যে কারণে জাদু করতে নিষেধ করেছেন বিশ্বনবি

ধর্ম ডেস্ক
ধর্ম ডেস্ক ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৯:৫৪ এএম, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০

মানুষের অন্তরের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বড় বড় গোনাহের কাজের মধ্যে জাদু একটি। জাদুর কারণে মানুষ ও তার নেক আমলগুলো ধ্বংস হয়ে যায়। কুরআনুল কারিমে জাদুকরদের জন্য পরকালে কোনো অংশ নেই বলে উল্লেখ করেছেন। জাদু একটি কুফরি ও ধ্বংসের কাজ। গোনাহের হিসেবেও এটি কবিরা গোনাহ।

জাদু করা শয়তানের কাজ। শয়তানের মূল মিশন হলো মানুষকে সত্য ও ন্যয়ের পথ থেকে দূরে সরিয়ে নেয়া। শয়তান এ মিশন বাস্তবায়নে জাদুকে হাতিয়ার হিসেবে গ্রহণ করেছে। সে কারণেই কুরআন-সুন্নায় জাদুকে কুফরি ও ধ্বংসকারী কাজ হিসেবে সব্যস্ত করা হয়েছে।

বর্তমান সময়ে মানুষের ক্ষতি সাধনের লক্ষ্যে জাদুর প্রভাব বেশি দেখা যায়। মুনাফেকি-, কুফরি-, শিরক-, অহংকার- সহ লোক দেখানো ভালো কাজ- এবং ইবাদতও কবিরা গোনাহের অন্তর্ভুক্ত।

এছাড়া মানুষের ক্ষতি সাধনের উদ্দেশ্যে কিংবা আমিত্ব প্রকাশের উদ্দেশ্যে যদি কেউ জাদু বিদ্যা প্রয়োগ করে তাও কুফরি এবং তা বড় গোনাহের কাজ। এর ভয়াবহতাও মারাত্মক। কুরআন এবং হাদিসে তা থেকে বিরত থাকতে জোর তাগিদ দেয়া হয়েছে।

জাদুকরদের জন্য পরকালে কল্যাণের কোনো অংশ নেই। আর তা কুফরি কাজের অন্তর্ভুক্ত। এ কারণে জাদুকর এবং জাদু করা সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা কুরআনুল কারিমে দীর্ঘ বক্তব্য তুলে ধরেন-
‘তারা ঐ শাস্ত্র বা বিদ্যার অনুসরণ করল, যা (হজরত) সুলায়মানের রাজত্ব কালে শয়তানরা আবৃত্তি করত। সুলায়মান কুফর করেনি; শয়তানরাই কুফর করেছিল।
তারা মানুষকে জাদুবিদ্যা এবং বাবেল শহরে হারুত ও মারুত দুই ফেরেশতার প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছিল, তা শিক্ষা দিত।
তারা (হারুত-মারুত) উভয়ই একথা না বলে কাউকে শিক্ষা দিত না যে, আমরা পরীক্ষার জন্য; কাজেই তুমি কাফের হয়ো না।
অতপর তারা তাদের কাছ থেকে এমন জাদু শিখত, যা দ্বারা স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটে। তারা আল্লাহর আদেশ ছাড়া তাদ্বারা কারও অনিষ্ট করতে পারত না। যা তাদের ক্ষতি করে এবং উপকার না করে, তারা তাই শিখে।
তারা ভালরূপে জানে যে, যে কেউ জাদু অবলম্বন করে, তার জন্য পরকালে কোন অংশ নেই। যার বিনিময়ে তারা আত্মবিক্রয় করেছে, তা খুবই মন্দ যদি তারা জানত।’ (সুরা বাকারা : আয়াত ১০২)

উল্লেখিত আয়াতে জাদুকে কুফরি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। আর কুফরি করা হলো কবিরা গোনাহ। আর জাদু কবির গোনাহ হওয়ার কারণেই যারা এ গোনাহে জড়িত হবে তাদের জন্য পরকালে কোনো অংশ বা প্রতিদান নেই বলেই কুরআনুল কারিমের এ আয়াতে সুষ্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।

হাদিসে পাকে প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জাদু থেকে বিরত থাকতে বলেছেন। জাদুকে ধ্বংসকারী কাজসমূহের অন্তর্ভূক্ত করেছেন। হাদিসে এসেছে-
হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘তোমরা সাতটি ধ্বংসকারী বস্তু থেকে বেঁচে থাক। তারা বললেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল! সেগুলো কি?
তিনি বললেন-
>> আল্লাহর সাথে শরিক করা;
>> জাদু করা;
>> উপযুক্ত কারণ ছাড়া কাউকে হত্যা করা; আর আল্লাহ যা হারাম করেছেন তথা-
>>সুদ খাওয়া;
>> ইয়াতিমের মাল খাওয়া;
>> জিহাদের ময়দান থেকে পলায়ন করা;
>> সতী-সাধ্বী সরলমনা নারীদের প্রতি অপবাদ দেয়া।’ (বুখারি)

এ হাদিসের আলোকেও জাদু ধ্বংসকারী কাজের মধ্যে একটি। এ কাজ থেকে বিরত থাকা প্রত্যেক মুসলমানের জন্য আবশ্যক।

সুতরাং মানুষের আমল ধ্বংসকারী কুফরি কাজ জাদু থেকে বিরত থাকা ঈমানের একান্ত দাবি। কেননা যে কোনো জাদুই ইসলামের কুফরি ও কবিরা গোনাহের শামিল।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে জাদুটোনা করা থেকে বিরত থাকার তাওফিক দান করুন। অন্তরে জাদুটোনা সম্পর্কিত চিন্তাভাবনা থেকে বিরত থাকার তাওফিক দান করুন। আমিন।

এমএমএস/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।