হজ ও ওমরার ইহরামের জন্য নির্ধারিত স্থান
ইহরাম বাঁধার স্থানকে মিকাত বলে। হজ ও ওমরার জন্য নির্ধারিত স্থান অতিক্রম করার পূর্বে ইহরাম বাঁধা ফরজ। সুতরাং নির্দিষ্ট স্থান অতিক্রম করার পূর্বে ইহরাম না বাঁধলে হজ ও ওমরা আদায় হবে না। তাই হজ ও ওমরা পালনকারীদের জন্য নির্দিষ্ট স্থান (মিকাত) থেকেই ফরজ কাজ ইহরাম বাঁধতে হয়। অঞ্চলভেদে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইহরামের জন্য পাঁচটি স্থানকে (মিকাত) নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন। যা তুলে ধরা হলো-
প্রথম মিকাত-
মদিনাবাসী ও মদিনার পথে আগমনকারীদের জন্য মিকাত। এ স্থানের নাম- জুল হুলাইফা। বর্তমানে সর্বসাধারণের মাঝে এ স্থান আবইয়ারে আলি বা বীরে আলি নামে পরিচিত। বাংলাদেশ থেকে যারা আগে মদিনায় যাবে, তাঁরাও হজ ও ওমরা পালনের জন্য মদিনাবাসীদের মিকাত জুলহুলাইফা থেকে ইহরাম বাঁধবেন।
দ্বিতীয় মিকাত-
সিরিয়বাসী ও সে দিক থেকে আগমনকারীদের জন্য ইহরাম বাঁধার স্থান (মিকাত) হলো ‘আলঝুহফা’। সিরিয়াবাসীগণ ছাড়াও যারা এ পথে হজ ও ওমরা আদায় করতে আসবেন, তাদেরও মিকাত এটি। ‘আলঝুহফা’ জায়গাটি ‘রাবাগ’ নামক স্থানের একটি বিরান গ্রাম। যদি কেউ রাবাগে পৌঁছে ইহরাম বাঁধে, তাতেও ইহরাম বাঁধা হয়ে যাবে।
তৃতীয় মিকাত-
‘করনুল মানাযিল’ হলো ইহরাম বাঁধার তৃতীয় স্থান। ইহা নজদবাসী ও সে দিকে থেকে আগতদের জন্য ইহরামের স্থান। এ পথে যারা আসবে তা অতিক্রম করার পূর্বেই ইহরাম বাঁধতে হবে। ইহার বর্তমান নাম ‘আস-সায়েল’।
চতুর্থ মিকাত-
‘ইয়ালামলাম’ হজ ও ওমরা পালনকারীদের চতুর্থ মিকাত। ইহা একটি পর্বতের নাম। যা ইয়ামানবাসী ও ঐ দিক থেকে আগত সকলের জন্য নির্ধারিত। এ মিকাত বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তান থেকে জলযানের হজযাত্রীদের জন্য মিকাত। জলযানে এ স্থান অতিক্রম করার পূর্বেই জাহাজের নাবিকরা হজযাত্রীদের ইহরাম বাঁধার জন্য বলতেন।
পঞ্চম মিকাত-
‘জাতে ইর্ক্ব’ হলো ইরাকবাসী ও সে দিক থেকে আগত সবার জন্য মিকাত।
লক্ষ্যনীয় বিষয় হলো-
উপরোল্লেখিত মিকাতসমূহ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঐ অঞ্চলবাসীর জন্য নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন। ঐ অঞ্চলের লোক ছাড়া যারা অন্যান্য স্থান থেকে হজ ও ওমরার উদ্দেশ্যে এ মিকাতগুলো অতিক্রম করে বাইতুল্লায় আসবে, তাদের জন্যও এগুলো মিকাত।
যারা বিমানযোগে হজ ও ওমরা পালনে বাইতুল্লায় আসবেন, আকাশ পথের মধ্যেই যদি মিকাত পড়ে যায়, সেক্ষেত্রে তারা রওয়ানার পূর্বেই দেশ থেকে ইহরাম বেঁধে রওয়ানা হবেন। কারণ হজ ও ওমরার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলে ইহরাম ব্যতিত মিকাত অতিক্রম করা হরাম।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে প্রত্যেকের জন্য নির্ধারিত মিকাত থেকে ইহরাম বাঁধার অথবা মিকাত অতিক্রম করার পূর্বেই ইহরাম বাঁধার তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/পিআর