নামাজ প্রশান্তির মাধ্যম

মাহমুদ আহমদ
মাহমুদ আহমদ মাহমুদ আহমদ , ইসলামি গবেষক ও কলামিস্ট
প্রকাশিত: ১১:৪৬ এএম, ২৬ জুন ২০২১

নামাজ এমন একটি ইবাদত, যা করলে একজন প্রকৃত মুমিন অন্তরে প্রশান্তি পায়। কোনো মুমিন নামাজ ছাড়া থাকতে পারে না। মাছ যেমন পানি ছাড়া থাকতে পারে না, তেমনি এক মুমিন নামাজ ছাড়া থাকতে পারে না।

যুগে যুগে আগত নবি-রাসুলগণ আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন এবং সৃষ্টিকর্তার ইবাদত করার কথা মানুষদের শিক্ষা দিয়েছেন। ইবাদতসমূহের মধ্যে নামাজ হলো সর্বশ্রেষ্ঠ ইবাদত। নামাজের ব্যাপারে আল্লাহ তাআলা পবিত্র কুরআনে ইরশাদ করেছেন-
‘তোমরা নামাজ কায়েম কর।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ৪৩) নামাজের বিধিবদ্ধ সব শর্ত পূর্ণভাবে পালন করেই নামাজ প্রতিষ্ঠা কর।

আল্লাহ তাআলার সঙ্গে মানুষের অভ্যন্তরীণ সম্পর্কের বহিঃপ্রকাশের নাম ইবাদত। আল্লাহর অনুগ্রহ মানুষের দেহ-মন ও আত্মাকে ঘিরে রেখেছে। অতএব পরিপূর্ণ ইবাদত তা-ই, যার মাঝে দেহ ও আত্মা সমভাবে অংশগ্রহণ করে। উভয়ের অংশগ্রহণ ছাড়া ইবাদতের চেতনা ও সারবস্তু সুরক্ষিত থাকতে পারে না। কেননা যদিও হৃদয়ের নিবেদনই মূল বিষয় এবং শারীরিক ইবাদত বা উপাসনা খোলসমাত্র; তারপরও খোলস বা আবরণ ছাড়া সার বস্তু সংরক্ষিত হতে পরে না। খোলস নষ্ট হলে সারবস্তুও নষ্ট হয়ে যায়।

নামাজ প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে পবিত্র কুরআনের বিভিন্ন স্থানে বার বার নির্দেশনা এসেছে। এছাড়া মানব সৃষ্টির মূল উদ্দেশ্যই হলো আল্লাহ পাকের ইবাদত করা। সুরা ইবরাহিমে আল্লাহ তাআলা মানব সৃষ্টির উদ্দেশ্য এভাবে ঘোষণা করেন-
‘আমার বান্দাদের বল, ‘যারা ঈমান এনেছে তারা যেন নামাজ প্রতিষ্ঠা করে এবং আমি তাদের যে রিজিক দিয়েছি তা থেকে গোপন ও প্রকাশ্য ব্যয় করে, ঐ দিন আসার আগে; যে দিন কোনো বেচা-কেনা থাকবে না এবং থাকবে না বন্ধুত্বও।’ (সুরা ইবরাহিম : আয়াত ৩১)

একটি কথা মনে রাখতে হবে
একা একা কখনও নামাজ প্রতিষ্ঠা করা যায় না। সম্মিলিতভাবে মসজিদে জামাআতে অংশগ্রহণের মাধ্যমেই নামাজ কায়েম বা প্রতিষ্ঠা করতে হয়।

যদি বিশেষ কোনো কারণে মসজিদে গিয়ে জামাআতে নামাজ আদায় করা সম্ভব না হয়; তবে ঘরে পরিবারের সবাই মিলে জামাআকে নামাজের ব্যবস্থা করতে হবে।

বর্তমান করোনা পরিস্থিতির কারণে ঘরের সবাইকে সঙ্গে নিয়ে আমরা জামাআতে নামাজ আদায় করব। পুরো পরিবার মিলে আমরা যখন জামাআতে নামাজ আদায় করব; তখন দেখবেন ঘরেই ভিন্ন রকম এক প্রশান্তি বিরাজ করছে।

প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ। প্রতি ওয়াক্তের নামাজ নির্ধারিত সময়ে আদায় করা সবচেয়ে উত্তম কাজ। এ সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন-
‘নিশ্চয়ই নির্ধারিত সময়ে নামাজ (আদায় করা) মুমিনদের জন্য অবশ্যক কর্তব্য।’ (সুরা নিসা : আয়াত ১০৩)

যদি কোনো কারণে নির্দিষ্ট সময়ে নামাজ আদায় করা সম্ভব না হয় তবে পরে অবশ্যই আদায় করতে হবে। কেননা নামাজ কোনো অবস্থাতেই মাফ নেই। এমনকি নামাজের কোনো কাফফারাও নেই, যার মাধ্যমে নামাজের কমতি পূর্ণ হতে পারে।

সুতরাং প্রত্যেক নামাজিকে তার নামাজ সম্পর্কে সতর্ক থাকতে হবে, যেন কোনো নামাজ ছুটে না যায়। আর মুমিনরাই সব সময় নামাজ প্রতিষ্ঠা করে থাকে। এ কারণেই যথা সময়ে নামাজ আদায় না হলে তার মাঝে অস্থিরতা বিরাজ করে। মনে হয়, কি যেন তার বাদ পড়ে গেছে।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে নির্ধারিত নামাজ পড়ার এবং সমাজে তা প্রতিষ্ঠা করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

এমএমএস/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।