ইতেকাফের সময় প্রয়োজনীয় বেচাকেনা করা যাবে?

ইসলাম ডেস্ক
ইসলাম ডেস্ক ইসলাম ডেস্ক
প্রকাশিত: ১১:০৬ এএম, ২৪ মার্চ ২০২৫
ইতেকাফের সময় অপ্রয়োজনে মসজিদ থেকে বের হওয়া যায় না

ইতেকাফের সময় অপ্রয়োজনীয় দুনিয়াবি কোনো কাজে ব্যস্ত হওয়া মাকরুহে তাহরিমি। অপ্রয়োজনীয় বেচাকেনায় লিপ্ত হওয়ার হুকুমও তাই। তবে জরুরি প্রয়োজনে বেচাকেনা করা যায়। যেমন কারো ঘরে খাবার না থাকলে এবং ইতেকাফকারী ছাড়া কিনে দেওয়ার কেউ না থাকলে খাবার কেনা যাবে। একইভাবে ইতেকাফকারী নিজের খাওয়ার প্রয়োজনেও খাবার কিনতে পারবেন।

ইতেকাফের সময় মসজিদে অবস্থান করে অপ্রয়োজনীয় বেচাকেনায় ব্যস্ত হলে ইতেকাফ ভেঙে যাবে না। কিন্তু অপ্রয়োজনীয় বেচাকেনার জন্য মসজিদ থেকে বের হলে ইতেকাফ ভেঙে যাবে।

বিজ্ঞাপন

ইসলামে ইতেকাফ নিজেকে পরিশুদ্ধ করা ও আল্লাহর কাছাকাছি নিয়ে যাওয়ার উপায়। ইতেকাফের উদ্দেশ্য দুনিয়াবি সব ঝামেলা ও ব্যস্ততা থেকে মুক্ত হয়ে আল্লাহর ঘরে আল্লাহ কাছে অবস্থান করা এবং শুধু তাঁর ধ্যানে নিজের মনকে নিবিষ্ট করা।

ইমাম ইবনুল কাইয়িম (রহ.) বলেন, ইতেকাফের উদ্দেশ্য হলো অন্তরকে সম্পূর্ণরূপে আল্লাহর প্রতি নিবিষ্ট করা এবং শুধু তাঁর দিকে মনোনিবেশ করা। তাঁর সাথে নির্জনে সময় কাটানো। সৃষ্টিকুলের সাথে ব্যস্ততা ত্যাগ করে একমাত্র স্রষ্টা ও মালিকের সাথে ব্যস্ত হওয়া এমনভাবে যেন তাঁর স্মরণ, ভালোবাসা এবং তাঁর দিকে ফিরে আসা অন্তরের মূল চিন্তা ও উদ্বেগের বিষয় হয়। দিন-রাত তাঁর স্মরণে, তাঁর সন্তুষ্টি অর্জন ও তাঁর নিকটবর্তী হওয়ার উপায় নিয়ে ভেবে অতিবাহিত হয়। ইতেকাফের উদ্দেশ্য সৃষ্টির সংস্পর্শের আনন্দের পরিবর্তে আল্লাহ তাআলার সংস্পর্শের আনন্দ লাভ করা। ইতেকাফ আমাদেরকে কবরের নির্জনতায় আল্লাহর সংস্পর্শ লাভের আনন্দের জন্য প্রস্তুত করে, যখন আর কোনো সঙ্গী থাকবে না এবং তারা আনন্দের কারণও হবে না। (যাদুল মাআদ)

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

ইমাম ইবনুল কাইয়িমের (রহ.) এই বক্তব্য থেকে বোঝা যায় ইতেকাফ কেমন হওয়া উচিত। আজকের দিনে অনেকের ইতেকাফ দেখে মনে হয়, ইতেকাফের উদ্দেশ্য শুধু মসজিদকে অবস্থান ও ঘুমানোর জায়গা বানানো। ইতেকাফে মসজিদে বসেই অপ্রয়োজনীয় বেচাকেনা, ব্যবসার কাজ, গল্পগুজব, হাসি-ঠাট্টা, অনর্থক কথাবার্তা ইত্যাদি চলতে থাকে। এমন কি গিবত, অপবাদ ইত্যাদির মতো গর্হিত গুনাহও ইতেকাফের সময় হয়ে যায়।

রমজানের শেষ দশ দিনের সুন্নত ইতেকাফে যারা বসেছেন, তাদের উচিত এসব বিষয়ে সচেতন ও সাবধান থাকা।

ইতেকাফে প্রয়োজন পরিমাণ দুনিয়াবি কাজ তো করতে হবে যেমন খাওয়া, ঘুমানো, প্রাকৃতিক প্রয়োজন পূরণ করা ইত্যাদি। এর বাইরে ইতেকাফকারীর প্রতিটি মুহূর্তই আল্লাহর স্মরণ ও ইবাদতে অতিবাহিত হওয়া উচিত। অন্তরকে দুনিয়া থেকে পুরোপুরি বিযুক্ত করে আল্লাহর সাথে যুক্ত করা উচিত।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

নবিজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ইতিকাফের সময় মসজিদে একটি তাঁবু স্থাপন করার নির্দেশ দিতেন। ইদের দিন পর্যন্ত তিনি সেখানেই অবস্থান করতেন এবং মানুষের সংস্পর্শ থেকে নিজেকে দূরে রাখতেন। নির্জনে শুধু আল্লাহ তাআলার স্মরণ ও ইবাদতে মগ্ন থাকতেন।

ওএফএফ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন jagofeature@gmail.com ঠিকানায়।