জুমআর দিন মসজিদে বসার আদব ও পুরস্কার

ধর্ম ডেস্ক
ধর্ম ডেস্ক ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৮:৪৪ এএম, ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১

জুমআর দিন মসজিদে আসা খুতবা শোনা ও নামাজ পড়া মুমিন মুসলমানের সাপ্তাহিক ইবাদত। এ দিন নামাজ পড়তে মসজিদে যেতে হয়। তবে মসজিদে গিয়ে বসার ক্ষেত্রে কিছু আদব ও নিয়ম রয়েছে। এ সম্পর্কে হাদিসের সুস্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে।

জমআর দিন আগে আগে মসজিদে গিয়ে প্রথম কাতারে বসার ব্যাপারে নির্দেশনা দিয়েছেন প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। এরপর যারা যখন যাবে, পর্যায়ক্রমে তাদের সাওয়াব ও মর্যাদা দেয়া হবে মর্মে হাদিসের নির্দেশনা এসেছে।

তবে প্রথম কাতারে বসার ক্ষেত্রে কাউকে ডিঙিয়ে বা কারো কাঁধ ও মাথার উপর দিয়ে লাফিয়ে সামনে যাওয়ার ব্যাপারে রয়েছে বিধিনিষেধ। এক্ষেত্রে করণীয়-
‌জুমআর নামাজ জামে মসজিদে পড়া। মসজিদে গিয়ে যেখানে জায়গা পাওয়া যাবে সেখানেই বসা। করো মাথা ও কাঁধের উপর দিয়ে লাফিয়ে সামনে যেতে চেষ্ট না করা। এর দ্বারা মানুষের শারীরিক কষ্ট ও মানসিক দুঃখ অনুভব হয় এবং তাদের নীরবতা, একাগ্রতা ও মনোযোগের ব্যঘাত ঘটে।

জুমআর দিন দুই ব্যক্তির মাঝে ফাঁক করে সামনে যাওয়ার ব্যাপারে প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উৎসাহিত করেননি। হাদিসে এসেছে-
হজরত সালমান ফারসি রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন আল্লাহ্‌র রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি জুমআর দিন গোসল করে এবং যথাসম্ভব উত্তমরূপে পবিত্রতা অর্জন করে, তারপর তেল মেখে নেয় অথবা সুগন্ধি ব্যবহার করে, এরপর (মসজিদে) যায়, আর দু’জনের মধ্যে ফাঁক করে না (যেখানে জায়গা পায় সেখানেই অবস্থান করে) এবং তার ভাগ্যে নির্ধারিত পরিমাণ সালাত আদায় করে। আর ইমাম যখন (খুতবার জন্য) বের হন তখন চুপ থাকে। তার এ জুমআ এবং পরবর্তী জুমআর মধ্যবর্তী সব গোনাহ ক্ষমা করে দেয়া হয়।’ (বুখারি)

তবে কোনো মুসলমানের সুবিধার্থে কিংবা আদব-শৃঙ্ক্ষলা রক্ষায় সামনের কাতার থেকে পেছনের কাতারে অর্থাৎ প্রথম কাতার থেকে দ্বিতীয় কাতারে আসার ব্যাপারে হাদিসে বরকতের ঘোষণা এসেছে-
হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি এক মুসলমান ভাইয়ের সুবিধার্থে প্রথম কাতার ছেড়ে দ্বিতীয় সারিতে আসে, আল্লাহ তাআলা তাকে প্রথক সারির দ্বিগুণ পুরস্কার ও সাওয়াব দান করবেন।’ (তিবরানি)

হজরত ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিষেধ করেছেন, যেন কেউ তার ভাইকে স্বীয় বসার স্থান হতে উঠিয়ে দিয়ে নিজে সে জায়গায় না বসে। ইবনু জুরাইজ রাহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, আমি নাফি রাহমাতুল্লাহি আলাইহিকে জিজ্ঞাসা করলাম, এ কি শুধু জুমআর ব্যাপারে? তিনি বললেন, জুমুআ ও অন্যান্য (নামাজের) ব্যাপারেও।’ (বুখারি)

সুতরাং উল্লেখিত হাদিসের আলোকে এ বিষয়গুলো প্রমাণিত যে, মসজিদে গিয়ে যেখানে জায়গা পাওয়া যাবে সেখানেই অবস্থান গ্রহণ করা। সেখানে বসেই মসজিদের পরিবেশ বজায় রাখা। আর মসজিদের আদব রক্ষার্থে প্রথম সারি থেকে পেছনে আসার প্রয়োজন হলে কারও মনো নষ্ট না করে দ্বিতীয় সারিতে চলে আসা।

তবে বিনা প্রয়োজনে কাউকে একদিকে সরিয়ে তার মাথা ও কাঁধের উপর দিয়ে লাফিয়ে সামনে না যাওয়াই উত্তম ও আদব। যেখানে জায়গা খালি পাওয়া যাবে সেখানেই বসে পড়া।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে জুমআর দিন মসিজদে বসার আদব মেনে চলার তাওফিক দান করুন। ইসলামের সৌন্দর্য প্রকাশে হাদিসের নির্দেশনা যথাযথ পালন করার তাওফিক দান করুন। ‍জুমআর দিনের আজিমাত ও ফজিলত পাওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।

এমএমএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।