জুমআর নামাজের তাৎপর্যপূর্ণ ফজিলত

ধর্ম ডেস্ক
ধর্ম ডেস্ক ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ১০:১২ এএম, ১৮ ডিসেম্বর ২০২০

জুমআর দিনকে মুমিন মুসলমানের সপ্তাহিক ঈদের দিন বলা হয়ে থাকে। কারণ এ দিনটি তাদের সপ্তাহিক ইবাদতে দিন হিসেবে সাব্যস্ত। এ দিন ও জুমআর নামাজের রয়েছে তাৎপর্যপূর্ণ ফজিলত। হাদিসের বর্ণনায় তা উঠে এসেছে।

মানুষ সামাজিক জীব। সমাজবদ্ধ জীবনে মুমিন মুসলমান জুমআ আদায়ের উদ্দেশ্যে মসজিদে সমবেত হয়। উপলক্ষ হচ্ছে এ জুমআর নামাজ। এ সূত্র থেকেই এ দিনটিকে মুমিন মুসলমানের সপ্তাহিক ঈদের দিন বলা হয়। প্রত্যেক সমাজের মানুষ এ দিন মসজিদে সমবেত হয়ে ধনী-গরিব, উঁচু-নিচু সবাই এক কাতারে শামিল হয়ে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে নামাজ আদায় করে থাকে। সবার সঙ্গে ভ্রাতৃত্ব ও সম্প্রীতি গড়ে ওঠার সেতুবন্ধনও জুমআর নামাজ।

হাদিসে পাকে জুমআর যেসব ফজিলত ওঠে এসেছে; তাহলো-
- যে ব্যক্তি জুমআর দিন গোসল করে মসজিদে যাবে, যথারীতি সুন্নাত এবং নফল নামাজ আদায় করবে, মনোযোগের সঙ্গে খুতবা শুনবে এবং ইমামের সঙ্গে জুমআর নামাজ আদায় করবে, আল্লাহ তাআলা তার সে জুমআ থেকে পরবর্তী জুমআ এবং পরবর্তী আরও তিন দিনের গোনাহ ক্ষমা করেদেবেন।
- যারা জুমআর নামাজ আদায়ের উদ্দেশ্যে হেঁটে মসজিদে যায়, তাদের প্রত্যেক কদমের জন্য এক বছরের নফল রোজা রাখার সাওয়াব দেয়া হয়।
- যে ব্যক্তি বিনা কারণে জুমআর নামাজ আদায় থেকে বিরত থাকে, তার নাম মুনাফিকের খাতায় লেখা হয়ে যায়।
- যে ব্যক্তি অলসতাবশতঃ পরপর তিন জুমআ পরিহার করে, আল্লাহ তার উপর খুবই অসন্তুষ্ট হন এবং তার অন্তরে মোহর মেরে দেন।
- যে ব্যক্তি জুমআর দিন মারা যাবে, তার কবর আজাব ক্ষমা করে দেয়া হয় এবং সে একজন শহিদের মর্যাদা লাভ করে।
- জুমআর নামাজ সহায়-সম্বলহীনদের জন্য হজের সমতুল্য।
- জুমআর দিন ও রাত নূরে পরিপূর্ণ থাকে।
- জুমআর দিন কে খন মসজিদে আসেন, ফেরেশতারা তা লিখে রাখেন। সবার আগে যিনি মসজিদ আসেন তিনি একটি উট সাদকার সাওয়াব পান। এভাবে তারপর যিনি আসেন, তিনি গরু সাদকা করার সাওয়াব পান। তারপর পর্যায়ক্রমে যারা আসেন, তারা বকরি, মুরগি এবং এমনকি ডিম সাদকা করার সাওয়াব পেয়ে থাকেন। যখনই ইমাম খুতবা শুরু করেন তখন ফেরেশতারা সাওয়াব লেখা বন্ধ করে খুতবা শুনতে থাকেন।

জুমআর দিন সপ্তাহের সবচেয়ে শ্রেষ্ঠতম দিন। কারণ, মুসলমানদের জন্য এ দিনে জুমআর নামাজ পড়ায় অশেষ কল্যাণের ঘোষণা দিয়েছেন স্বয়ং আল্লাহ তাআলা। এর মধ্যে লুকায়িত আছে সাত্যিকারের কল্যাণ এবং দুনিয়া ও আখেরাতের অনাবিল শান্তি। এ কারণেই আল্লাহ তাআলা জুমআর নির্দেশ দিয়ে কল্যাণের কথা তুলে ধরে বলেন-
‘হে মুমিনগণ! জুমআর দিনে যখন নামাজের আজান দেয়া হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণে দ্রুত (মসজিদে) ধাবিত হও এবং বেচাকেনা বন্ধ কর। এটা তোমাদের জন্যে উত্তম যদি তোমরা বুঝ। অতপর নামাজ সমাপ্ত হলে তোমরা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড় এবং আল্লাহর অনুগ্রহ তালাশ কর ও আল্লাহকে অধিক স্মরণ কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও।’ (সুরা জুমআ : আয়াত ৯-১০)

এক দিকে আল্লাহর নির্দেশ পালন অন্য দিকে হাদিসে ঘোষিত অসামান্য ফজিলত এবং সামাজিক সম্প্রীতির অন্যতম মাধ্যম ভ্রাতৃত্ববোধও প্রতিষ্ঠা হয় এ জুমআর নামাজে।

সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, জুমআর দিন সব কর্ম ব্যস্ততা ছেড়ে আজানের সঙ্গে সঙ্গে মসজিদে উপস্থিত হওয়ার মাধ্যমে উল্লেখিত ফজিলত ও কল্যাণ লাভে এগিয়ে আসা।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে দুনিয়া ও পরকালের যাবতীয় কল্যাণ লাভে যথাযথভাবে জুমআর নামাজ আদায় করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

এমএমএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।