যে নিয়মে খাবার খেলে শরীরে শক্তি বাড়ে

ধর্ম ডেস্ক
ধর্ম ডেস্ক ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৮:১৭ পিএম, ০৫ জুলাই ২০২০

সুস্বাস্থ্য ও সুস্থতার জন্য ভালোভাবে খাবার গ্রহণ করা জরুরি। খাবার খাওয়ার সময় তাড়াহুড়ো করে খাবার খাওয়া নিষেধ। বেশি গরম খাবার খাওয়ায়ও রয়েছে হাদিসের নিষেধাজ্ঞা। যে কোনো উন্নতমানের পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ খাবার নিয়মের বাইরে খেলে তাতে যথাযথ পুষ্টি ও উপকারিতা পাওয়া যায় না। খাবার খাওয়ার বিষয়ে রয়েছে ইসলামি নির্দেশনা।

খাবার খাওয়ার নিয়ম
- অত্যন্ত স্থিরতা ও রুচির সঙ্গে চিবিয়ে খাবার খাওয়া। আবার স্থিরতার নামে অলসতা এবং অবহেলাও করা যাবে না।

- হাসি-খুশি ও শান্ত অবস্থায় স্থিরতার সঙ্গে খাবার খাওয়া। তবে হাসি-খুশির নামে সীমাহীন হাস্যরসে উল্লসিত হয়ে ওঠা যাবে না।

- খাবার খাওয়ার সময় চিন্তা, রাগ, দুঃখ ও ভয় থেকে বিরত থাকা। অর্থাৎ খাওয়ার সময় চিন্তা, রাগ, ভয় ও দুঃখবোধ না করা।

- যদি কেউ দুঃখ, দুশ্চিন্তা ও ভয়ের সময় খাবার খায় তবে তা পাকস্থলীর ওপর বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। সে খাবার থেকে শরীরের চাহিদা অনুযায়ী যথাযথ শক্তি ও পুষ্টিগুণ পাওয়া যায় না।

খাবার খেতে বসে অসুস্থ ও চিন্তিত মানুষের মতো নির্জিব অবস্থায় চুপচাপ থাকা যাবে না। প্রাণচাঞ্চল্য ও হাসি-খুশি মনে খাবার খেতে হবে। আবার হাসি-খুশির নামে সীমাহীন হাস্যরসে উল্লসিত হয়ে ওঠা যাবে না। কারণ খেতে বসে অট্টহাসিতে মত্ত হয়ে ওঠায় অনেক সময় মানুষের মৃত্যুও ঘটে থাকে।

খাবার খাওয়ার সময় খুশি ও প্রফুল্লতা সহকারে খাওয়া। আল্লাহ তাআলার দানকৃত নেয়ামতের শুকরিয়া আদায় করা। এভাবে খাবার খেলে মানুষের শরীরে শক্তি বাড়ে। শরীরে খাবারের যথাযথ পুষ্টিগুণ বেড়ে থাকে।

অসুস্থতার সময় স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর খাদ্য থেকে বিরত থাকা। হাদিসে এসেছে-
হজরত উম্ম মানজার রাদিয়াল্লাহু আনহা বলেন যে, একবার রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমার ঘরে তাশরিফ আনলেন। আমার ঘরে খেজুরের ছড়া লটকানো ছিল। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তা থেকে (খেজুর) খেতে লাগলেন।
(সে সময়) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সঙ্গে হজরত আলি রাদিয়াল্লাহু আনহু ছিলেন। তিনিও (খেজুর) খেতে লাগলেন।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তখন তাঁকে থামিয়ে দিয়ে বললেন, হে আলি! তুমি এ মাত্র রোগ শয্যা থেকে উঠে এসেছ। তাই খেজুর খেয়ো না। তখন হজরত আলি রাদিয়াল্লাহু আনহু (খেজুর) খাওয়া থেকে বিরত থাকলেন আর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম খেতে থাকলেন।
উম্মে মানজার রাদিয়াল্লাহু আনহা বলেন, অতপর আমি কিছু যব ও বীট নিয়ে রান্না করলাম। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হজরত আলি রাদিয়াল্লাহু আনহুকে বললেন, হে আলি! এবার খাও, এটা তোমার জন্য (উপযুক্ত) উপাদেয় (খাদ্য)।' (শামায়েলে তিরমিজি)

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন মেহমান নিয়ে দস্তরখানে খেতে বসতেন। তখন মেহমানকে বারবার বলতেন-
'খান, আরও খান।' মেহমান যখন খুব তৃপ্ত হয়ে যেতেন এবং খেতে অস্বীকার করতেন, তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম আর খেতে পিড়াপিড়ি করতেন না। অর্থাৎ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সব সময় অত্যন্ত সাচ্ছন্দ্যময় ও পছন্দনীয় পরিবেশে হাসি-খুশি অবস্থায় যথোপযুক্ত কথা-বার্তার মাধ্যমে খাবার খেতেন।

সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, সুস্বাস্থ্য ও সুস্থতার জন্য অস্থির, চিন্তাযুক্ত অবস্থায় খাবার না খেয়ে হাসিখুশি মন নিয়ে স্থিরতা ও খুশির সঙ্গে চিবিয়ে আরাম করে খাবার খাওয়া। আর তাতেই খাবারের যথাযথ পুষ্টিগুণ ও শক্তি পাবে শরীর।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে উল্লেখিত নিয়মে খাবার গ্রহণ করার তাওফিক দান করুন। সুস্বাস্থ্য সুস্থ থাকতে খাবারের পরিপূর্ণ পুষ্টি ও শক্তি লাভে সুন্নাতের যথাযথ অনুসরণ ও অনুকরণ করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

এমএমএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।