা; সে (জান্নাতে) প্রবেশ করতে পারবে।’ (মুসলিম)

৩. হজরত ওমর ইবনে খাত্তাব রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, আল্লাহর রাসুল বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি অজু করে এবং তা সুন্দরভাবে সম্পন্ন করে তারপর বলে-

أَشْهَدُ انْ لَا اِلَهَ اِلَّا اللهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيْكَ لهُ وَ اَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَ رَسُوْلُهُ اَللهُمَّ اجْعَلْنِىْ مِنَ التَّوَّابِيْنَ وَاجْعَلْنِىْ مِنَ الْمُتَطَهِّرِيْنَ

উচ্চারণ : আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারিকা লাহু ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রাসুলুহু। আল্লাহুম্মাঝ আলনি মিনাত তাওয়াবিনা ওয়াঝআলনি মিনাল মুতাত্বাহহিরিন।’

অর্থ : আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া কোনো সর্বভৌম সত্তা নেই; তিনি একক, তাঁর কোনো শরিক নেই। আর আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আল্লাহর বান্দা এবং বার্তাবহক (রাসুল)।  হে আল্লাহ! আমাকে তাওবাকারীদের অন্তর্ভূক্ত করে দাও; আর আমাকে পবিত্রতা অর্জনকারীদের একজন বানিয়ে দাও’

তার জন্য জান্নাতের ৮টি দরজা খুয়ে যাবে; যে দরজা দিয়ে ইচ্ছা; সে (জান্নাতে) প্রবেশ করতে পারবে।’ (তিরমিজি)

৪. হজরত আবু সাঈদ খুদরি রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন-

سُبْحَانَكَ اللهُمَّ وَ بِحَمْدِكَ أَشْهَدُ أَنْ لَا اِلَهَ اِلَّا اَنْتَ أَسْتَغْفِرُكَ وَ اَتُوْبُ اِلَيْكَ

উচ্চারণ : ‘সুবহানাকাল্লাহুম্মা ওয়া বিহামদিকা আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লা আংতা আসতাগফিরুকা ওয়া আতুবু ইলাইকা।’

অর্থ : হে আল্লাহ! তুমি ত্রুটিমুক্ত; প্রশংসা শুধু তোমারই। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, তুমি ছাড়া কোনো সার্বভৌম সত্তা নেই; আমি তোমার কাছে ক্ষমা চাই এবং তোমার কাছে ফিরে আসছি।’

তা একটি চামড়ার মধ্যে লিখ সিলগালা করে দেওয়া হয় এবং কেয়ামত পর্যন্ত তা খোলা হবে না।’ (নাসাঈ)

সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, ভালোভাবে অজু করা। অজুর পর উল্লেখিত দোয়াগুলো পড়া। হাদিসের উপর যথাযথ আমল করা।

আল্লাহ তাআলা মুমিন বান্দার জন্য অজু ও পরবর্তী দোয়া পড়ার মাধ্যমে জান্নাতগুলোকে উন্মুক্ত করে দিন। হাদিসে ঘোষিত আমল যথাযথভাবে করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

এমএমএস/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।