কোরআনে ‘অধিকাংশ’ শব্দটি বার বার এলো কেন?

ইসলাম ডেস্ক
ইসলাম ডেস্ক ইসলাম ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৫:৪৮ পিএম, ১৫ নভেম্বর ২০২১

কোরআনুল কারিম। ইসলামি জীবন ব্যবস্থার চূড়ান্ত গাইড। মুসলিম উম্মাহর একমাত্র সংবিধান। কোরআনের আলোকে জীবন গঠনই ইসলামে দাবি। আল্লাহ তাআলা মানুষকে নানা বিষয়ে সতর্ক করেছেন। এ সতর্ক করতে গিয়ে তিনি আরবি ‘اَکۡثَر: আকছারা’ অর্থাৎ ‘অধিকাংশ’ কিংবা ‘বেশিরভাগ’ শব্দটি অনেক স্থানে ব্যবহার করেছেন। ‘অধিকাংশ’ শব্দ ব্যবহার করে তিনি মানুষ কিসের সতর্ক সংকেত দিয়েছেন? কেন এত বেশি অধিকাংশ শব্দ উল্লেখ করেছেন?

আল্লাহ তাআলা কোরআনুল কারিমের যেসব স্থানে ‘অধিকাংশ’ শব্দ ব্যবহার করেছেন; তা মূলত মানুষকে সতর্ক করার জন্য উল্লেখ করেছেন। কোরআনে বর্ণিত এ শব্দমালা যেসব আয়াতে ওঠে এসেছে; তার কিছু আয়াত তুলে ধরা হলো-

১. অধিকাংশ মানুষ বোঝে না
قُلۡ اِنَّ رَبِّیۡ یَبۡسُطُ الرِّزۡقَ لِمَنۡ یَّشَآءُ وَ یَقۡدِرُ وَ لٰکِنَّ اَکۡثَرَ النَّاسِ لَا یَعۡلَمُوۡنَ
(হে রাসুল! আপনি) বলুন, ‘আমার প্রতিপালক যার জন্য ইচ্ছা তার রিজিক বাড়িয়ে দেন অথবা তা সীমিত করেন; কিন্তু অধিকাংশ মানুষ এটি বোঝে না।’ (সুরা সাবা : আয়াত ৩৬)

এই আয়াতে কাফেরদের ভুল ধারণা ও সন্দেহ দূর করা হচ্ছে যে, রিজিকের প্রশস্ততা ও সংকীর্ণতা আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি ও অসন্তুষ্টির বহিঃপ্রকাশ নয়; বরং তার সম্পর্ক আল্লাহর ইচ্ছা ও হিকমতের সাথে। এই জন্য তিনি সম্পদ যাকে পছন্দ করেন তাকে দেন এবং যাকে অপছন্দ করেন তাকেও দেন। তিনি যাকে চান ধনী করেন এবং যাকে চান গরীব করেন।

২. অধিকাংশ লোক বিশ্বাস করে না
اِنَّ السَّاعَۃَ لَاٰتِیَۃٌ لَّا رَیۡبَ فِیۡهَا وَ لٰکِنَّ اَکۡثَرَ النَّاسِ لَا یُؤۡمِنُوۡنَ
‘নিশ্চয়ই কিয়ামত অবশ্যম্ভাবী, এতে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু অধিকাংশ লোকই বিশ্বাস করে না। (সুরা আল-মুমিন : আয়াত ৫৯)

৩. অধিকাংশই অকৃতজ্ঞ
وَ اِنَّ رَبَّکَ لَذُوۡ فَضۡلٍ عَلَی النَّاسِ وَ لٰکِنَّ اَکۡثَرَهُمۡ لَا یَشۡکُرُوۡنَ
আর নিশ্চয়ই তোমার প্রতিপালক মানুষের প্রতি অনুগ্রহশীল; কিন্তু তাদের অধিকাংশই অকৃতজ্ঞ। (সুরা নমল : আয়াত ৭৩)

অথ্যাৎ মহান আল্লাহ তাঁর অবাধ্যতাকারীদের আযাব দিতে দেরি করাও আল্লাহর দয়া ও কৃপার একটি অংশ। কিন্তু মানুষ তার অবাধ্যতার বিষয়টি জানা সত্ত্বেও আল্লাহ হতে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে তাঁর অকৃতজ্ঞতা করছে।

৪. অধিকাংশই প্রতিশ্রুতি রাখে না
وَ مَا وَجَدۡنَا لِاَکۡثَرِهِمۡ مِّنۡ عَهۡدٍ ۚ وَ اِنۡ وَّجَدۡنَاۤ اَکۡثَرَهُمۡ لَفٰسِقِیۡنَ
‘আর আমরা তাদের অধিকাংশকে প্রতিশ্রুতি পালনকারী পাইনি; বরং আমরা তাদের অধিকাংশকে তো ফাসেকই (পাপাচারি) পেয়েছি। (সুরা আরাফ : আয়াত ১০২)

অর্থাৎ কোনো ধরনের অঙ্গীকার পালনের পরোয়াই তাদের নেই। আল্লাহর পালিত বান্দা হওয়ার কারণে জন্মগতভাবে প্রত্যেকটি মানুষ আল্লাহর সঙ্গে যে অংগীকারে আবদ্ধ, তা প্রতিপালনের কোনো পরোয়াই তাদের নেই। তারা সামাজিক অঙ্গীকার পালনেরও কোনো পরোয়া করে না, মানব সমাজের একজন সদস্য হিসেবে প্রত্যেক ব্যক্তি যার সঙ্গে একটি সুদৃঢ় বন্ধনে আবদ্ধ।
অন্যদিকে নিজের বিপদ-আপদ ও দুঃখ কষ্টের মুহুর্তগুলোতে অথবা কোনো সদিচ্ছা ও মহৎ বাসনা পোষণের মুহুর্তে মানুষ ব্যক্তিগতভাবে আল্লাহর সাথে যে অংগীকারে আবদ্ধ হয়, তাও তারা পালন করে না। এ ধরনের অঙ্গীকার ভঙ্গ করাকে এখানে ফাসেকি বলা হয়েছে।

৫. অধিকাংশ লোকই ধারণা করে
وَ مَا یَتَّبِعُ اَکۡثَرُهُمۡ اِلَّا ظَنًّا ؕ اِنَّ الظَّنَّ لَا یُغۡنِیۡ مِنَ الۡحَقِّ شَیۡئًا ؕ اِنَّ اللّٰهَ عَلِیۡمٌۢ بِمَا یَفۡعَلُوۡنَ
আর তাদের অধিকাংশ লোক শুধু ধারণার অনুসরণ করে; নিশ্চয়ই বাস্তব ব্যাপারে ধারণা কোনো কাজে আসে না। তারা যা করছে নিশ্চয়ই আল্লাহ সে বিষয়ে সুপরিজ্ঞাত। (সুরা ইউনুস : আয়াত ৩৬)

৬. অধিকাংশ মানুষ কৃতজ্ঞতা পোষণ করে না
اَللّٰهُ الَّذِیۡ جَعَلَ لَکُمُ الَّیۡلَ لِتَسۡکُنُوۡا فِیۡهِ وَ النَّهَارَ مُبۡصِرًا ؕ اِنَّ اللّٰهَ لَذُوۡ فَضۡلٍ عَلَی النَّاسِ وَ لٰکِنَّ اَکۡثَرَ النَّاسِ لَا یَشۡکُرُوۡنَ
আল্লাহই রাতকে তোমাদের বিশ্রামের জন্য সৃষ্টি করেছেন এবং দিনকে করেছেন আলোকোজ্জ্বল। নিশ্চয়ই আল্লাহ মানুষের প্রতি অনুগ্রহশীল, কিন্তু অধিকাংশ মানুষ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে না। (সুরা মুমিন : আয়াত ৬১)

রাত ও দিন মানুষের জন্য আল্লাহ তাআলার নেয়ামত। অধিকাংশ মানুষ আল্লাহর নেয়ামতের কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করে না, আর না তা স্বীকার করে। হয়তো বা তা কুফরি ও অস্বীকার করার কারণ। যেমন- কাফেরদের অভ্যাস। নতুবা অনুগ্রহকারীর কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন যে ওয়াজিব এ ব্যাপারে উদাসীনতার কারণে। যেমন- মূর্খদের আচরণ।

৭. অধিকাংশই ফাসিক
وَ لَقَدۡ اَرۡسَلۡنَا نُوۡحًا وَّ اِبۡرٰهِیۡمَ وَ جَعَلۡنَا فِیۡ ذُرِّیَّتِهِمَا النُّبُوَّۃَ وَ الۡکِتٰبَ فَمِنۡهُمۡ مُّهۡتَدٍ ۚ وَ کَثِیۡرٌ مِّنۡهُمۡ فٰسِقُوۡنَ
‘আর অবশ্যই আমরা নূহ এবং ইবরাহিমকে রাসুলরাপে পাঠিয়েছিলাম এবং আমরা তাদের বংশধরগণের জন্য স্থির করেছিলাম নবুওয়াত ও কিতাব, কিন্তু তাদের অল্পই সৎপথ অবলম্বন করেছিল। আর তাদের অধিকাংশই ফাসিক (পাপাচারি।’ (সুরা হাদিদ : আয়াত ২৬)

৮. অধিকাংশই প্রকৃত সত্য জানে না
اَمِ اتَّخَذُوۡا مِنۡ دُوۡنِهٖۤ اٰلِهَۃً ؕ قُلۡ هَاتُوۡا بُرۡهَانَکُمۡ ۚ هٰذَا ذِکۡرُ مَنۡ مَّعِیَ وَ ذِکۡرُ مَنۡ قَبۡلِیۡ ؕ بَلۡ اَکۡثَرُهُمۡ لَا یَعۡلَمُوۡنَ ۙ الۡحَقَّ فَهُمۡ مُّعۡرِضُوۡنَ
‘ওরা কি তাঁকে ভিন্ন বহু উপাস্য গ্রহণ করেছে? (হে রাসুল! আপনি) বলুন, ‘তোমরা তোমাদের প্রমাণ উপস্থিত কর। এটিই আমার সঙ্গে যা আছে তাদের জন্য উপদেশ এবং এটিই উপদেশ ছিল আগের নবি-রাসুলদের জন্য। কিন্তু ওদের অধিকাংশই প্রকৃত সত্য জানে না। ফলে ওরা মুখ ফিরিয়ে নেয়।’ (সুরা আম্বিয়া : আয়াত ২৪)

৯. অধিকাংশ মানুষের কথা মতো চললে…
وَ اِنۡ تُطِعۡ اَکۡثَرَ مَنۡ فِی الۡاَرۡضِ یُضِلُّوۡکَ عَنۡ سَبِیۡلِ اللّٰهِ ؕ اِنۡ یَّتَّبِعُوۡنَ اِلَّا الظَّنَّ وَ اِنۡ هُمۡ اِلَّا یَخۡرُصُوۡنَ
‘আর যদি তুমি দুনিয়ার অধিকাংশ লোকের কথামত চল, তাহলে তারা তোমাকে (সত্যের পথ থেকে) আল্লাহর পথ থেকে বিচ্যুত করে দেবে। তারা তো শুধু অনুমানের অনুসরণ করে এবং তারা কেবল অনুমানভিত্তিক কথাবার্তাই বলে থাকে। (সুরা আনআম : আয়াত ১১৬)

وَ لَقَدۡ ضَلَّ قَبۡلَهُمۡ اَکۡثَرُ الۡاَوَّلِیۡنَ
আর অবশ্যই তাদের আগে পূর্ববর্তীদের বেশীর ভাগ বিপথগামী হয়েছিল, (সুরা সাফফাত : আয়াত ৭১)

وَ مَاۤ اَکۡثَرُ النَّاسِ وَ لَوۡ حَرَصۡتَ بِمُؤۡمِنِیۡنَ
‘আপনি যতই চান না কেন, বেশীর ভাগ লোকই ঈমান গ্রহণকারী নয়।’ [সূরা ইউসুফ ১০৩]

১২. সৃষ্টির রহস্যই অধিকাংশ লোকে জানে না
وَ مَا خَلَقۡنَا السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضَ وَ مَا بَیۡنَهُمَا لٰعِبِیۡنَ - مَا خَلَقۡنٰهُمَاۤ اِلَّا بِالۡحَقِّ وَ لٰکِنَّ اَکۡثَرَهُمۡ لَا یَعۡلَمُوۡنَ
‘আর আমরা আসমানসমূহ, জমিন ও এ দুইয়ের মধ্যকার কোনো কিছুই খেলার ছলে সৃষ্টি করিনি; আমরা এ দুইটিকে যথাযথভাবেই সৃষ্টি করেছি, কিন্তু তাদের অধিকাংশই তা জানে না।’ (সুরা দোখান : আয়াত ৩৮-৩৯)
অর্থাৎ, এই আল্লাহর সৃষ্টি জগতের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যের ব্যাপারে তারা উদাসীন ও বেখবর। যার কারণে আখেরাতের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করার ব্যাপারে বেপরোয়া এবং পার্থিব সুখ-সামগ্রীর খোঁজেই সদা ব্যস্ত।

১৩. অধিকাংশই আল্লাহর কুদরতের জ্ঞান রাখে না
وَ لَئِنۡ سَاَلۡتَهُمۡ مَّنۡ نَّزَّلَ مِنَ السَّمَآءِ مَآءً فَاَحۡیَا بِهِ الۡاَرۡضَ مِنۡۢ بَعۡدِ مَوۡتِهَا لَیَقُوۡلُنَّ اللّٰهُ ؕ قُلِ الۡحَمۡدُ لِلّٰهِ ؕ بَلۡ اَکۡثَرُهُمۡ لَا یَعۡقِلُوۡنَ
‘যদি তুমি ওদেরকে জিজ্ঞাসা কর, ‘ভূমি মৃত হওয়ার পর কে আকাশ হতে বৃষ্টি বর্ষণ করে জমিনকে সঞ্জীবিত করে?’ ওরা অবশ্যই বলবে, ‘আল্লাহ।’ বল, ‘সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর।’ কিন্তু ওদের অধিকাংশই জ্ঞান রাখে না।’ (সুরা আনকাবুত : আয়াত ৬৩)

অর্থাৎ তারা জ্ঞানী হলে ও জ্ঞান করলে তারা নিজ প্রতিপালকের সঙ্গে সঙ্গে পাথর ও মৃতদেরকেও প্রতিপালক মনে করতো না এবং তাদের মাঝে স্ববিরোধিতা থাকত না। যেহেতু আল্লাহ তাআলাকে স্রষ্টা ও প্রতিপালক স্বীকার করার পরেও তারা মূর্তিদের প্রয়োজন পূরণকারী এবং ইবাদতের যোগ্য মনে করত।

১৪. আল্লাহর কাজ সম্পর্কে অধিকাংশই জানে না
اَمَّنۡ جَعَلَ الۡاَرۡضَ قَرَارًا وَّ جَعَلَ خِلٰلَهَاۤ اَنۡهٰرًا وَّ جَعَلَ لَهَا رَوَاسِیَ وَ جَعَلَ بَیۡنَ الۡبَحۡرَیۡنِ حَاجِزًا ؕ ءَ اِلٰهٌ مَّعَ اللّٰهِ ؕ بَلۡ اَکۡثَرُهُمۡ لَا یَعۡلَمُوۡنَ
‘কিংবা তিনি, যিনি পৃথিবীকে বাসোপযোগী করেছেন এবং ওর মাঝে মাঝে প্রবাহিত করেছেন নদীমালা এবং ওতে সুদৃঢ় পর্বতমালা স্থাপন করেছেন এবং দুই সাগরের মধ্যে সৃষ্টি করেছেন অন্তরায়। আল্লাহর সঙ্গে অন্য কোনো ইলাহ আছে কি? বরং তাদের অধিকাংশই (আল্লাহর কুদরত সম্পর্কে) জানে না।’ (সুরা নমল : আয়াত ৬১)

১৫. অধিকাংশ মানুষ আল্লাহর অনুগ্রহের কৃতজ্ঞ নয়
وَ اتَّبَعۡتُ مِلَّۃَ اٰبَآءِیۡۤ اِبۡرٰهِیۡمَ وَ اِسۡحٰقَ وَ یَعۡقُوۡبَ ؕ مَا کَانَ لَنَاۤ اَنۡ نُّشۡرِکَ بِاللّٰهِ مِنۡ شَیۡءٍ ؕ ذٰلِکَ مِنۡ فَضۡلِ اللّٰهِ عَلَیۡنَا وَ عَلَی النَّاسِ وَ لٰکِنَّ اَکۡثَرَ النَّاسِ لَا یَشۡکُرُوۡنَ
‘আমি আমার পিতৃপুরুষ ইবরাহিম, ইসহাক এবং ইয়াকুবের দ্বীন অনুসরণ করি। আল্লাহর সঙ্গে কোনো বস্তুকে শরিক করা আমাদের কাজ নয়। এটা আমাদের এবং সমস্ত মানুষের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ; কিন্তু অধিকাংশ মানুষ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে না।’ (সুরা ইউসুফ : আয়াত ৩৮)

১৬. অধিকাংশ মানুষই সত্য প্রত্যাখ্যান করেছে
وَ لَقَدۡ صَرَّفۡنَا لِلنَّاسِ فِیۡ هٰذَا الۡقُرۡاٰنِ مِنۡ کُلِّ مَثَلٍ ۫ فَاَبٰۤی اَکۡثَرُ النَّاسِ اِلَّا کُفُوۡرًا
‘আর আমি অবশ্যই মানুষের জন্য এই কোরআনে সর্বপ্রকার উপমা বিশদভাবে বর্ণনা করেছি, কিন্তু অধিকাংশ মানুষ সত্য প্রত্যাখ্যান ব্যতীত ক্ষান্ত হল না।’ (সুরা বনি ইসরাইল : আয়াত ৮৯)

১৭. অধিকাংশ মানুষ কোরআনকে বিশ্বাস করে না
الٓـمّٓرٰ ۟ تِلۡکَ اٰیٰتُ الۡکِتٰبِ ؕ وَ الَّذِیۡۤ اُنۡزِلَ اِلَیۡکَ مِنۡ رَّبِّکَ الۡحَقُّ وَ لٰکِنَّ اَکۡثَرَ النَّاسِ لَا یُؤۡمِنُوۡنَ
আলিফ লা-ম মী-ম রা। এগুলো কোরআনের আয়াত; যা তোমার প্রতিপালকের পক্ষ হতে তোমার প্রতি অবতীর্ণ করা হয়েছে তাই সত্য। কিন্তু অধিকাংশ মানুষ এতে বিশ্বাস করে না।’ (সুরা রাদ : আয়াত ১)

১৮. অধিকাংশ মানুষ চিরন্তন সত্য কথাও জানে না
قُلِ اللّٰهُ یُحۡیِیۡکُمۡ ثُمَّ یُمِیۡتُکُمۡ ثُمَّ یَجۡمَعُکُمۡ اِلٰی یَوۡمِ الۡقِیٰمَۃِ لَا رَیۡبَ فِیۡهِ وَ لٰکِنَّ اَکۡثَرَ النَّاسِ لَا یَعۡلَمُوۡنَ
(হে রাসুল! আপনি তাদের উদ্দেশ্যে) বলুন, ‘আল্লাহই তোমাদেরকে জীবন দান করেন এরপর তোমাদের মৃত্যু ঘটান। এরপর তিনি তোমাদেরকে কেয়ামতের দিন একত্রিত করবেন, এতে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু অধিকাংশ মানুষ তা জানে না।’ (সুরা জাসিয়া : আয়াত ২৬)

আল্লাহ তাআলঅ কোরআনুল কারিমের অনেক আয়াতে ‘অধিকাংশ’ শব্দের ব্যবহার করেছেন। যার মূল মর্মার্থ বেশিরভাগ ক্ষেত্রে অকৃতজ্ঞতার দিকেই টেনে নিয়ে যায়।

সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, আল্লাহর অকৃতজ্ঞ না হওয়া। তার প্রতিটি নেয়ামতের শুকরিয়া আদায় করা। কোরআনের আলোকে ব্যক্তি পরিবার সমাজ ও রাষ্ট্র ব্যবস্থায় তা বাস্তবায়নের সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা করা।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে ‘অধিকাংশ অকৃজ্ঞ’ বান্দা হওয়া থেকে হেফাজত থাকার তাওফিক দান করুন। কোরআন-সুন্নাহর আলোকে জীবন গড়ার তাওফিক দান করুন। পরকালের মুক্তি ও সফলতার তাওফিক দান করুন। আমিন।

এমএমএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।