মানুষের মুক্তি ও শান্তির সঠিক পথ কোনটি?
পবিত্র নগরী মক্কার উঁচু পাহাড় ‘জাবালে আবি কুবাইস। এ পাহাড়ের চূড়ায় শান্তি ও নিরাপত্তার প্রতীক ‘সাদা পতাকা’ উড়িয়ে শান্তি ও মুক্তির ডাক দেন বিশ্বনবি। ঘটনাটি আজ থেকে প্রায় দেড় হাজার বছর আগের। জাবালে কুবাইসের চুড়ায় দাঁড়িয়ে তিনি শান্তি ও মুক্তির বাণী ঘোষণা করেন-
‘হে মানবজাতি! আল্লাহ তাআলাই তোমাদের একমাত্র উপাস্য। তিনি ছাড়া তোমাদের কোনো উপাস্য নেই। আমি তোমাদের এক অজানা বিষয় সম্পর্কে জানাতে আল্লাহর পক্ষ থেকে রাসুল হিসেবে এসেছি। তাহলো- আল্লাহ এক। একত্ববাদই শান্তি ও মুক্তির একমাত্র মূলমন্ত্র।’
দুনিয়াতে যারাই আল্লাহর একত্ববাদের মূলমন্ত্র ছেড়ে অন্য কোনো মতবাদকে জীবন ব্যবস্থা হিসেবে গ্রহণ করবে তারাই হবে ব্যর্থ। তাদের দুনিয়া ও পরকাল হবে ধ্বংস। হাদিসে পাকে এসেছে-
‘রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মানুষের শান্তি ও মুক্তির আহ্বান জানিয়ে ঘোষণা করেন- ‘হে মানবমণ্ডলী! তোমরা ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ (আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ নেই) বল; তাহলেই তোমরা সফলকাম হবে।’ (বুখারি ও মুসলিম)
কেননা মহান আল্লাহ তাআলা কুরআনুল কারিমে শান্তি ও মুক্তির একমাত্র জীবন ব্যবস্থার ঘোষণা দিয়েছেন এভাবে-
‘নিশ্চয়ই আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য একমাত্র জীবন ব্যবস্থা হলো ইসলাম।’ (সুরা আল-ইমরান : আয়াত ১৯)
কল্পনা প্রসূত মানব রচিত কোনো জীবন ব্যবস্থায় শান্তি এবং মুক্তির গ্যারান্টি নেই। ইসলামি জীবন ব্যবস্থায় মুক্তির যে গ্যারান্টি দিয়েছেন স্বয়ং আল্লাহ ও তার রাসুল।
বিশ্বনবির সতর্কতা
তারপরও বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহুআলাইহি ওয়া সাল্লাম উম্মতে মুহাম্মাদিকে সতর্ক করেছেন। কেননা ইসলামের নামে মানুষ বহু পথ ও মতে বিভক্ত। অথচ মুক্তিপ্রাপ্ত দল হবে একটি। প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ঘোষণায় মুক্তি পাবে তারাই যারা আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাআত। হাদিসে এসেছে-
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘আমার উম্মত হবে ৭৩ দলে বিভক্ত। একটি দল ছাড়া সবাই হবে জাহান্নামি। সাহাবায়ে কেরাম জিজ্ঞাসা করলেন- সেই দলটি কারা?
নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন- যারা আমার ও আমার সাহাবাদের মত ও পথ অনুসরণ করবে।’ (তিরমিজি)
সুতরাং এ হাদিস থেকে বুঝা গেল, শুধু ইসলামের নামে কুরআন-সুন্নাহ ও সাহাবায়ে কেরামের দেখানা পথ ও মত বাদ দিয়ে মনগড়া পথে চলায় মুক্তি মেলবে না। শান্তি ও মুক্তির একমাত্র পথ- আহলুস সুন্নাত ওয়াল জামাআত।
মুমিন মুসলমানের উচিত, শান্তি ও মুক্তির লক্ষ্যে কুরআন-সুন্নাহর দেখানো পথে নিজেদের পরিচালনা করা। মনগড়া মতবাদে বিশ্বাস স্থাপন ও জীবন পরিচালনা থেকে বেঁচে থাকা। তাওহিদের কালেমা ও বিশ্বনবির রেসালাতে মূলমন্ত্র- ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ’য় পরিপূর্ণ বিশ্বাস স্থাপন করা। দুনিয়ার যাবতীয় শিরক এবং বিদাআত থেকে মুক্ত থাকা।
আল্লাহ তাআলা উম্মতে মুহাম্মাদির সবাইকে ভ্রান্তপথ ও মত থেকে ফিরে এসে- ‘আহলুস সুন্নাত ওয়াল জামাআত’-এর শান্তি ও মুক্তির পতাকা তলে অবস্থান করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/এএসএম