সৌদিতে আবারও মসজিদে দাওয়াতি কাজ স্থগিত, নামাজে কড়াকড়ি!

ধর্ম ডেস্ক
ধর্ম ডেস্ক ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ০১:২৫ পিএম, ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১

মহামারি করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ধাপের প্রাদুর্ভাবের কারণে আবারও মসজিদে নামাজের ব্যাপারে কড়াকরি আরোপ করেছে সৌদি আরব। নামাজের নির্ধারিত সময়ের একটু আগে আজানের পর খোলা হবে মসজিদের দরজা। নামাজের ১০ মিনিট পর তা আবার বন্ধ করে দেয়া হবে। স্থগিত করা হয়েছে রাষ্ট্র পরিচালিত মসজিদভিত্তিক দাওয়াতি কার্যক্রমসহ বড় বড় সব গণজমায়েতের অনুষ্ঠান। খবর আলআরাবিয়া ডটনেট।

বিভিন্ন গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, সৌদি আরবের ইসলামিক দাওয়াহ ও দিকনির্দেশনা বিষয়ক মন্ত্রী ড. আবদুল লতিফ বিন আব্দুল আজিজ আল-শেখ করোনার কারণ দেখিয়ে সরকারী মিশনের সহযোগিতায় মসজিদসমূহে সব দাওয়াতি কার্যক্রম স্থগিত করেছেন। পাশাপাশি সব দাওয়াতি কার্যক্রম অনলাইনে চালানোর আদেশ দিয়েছেন।

মসজিদে নামাজের সময় এবং নামাজের তা খোলা ও বন্ধ করার ক্ষেত্রেও বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। মসজিদে আজান দেয়ার ১০ মিনিটের মধ্যে জামাআত শুরু করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। যাতে আজান ও জামাআতের মধ্যে ১০ মিনিটের বেশি বিরতি না হয়। তবে ফজরের নামাজের জন্য আজান ও জামাআতের মধ্যবর্তী সময়ের বিরতি হবে বিশ মিনিট।

নামাজের ব্যাপারে সরকারি নির্দেশনায় বলা হয়েছে- মসজিদসমূহ আজানের পর খোলা হয় এবং নামাজের ১০ মিনিট পর বন্ধ করে দেয়া হয়।

জুমআর নামাজের ক্ষেত্রে জামে মসজিদগুলো আজানের ৩০ মিনিট আগে খোলা হবে। আর নামাজের ১০ মিনিট পর বন্ধ দেয়া হবে। আগের মতো জুমআর খুতবাহ ও জামাআত ১৫ মিনিটের বেশি হতে পারবে না। এ মর্মে সব খতিবকে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।

সব মসজিদের ভেতরের স্থান, অজুখানা, টয়লেট জীবাণূমুক্ত রাখতে যথাযথ নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন ও স্বেচ্ছাসেবকদের প্রতি সরকার আরোপিত বিধিনিষেধ মেনে চলার উপর জোর দিতে বলা হয়েছে।

১০ দিনের জন্য আরও যেসব কার্যক্রম স্থগিত
মহামারি করোনার ব্যাপক বিস্তার রোধে মসজিদে দাওয়াতি কার্যক্রম স্থগিত করাসহ আগামী ১০ দিন সৌদিতে যেসব কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে; তাহলো-
> বিবাহ অনুষ্ঠান, কর্পোরেট সভা এবং এর মতো সমস্ত অনুষ্ঠান, বনভোজন অনুষ্ঠান নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তবে এসবের জন্য নিষেধাজ্ঞা ১০ দিন থেকে বেড়ে পরবর্তীতে ৩০ দিন হতে পারে।
> অন্য সামাজিক অনুষ্ঠানে যেগুলোতে জনসমাগম হয় সেগুলোও আগামী ১০ দিনের জন্য নিষিদ্ধ।
> আগামী ১০ দিনের জন্য সমস্ত বিনোদনমূলক অনুষ্ঠান এবং ইভেন্টগুলির স্থগিতাদেশ দেয়া হয়েছে এবং এই স্থগিতাদেশ পরবর্তীতে বাড়ানো হতে পারে।
> আগামী ৩০ দিনের জন্য সিনেমা হল, অভ্যন্তরীণ বিনোদন কেন্দ্র, স্বতন্ত্র অভ্যন্তরীণ গেমের (ইনডোর গেম) জায়গা বা রেস্তোরাঁ, শপিংমল, জিম এবং স্পোর্টস সেন্টারে জনসমাগম বন্ধ করা হয়েছে। এসবের ক্ষেত্রেও স্থগিতাদেশ পরবর্তীতে বাড়তে পারে।
> রেস্তোরাঁ, ক্যাফে এবং এই জাতীয় খাওয়ার জায়গাগুলোতে ডাইনিং পরিষেবাদি বা সেখানে বসে খাওয়া আগামী ১০ দিনের জন্য স্থগিত করা হয়েছে। যা পরবর্তীতে আরও বাড়তে পারে। ক্যাফেতে বসে খাওয়া যাবে না। তবে এদের পার্সেল বা হোম ডেলিভারি সেবা চালু থাকবে স্বাভাবিক সময়ের মতো।

এমনকি জনসমাগম হ্রাস করতে জানাজার নামাজ ও দাফন দিনের নির্দিষ্ট এক সময়ে না করে বিভিন্ন সময়ে আদায় করতে হবে। সামাজিক দূরত্ব মেনে চলতে হবে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

উল্লেখ্য, গত ২ ফেব্রুয়ারি (মঙ্গলবার) সৌদি আরব করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে ২০টি দেশের নাগরিকদের সৌদিতে প্রবেশ স্থগিত ঘোষণা করে। অর্থাৎ সৌদি নাগরিক ছাড়া ২০টি দেশ থেকে আসা সব মানুষ, ডিপ্লোম্যাট, স্বাস্থ্যকর্মী, এবং তাদের পরিবারের সৌদি আরবে প্রবেশে সাময়িক নিষেধাজ্ঞা জারি করে সৌদি সরকার।

এসব দেশের তালিকায় রয়েছে- আর্জেন্টিনা, সংযুক্ত আরব আমিরাত, জার্মানি, যুক্তরাষ্ট্র, ইন্দোনেশিয়া, আয়ারল্যান্ড, ইতালি, পাকিস্তান, ব্রাজিল, পর্তুগাল, যুক্তরাজ্য, তুরস্ক, দক্ষিণ আফ্রিকা, সুইডেন, সুইজারল্যান্ড, ফ্রান্স, লেবানন, মিশর, ভারত এবং জাপান । তবে ২০টি দেশের মধ্যে নিষেধাজ্ঞার বাইরে রয়েছে বাংলাদেশ।

এমএমএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।