মক্কা-মদিনার ইমামদের কণ্ঠে শিখুন ‘সুরা ইখলাস’
কুরআনুল কারিমের তেলাওয়াত দুনিয়ার সেরা সুর। মানুষ মাত্রই কুরআনের সুরে বিমোহিত হয়। তা যদি হয় পবিত্র কাবা শরিফ ও মদিনার মসজিদে নববির ইমামদের সুললিত ও আবেগঘন কণ্ঠে; তবে তা কেমন হয়?
কুরআনুল কারিমের সর্বশেষ তথা ১১২তম সুরা- ‘সুরা ইখলাস’র সুন্দর ও সুস্পষ্ট তেলাওয়াত শুনে তা শিখতে পারেন যে কেউ। কাবা শরিফ ও মদিনার মসজিদে নববির ইমামদের কণ্ঠের তেলাওয়াত মুমিন মুসলমানের হৃদয়ে কুরআনের অন্যরকম ভালোবাসা ও অনুভূতি গড়ে তোলে।
>> শায়খ সুদাইসি
দুই পবিত্র মসজিদের প্রধান ইমাম ও খতিব শায়খ ড. আব্দুর রহমান ইবনে আব্দুল আজিজ আল-সুদাইস। ১০ ফেব্রুয়ারি ১৯৬০ সালে সৌদি আরবের রিয়াদে জন্ম নেয়া এ ইমাম ১৯৮৪ সাল থেকে শুরু করে এখনও পবিত্র নগরী মক্কার মসজিদে হারামে ইমামতির দায়িত্ব পালন করে আসছেন। তার কুরআনের তেলাওয়াতে সারা দুনিয়া মাতোয়ারা। তারই কণ্ঠে সুরা ইখলাসের তেলাওয়াত শুনে শিখতে পারেন যে কেউ।
>> শায়খ জুহানি
সুকণ্ঠের অধিকারী কাবা শরিফের ইমাম ও খতিব শায়খ ড. আব্দুল্লাহ আওয়াদ আল-জুহানি। পবিত্র নগরী মদিনায় ১৩ জানুয়ারি ১৯৭৬ সালে জন্ম নেন তিনি। ২০০৫ সালে রমজানের তারাবিহ নামাজ পড়ানোর মাধ্যমে তিনি কাবা শরিফে ইমামতি শুরু করেন। তিনি সর্ব প্রথম ১৯৯৮ সালে মসজিদে নববিতে নামাজের ইমামতি করেন। তার কণ্ঠে সুরা ইখলাসের তেলাওয়াত শুনেও তা শিখে নেয়ার সুযোগ।
>> শায়খ বালিলাহ
সুকণ্ঠের অধিকারী কাবা শরিফের ইমাম ও খতিব শায়খ ড. বন্দর বিন আব্দুল আজিজ বালিলাহ। পবিত্র নগরী মক্কায় ১৯৭৫ সালে জন্ম নেন তিনি। ২০১৩ সালের ২৩ জুলাই মোতাবেক ১৫ রমজান ১৪৩৪ হিজরিতে মক্কার মসজিদে হারামে তারাবিহ নামাজের ইমামতি শুরু করেন। এর আগে তিনি পবিত্র নগরী মক্কার বিভিন্ন মসজিদে নামাজ পড়ান। অসাধারণ উচ্চারণ ও আবেগঘন কণ্ঠে তেলাওয়াত শুনেও রয়েছে সুরা ইখলাস শেখার সুযোগ।
>> শায়খ মুয়াইকিলি
কাবা শরিফের ইমাম ও খতিব শায়খ ড. মাহের বিন হামাদ বিন মুয়াক্বল আল-মুয়াইকিলি। তিনি ৭ জানুয়ারি ১৯৬৯ সালে পবিত্র নগরী মদিনায় জন্মগ্রহণ করেন। বিশ্বব্যাপী হাফেজ ও কারিদের তেলাওয়াতের আদর্শ ব্যক্তিত্বদের একজন শায়খ মাহের। ২০০৭ সালে তিনি মক্কার মসজিদে হারাম তথা কাবা শরিফে ইমামতি শুরু করেন। তিনি ১৪২৬-২৭ হিজরিতে মসজিদে নববিতে তারাবিহ নামাজেরও ইমামতি করেন। অসাধারণ উচ্চারণ ও আবেগঘন কণ্ঠে তেলাওয়াত শোনার মাধ্যমে সুরা ইখলাস শেখা ও মাশক করতে পারেন যে কেউ।
>> শায়খ শুরাইম
কাবা শরিফের প্রবীণ ইমামদের মধ্যে অন্যতম শায়খ ড. সৌদি বিন ইবরাহিম বিন মুহাম্মদ আল-শুরাইম। তিনি ১৯ জানুয়ারি ১৯৬৪ সালে সৌদি আরবের রিয়াদে জন্মগ্রহণ করেন। কুরআনুল কারিমের হদর তেলাওয়াতের সেরা কারি তিনি। তার কণ্ঠের তেলাওয়াত যে কাউকে বিমোহিত করে। ১৯৯১ সালের রমজান মাসে শায়খ শুরাইম পবিত্র কাবা শরিফে তারাবিহ নামাজের মাধ্যমে ইমামতি শুরু করেন।
>> শায়খ দুসারি
বয়সে তরুণ ও সুকণ্ঠের অধিকারী কাবা শরিফের ইমাম শায়খ ড. ইয়াসির বিন রশিদ বিন হুসাইন আল-ওয়াদানি আল-দুসারি। বিচার ব্যবস্থাপনায় উচ্চ শিক্ষা নেয়া শায়খ দুসারি সৌদি আরবের আল-খারজ প্রদেশে ১৯৮০ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ২০১৪ সালে তারাবিহ নামাজ পড়ানোর মাধ্যমে পবিত্র কাবা শরিফে ইমামতি শুরু করেন। তার কণ্ঠে কুরআনের সুর ঝংকার ফুটে ওঠে।
>> শায়খ কাসিম
পবিত্র নগরী মদিনার মসজিদে নববির ইমাম ও খতিব শায়খ ড. আব্দুল মুহসিন আল কাসিম। তিনি ১৯৬৭ সালে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৯৮ সাল থেকে তিনি মসজিদে নববিতে নামাজের ইমামতি করেন। ঠান্ডা কণ্ঠের চমৎকার তেলাওয়াতের অধিকারী তিনি। তার তেলাওয়াত শুনেও শেখা যেতে পারে সুরা ইখলাস।
>> শায়খ বুয়াইজান
মদিনার মসজিদে নববির ইমাম ও খতিব শায়খ ড. আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রহমান আল-বুয়াইজান। তিনি ১৯৭৮ সালে জন্মগ্রহণ করেন। ২০১৩ সাল থেকে তিনি মসজিদে নববিতে ইমামের দায়িত্ব পালন করে আসছেন। সুকণ্ঠের অধিকারী বুয়াইজানের তেলাওয়াত শুনেও সুরা ইখলাস শেখার সুযোগ রয়েছে।
>> শায়খ আহমাদ হুজাইফি
মদিনার মসজিদে নববির ইমাম শায়খ ড. আহমাদ বিন আলি বিন আব্দুর রহমান আল-হুজাইফি। তিনি মদিনার মসজিদে নববির প্রবীণ ইমাম ও খতিব শায়খ আলি আল-হুজাইফির ছেলে। আবেগঘন ও সুকণ্ঠের অধিকারী হুজাইফি ২০১৯ সাল থেকে মসজিদে নববির ইমাম হিসেবে দায়িত্ব পালন শুরু করেন। ইমাম হিসেবে নিয়োগের আগে তিনি রমজানে তারাবিহ নামাজ পড়ানোর মাধ্যমে মসজিদে নববিতে ইমামতি শুরু করেন। তিনি মদিনার মসজিদে কুবার ইমাম ও খতিবের দায়িত্ব পালন করেছেন। তার কণ্ঠে ভেসে উঠেছে সুরা ইখলাসের অসম্ভব সুন্দর ও আবেগী তেলাওয়াত।
>> শায়খ আলি হুজাইফি
মদিনার মসজিদে নববির প্রবীণ ইমাম ও খতিব শায়খ ড. আলি বিন আব্দুর রহমান আল-হুজাইফ। সুকণ্ঠী তেলাওয়াতকারী হিসেবে তিনি বিশ্বব্যাপী কুরআনের সেরা কারি হিসেবে পরিচিত। তিনি ১৯৪৭ সালের ২২ মে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৭৯ সাল থেকে তিনি মসজিদে নববির ইমামের দায়িত্ব পালন করে আসছেন। এ বয়সেও তার কণ্ঠে সুরা নাসের তেলাওয়াত মানুষকে বিমোহিত করে তোলে।
>> শায়খ খালিদ
সুকণ্ঠের অধিকারী মদিনার মসজিদে নববির ইমাম ও খতিব শায়খ ড. খালিদ বিন সুলাইমান মুহান্না। তিনি ১৯৭৬ সালে সৌদি আরবের আল-আহসায় জন্মগ্রহণ করেন। ২০১৫ সাল থেকে শায়খ খালিদ মুহান্না মসজিদে নববিতে ইমামতি শুরু করেন।
>> শায়খ বুদাইর
মদিনার মসজিদে নববির ইমাম ও খতিব শায়খ ড. সালাহ বিন মুহাম্মাদ আল-বুদাইর। তিনি সুন্দর ও সুস্পষ্ট তেলাওয়াতের অধিকারী সৌদি আরবের অন্যতম কারিদের একজন। তিনি ১৯৭০ সালের ৭ জানুয়ারি সৌদি আরবের আল-হুফুফে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি পবিত্র নগরী মক্কার মসজিদে হারাম তথা কাবা শরিফের ইমাম হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৮ সাল থেকে তিনি মদিনার মসজিদে নববিতে ইমামতির দায়িত্ব পালন শুরু করেন। তার কণ্ঠে সুরা ইখলাসের তেলাওয়াত যে কাউকে বিমোহিত করবে।
>> শায়খ আইয়ুব
মদিনার মসজিদে নববির ইমাম শায়খ কারি মোহাম্মদ আইয়ুব। তিনি সৌদি আরবের বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে পবিত্র কুরআনুল কারিম তেলাওয়াত করতেন। দেশটির বিশিষ্ট কারি, ইমাম ও ইসলামিক স্কলার হিসেবে ব্যাপক পরিচিত ছিলেন। তিনি ১৯৫১ সালে জন্মগ্রহণ করেন। ২০১৬ সালের ১৬ এপ্রিল তিনি মদিনায় ইন্তেকাল করেন। বিশ্বব্যাপী কুরআনুল কারিমের তেলাওয়াতের জন্য তিনি ব্যাপক সমাদৃত। তিনি ১৯৯০ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত মদিনার মসজিদে নববিতে ইমামতির দায়িত্ব পালন করেছেন। যদিও মাঝে কিছু দিন তিনি মদিনার মসজিদে কুবায় ইমামতির দায়িত্ব পালন করেন। তার সুন্দর তেলাওয়াত থেকে যে কেউ সুরা ইখলাস সহজে শিখতে পারবে।
> শায়খ আহমদ
মদিনার মসজিদে নববির সম্মানিত ইমাম শায়খ ড. আহমদ তালেব বিন হামেদ। কুরআনের বিখ্যাত কারি হামেদ ১৯৮০ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ২০১৯ সালের ১২ অক্টোবর পবিত্র নগরী মদিনার মসজিদে নববির ইমাম হিসেবে নিয়োগ হন। তার ঠান্ডা কণ্ঠের তেলাওয়াত যে কারো হৃদয়কে আলোড়িত করে তোলে। কুরআন শিখতে অনুপ্রেরণা জোগায়।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহর সবাইকে পবিত্র নগরী মক্কা ও মদিনার ইমাম এবং খতিবদের তেলাওয়াত শুনে বিশুদ্ধভাবে কুরআন শেখার এবং অনুপ্রেরণা লাভের তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/পিআর