যানবাহনে চলাচলের তাসবিহ ও দোয়া পড়ার নিয়ম

ধর্ম ডেস্ক
ধর্ম ডেস্ক ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৩:৩৩ পিএম, ১১ জুন ২০২১

যানবাহনে চলাচলের সময় রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কিছু তাসবিহ ও একাধিক দোয়া পড়তেন। আবার এ দোয়া ও তাসবিহগুলো পড়ার সুনির্দিষ্ট নিয়ম ও ধারাবাহিকতা ছিল। যা হাদিসে কুদসিতে সুস্পষ্টভাবে তুলে ধরেছেন খলিফাতুল মুসলিমিন হজরত আলি রাদিয়াল্লাহু আনহু। যানবাহনের চলাচলের এ তাসবিহ ও দোয়াগুলো কী? কীভাবেই বা এ দোয়াগুলো পড়তে হয়?

হাদিসে কুদসিতে যানবাহনে চলাচলের নিয়ম, তাসবিহ, দোয়া এবং করণীয় সুস্পষ্টভাবে বর্ণিত হয়েছে। হজরত আলি ইবনে রাবিয়াহ রাদিয়াল্লাহু আনহু প্রিয় নবির শেখানো নিয়ম, তাসবিহ, দোয়া এবং ধারাবাহিক করণীয়গুলো হাদিসে কুদসিতে হুবহু তুলে ধরেছেন-
তিনি বলেন, ‘আমি হজরত আলি রাদিয়াল্লাহু আনহুকে দেখেছি, একটি চতুষ্পদ জন্তু আনা হল; যেন তিনি তাতে আরোহণ করেন। তিনি যখন-
১. (শুরুতেই) তাঁর (চতুষ্পদ জন্তুর) ওপর নিজের পা রাখলেন (তখন) বললেন-
بِسْمِ اللَّهِ - বিসমিল্লাহ বা আল্লাহর নামে (শুরু করছি);

২. যখন তার বাহনে (সিটে বা আসনে) স্থির হয়ে বসলেন (তখন) বললেন-
الْحَمْدُ لِلَّهِ - আলহামদুলিল্লাহ বা সব প্রশংসা আল্লাহ জন্য;

৩. অতঃপর (এ দোয়া পড়লেন) বললেন-
سُبۡحَٰنَ ٱلَّذِي سَخَّرَ لَنَا هَٰذَا وَمَا كُنَّا لَهُۥ مُقۡرِنِينَ
উচ্চারণ : ‘সুবহানাল্লাজি সাখ্‌খারা লানা হাজা ওয়া মা কুন্না লাহু মুক্বরিনিন।’
অর্থ : ‘পবিত্র সেই মহান সত্তা! যিনি এগুলোকে (সব যানবাহন) ‎আমাদের বশীভূত (নিয়ন্ত্রণাধীন) করে দিয়েছেন। আর ‎আমরা এগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম ‎ছিলাম না।’ (সুরা যুখরুফ : আয়াত ১৩)

৪. অতঃপর তিনবার বললেন-
الْحَمْدُ لِلَّهِ আল-হামদুলিল্লাহি; সব প্রশংসা আল্লাহর জন্য।

৫. অতঃপর তিনবার বললেন-
اللَّهُ أَكْبَر : আল্লাহু আকবার; আল্লাহ মহান।

৬. তারপর (এ দোয়া) বললেন-
سُبْحَانَكَ إِنِّي ظَلَمْتُ نَفْسِي فَاغْفِرْ لِي فَإِنَّهُ لَا يَغْفِرُ الذُّنُوبَ إِلَّا أَنْتَ
উচ্চারণ : ‘সুবহানাকা ইন্নি জালামতু নাফসি ফাগফিরলি ফাইন্নাহু লা ইয়াগফিরুজ জুনুবা ইল্লা আংতা।’
অর্থ : ‘আপনি কতই-না পবিত্র সত্তা! নিশ্চয়ই আমি আমার নিজের নফসের উপর জুলুম করেছি; সুতরাং আমাকে ক্ষমা করুন। নিশ্চয়ই আপনি ছাড়া কেউ গোনাহ ক্ষমা করতে পারবে না।’

৭. অতঃপর (তিনি; হজরত আলি রাদিয়াল্লাহু আনহু) হাসলেন। বলা হল (জানতে চাওয়া হল)- ‘হে আমিরুল মুমিনিন! (আপনি) কি জন্য হাসলেন?

তিনি বললেন- আমি নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে দেখেছি। তিনি যেরূপ করেছেন; আমিও তদানুরুপ করেছি; অতঃপর (দোয়া ও তাসবিহগুলোর পড়ার পর) তিনি হেসেছেন। আমি বললাম- ‘হে আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! কি জন্য হাসলেন? তিনি বললেন-
‘তোমার রব তার (ওইসব) বান্দাকে দেখে আশ্চর্য হন! যখন সে বলে আমার পাপ ক্ষমা করুন, সে (তাও) জানে, আমি ছাড়া আর কেউ পাপ ক্ষমা করবে না।’ (আবু দাউদ, তিরমিজি, মুসনাদে আহমদ, বুলুগুল মারাম)

সুতরাং সুন্নাতের অনুসরণে যানবাহনের চলাচলের সময় উল্লেখিত নিয়মে ধারাবাহিকভাবে তাসবিহ ও দোয়াগুলো যথাযথভাবে পড়ায় রয়েছে কল্যাণ ও বরকত। এতে রয়েছে মহান রবের কৃতজ্ঞতা। নিরাপত্তা ও সুস্থ থাকার উপায়। গোনাহমুক্ত সুস্থ জীবন পাওয়ার হাতছানি।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহর সবাইকে হাদিসের অনুসরণ ও অনুকরণে যথাযথ আমল করার তাওফিক দান করুন। চলার পথে যানবাহনের অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা ও বিপদ-আপদ থেকে বেঁচে থাকার তাওফিক দান করুন। আমিন।

এমএমএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।