রোজা রেখে চোখে ড্রপ দিলে কি রোজার ক্ষতি হবে?

রোজা অবস্থায় চোখে ড্রপ দিলে বা মলমজাতীয় কোনো ওষুধ ব্যবহার করলে রোজা ভাঙবে না বা রোজার কোনো ক্ষতি হবে না। চোখে কোনো প্রসাধনী ব্যবহার করলেও রোজার ক্ষতি হবে না। কারণ এগুলো পানাহারের অন্তর্ভুক্ত নয়। এর দ্বারা পানাহারের উদ্দেশ্যও সাধিত হয় না। চোখে ব্যবহৃত মলম বা ড্রপ সরাসরি পাকস্থলী বা মস্তিস্কেও যায় না।
চোখে মলম বা ড্রপ দেওয়ার পর যদি গলায় তার স্বাদ অনুভূত হয়; তবুও অতি স্বল্প মাত্রায় হওয়ার কারণে তা ধর্তব্য হবে না এবং রোজা ভাঙবে না। শরীরের অন্যান্য অঙ্গের ক্ষতস্থানে ওষুধ লাগালেও রোজার ক্ষতি হয় না।
রোজা রেখে কানে ড্রপ দিলে কি রোজা ভেঙে যাবে?
রোজা অবস্থায় কানে ড্রপ দিলে বা কানে পানি ঢুকলে সাধারণত রোজা ভাঙে না। তবে কারো কানের পর্দা যদি ফাটা থাকে এবং তাতে তেল, পানি বা ওষুধ প্রবেশ করে এবং তা গলায় চলে যায়, তাহলে রোজা ভেঙে যাবে।
রোজা রেখে নাকে ড্রপ ব্যবহার করা যাবে?
নাকে কোনো ড্রপ বা তরল ওষুধ ব্যবহার করলে এটি সরাসরি পাকস্থলীতে পৌঁছে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই রোজা অবস্থায় নাকে ড্রপ ব্যবহার না করাই উচিত। নাকে ড্রপ দেওয়ার পর যদি ওষুধ গলার ভেতরে চলে যায়, তাহলে রোজা ভেঙে যাবে।
যেসব কারণে রোজা ভেঙে যায়
১. কেউ যদি ইচ্ছা করে রমজান মাসের দিনের বেলা যৌনমিলন করে অথবা পানাহার করে, তবে তার রোজা ভেঙে যাবে। কাজা করতে হবে, কাফফারাও দিতে হবে।
২. মেয়েদের মাসিক ও সন্তান প্রসবের পরবর্তী ঋতুস্রাবের সময় রোজা রাখা নিষিদ্ধ। রোজাদার অবস্থায় মাসিক শুরু হলে অথবা সন্তানের জন্ম হলে রোজা ভেঙে যাবে। পরবর্তী সময়ে এই রোজা কাজা করে নিতে হবে।
৩. ইচ্ছা করে বমি করলে রোজা ভেঙে যাবে, বমি মুখে চলে আসর পর ইচ্ছাকৃত তা গিলে ফেললে রোজা ভেঙে যাবে, শুধু কাজা করতে হবে।
৪. রমজান মাসের দিনের বেলা ইসলাম ত্যাগ করলে বা মুরতাদ হয়ে গেলে তার রোজা ভেঙে যাবে। ইসলামে আবার ফিরে আসলে ওই রোজাটি কাজা করে নিতে হবে।
৫. কুলি করার সময় অনিচ্ছায় গলার ভেতর পানি প্রবেশ করলে, রাত অবশিষ্ট আছে মনে করে সুবহে সাদিকের পর পানাহার করলে, ইফতারের সময় হয়েছে ভেবে সূর্যাস্তের আগে ইফতার করলে, রোজা স্মরণ থাকা অবস্থায় অজুতে কুলি বা নাকে পানি দেওয়ার সময় ভেতরে পানি চলে গেলে রোজা ভেঙে যাবে, কাজা করে নিতে হবে।
৬. রোজা থাকার কথা ভুলে গিয়ে কোনো কিছু খেয়ে ফেললে রোজা ভাঙবে না। তবে ভুলবশত খাওয়ার পর রোজা ভেঙে গেছে ভেবে ইচ্ছা করে আরো কিছু খেলে রোজা ভেঙে যাবে।
৬. জিহ্বা দিয়ে দাঁতের ফাঁক থেকে একটি ছোলার সমান বা এর চেয়ে বড় কোনো কিছু বের করে খেয়ে ফেললে রোজা ভেঙে যাবে, পরে কাজা করে নিতে হবে।
৭. প্রস্রাব-পায়খানার রাস্তা দিয়ে ওষুধ বা অন্য কিছু শরীরে প্রবেশ করালে, কান বা নাক দিয়ে ওষুধ প্রবেশ করালে রোজা ভেঙে যাবে, পরবর্তীতে কাজা করে নিতে হবে।
ওএফএফ/জিকেএস