যে ৩ গুণে চেনা যায় ‘নেককার বান্দা’

ধর্ম ডেস্ক
ধর্ম ডেস্ক ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ০১:০৭ পিএম, ১৮ অক্টোবর ২০২০

বাহ্যিক দৃষ্টিতে অন্যায় পরিহার করে চলা নারী-পুরুষকে মানুষ নেককার বান্দা বলে জানে। যারা সব সময় আল্লাহর নৈকট্য লাভের চেষ্টায় ব্যস্ত থাকে। কিন্তু কে নেককার বা কে গোনাহগার এ কথা নিশ্চিত করে বলা কঠিন। কেননা এ জ্ঞান একমাত্র আল্লাহ তাআলাই ভালো জানেন। তবে মানুষের মধ্যে এমন অনেকে রয়েছেন, যাদের মধ্যে এমন কিছু বৈশিষ্ট্য বা গুণ রয়েছে, যাতে কে নেককার আর কে বদকার, তার ধারণা পাওয়া যায়।

বিখ্যাত ইসলামিক স্কলার হজরত শাকিক ইবনে ইবরাহিম জাহিদ রাহমাতুল্লাহি আলাইহির একটি ঘটনায় তা উঠে এসেছে। তাহলো এমন-

এক ব্যক্তি হজরত শাকিক ইবনে ইবরাহিম জাহিদ রাহমাতুল্লাহি আলাইহিকে জিজ্ঞাসা করেন যে, মানুষ আমাকে নেককার বলে। কিভাবে বুঝব যে, আমি নেককার না বদকার? ওই ব্যক্তির প্রশ্নের উত্তরে তিনি নেককার ব্যক্তির তিনটি গুণের কথা জানান-

> যারা আল্লাহর বিধি-বিধান মেনে চলেন, তাদের কাছে নিজের অভ্যন্তরীণ কাজ তথা ইবাদত-বন্দেগির অবস্থা ও বিষয়াদি বর্ণনা করা। যদি তাঁরা তা পছন্দ করে, তবেই মনে করবে যে তুমি নেককার।

> নিজের নফসের সামনে দুনিয়াকে (ভোগ-বিলাস, লোভ-লালসাকে) পেশ করা। যদি দুনিয়ার লোভ-লালসা তোমাকে আকৃষ্ট করতে না পারে, তাহলেই বুঝবে যে, তুমি নেককার।

> নিজের সামনে (কল্পনায়) মৃত্যুকে উপস্থিত কর। যদি অন্তর নিজের মৃত্যুর ওপর (এ মর্মে আত্মতৃপ্তি লাভ করে যে, মারা গেলেও কোনো সমস্যা নেই; জীবনের চলমান সময়টি অন্যায়-অপরাধ, ভোগ-বিলাস থেকে মুক্ত এবং আত্মা মৃত্যুর ওপর) সন্তুষ্ট থাকে। আর তাড়াতাড়ি আল্লাহর দিদার লাভের জন্য অন্তরে আনন্দ অনুভূত হয়; তবে বুঝবে যে, তুমি নেককার। (তাম্বিহুল গাফেলিন)

যখনই মানুষের অন্তরে এ গুণ তিনটি প্রকাশ পায়; তবে এসব গুণের অধিকারীকে বুঝতে হবে যে, তিনি নেককার। আর এ জন্য মহান আল্লাহর কৃতজ্ঞতাজ্ঞাপন করা জরুরি। নিজেদের অক্ষমতা প্রকাশ করে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থণা করাও জরুরি।

এসব নেককার বান্দার জন্যই রয়েছে জান্নাতের ঘোষণা। কুরআনুল কারিমে মহান আল্লাহ তাআলা ঘোষণা করেন-
‘যারা ঈমান আনে এবং ভালো কাজ করে, তাদের অভ্যর্থনার জন্য আছে জান্নাতুল ফেরদাউস।’ (সুরা কাহফ : আয়াত ১০৭)

সুতরাং মানুষের উচিত-
- আল্লাহর বিধান অনুযায়ী প্রতিটি কাজ করা; আর এ কাজগুলোই হলো ইবাদত-বন্দেগি। যা পালনে বান্দা হয়ে ওঠে নেককার।
- নিজের নফসকে নিয়ন্ত্রণ করা। যাতে থাকবে না ভোগ-বিলাস ও লোভ-লালসা। যা মানুষকে দুনিয়ার মোহ থেকে নিষ্কৃতি দেয়। আখেরাতমুখী করে তোলে।
- সব সময় মৃত্যুর প্রস্তুতি রাখা। মৃত্যু যখনই আসুক; যেন মনে হয় যে, আমি মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত। আল্লাহর দরবারে জবাবদিহিতে কোনো সমস্যা নেই। এমন জীবন গঠন করা।

আল্লাহ তাআলা সবাইকে নেককার বান্দা হওয়ার তাওফিক দান করুন। নিজেদের নেককার বান্দা হিসেবে তৈরি করতে রিয়া তথা অহংকার থেকে মুক্ত থেকে ইবাদত-বন্দেগিতে নিয়োজিত থাকার তাওফিক দান করুন। আমিন।

এমএমএস/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।