এবার এনআরসি বিতর্কে একমঞ্চে ৪ ধর্মের নেতারা যা বললেন

ধর্ম ডেস্ক
ধর্ম ডেস্ক ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ১২:৩৮ পিএম, ২১ ডিসেম্বর ২০১৯

নাগরিকত্ব বিল ইস্যুতে সম্প্রতি আন্দোলন সংগ্রাম আর বিক্ষোভে উত্তাল পুরো ভারত। বিজেপি সরকারের বিতর্কিত নাগরিকত্ব বিল নিয়ে উত্তর প্রদেশ, দিল্লিসহ দেশব্যাপী ঘটছে সহিংস ঘটনা। বিতর্কিত এ নাগরিকত্ব বিল বাতিলে এক মঞ্চে উঠলেন হিন্দু মুসলিম শিখ ও খ্রিষ্টান নেতারা। তারা নাগরিত্ব বিল প্রত্যাখ্যানের দাবি তুলেছেন।

পুরো ভারত যখন বিক্ষোভ-সংগ্রামে উত্তাল। ঠিক তখনই ভারতের লুধিয়ানায় হিন্দু মুসলিম খ্রিষ্টান শিখ ও দলিতদের সর্বদলীয় এক সভা থেকে বিতর্কিত নাগরিকত্ব বিল প্রত্যাখ্যানের দাবি ওঠেছে।

সংবাদ মাধ্যম ডেইলি তাসিরের তথ্য মতে, ‘লুধিয়ানার ঐতিহাসিক শাহী জামে মসজিদে হিন্দু মুসলিম খ্রিষ্টান দলিত সম্প্রদায়ের নেতারা বৃহস্পতিবার এক জরুরি বৈঠক বসে। এ বৈঠক থেকেই সব ধর্মের নেতারা নাগরিকত্ববিল প্রত্যাখ্যানের দাবি জানান।

ভারতের মজলিসে আহরারে ইসলাম-এর আহ্বানে হিন্দু, খ্রিষ্টান, মুসলিম, শিখ ও দলিত শ্রেণির নেতাদের মধ্য থেকে গুরুদ্বার দুখ নরন, পার্ধান সিংহ, আদি ধর্ম সমাজের মাওলানা হাবিবুর রহমান লুধিয়ানীসহ আরও বড় বড় নেতারা এ বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন।

বৈঠকে বক্তব্য রাখেন, হিন্দুদের নেতা নীতা শ্রী রাজ কুমার আট্টেক, শ্রী পারমিন্দার কুমার মেহতা, কালভেরী গির্জার যাজক শ্রী রাম লাল মসিহ, সন্দেব মসিহ এবং জেদার কিলপ্রীত সিং।

সব নেতারাই বলেন, আমরা সব ধর্মের লোকেরা এখানে একিত্র হয়েছি। ভারত সরকারকে এ বার্তা দিতে চাই যে, আমরা কোনো ধর্মের মানুষই এনআরসি আর সিএএ (নাগরিকত্ব বিল) মানি না। আমরা মানবো না।

লুধিয়ানার শাহী মসজিদের ইমাম বলেন, দেশজুড়ে এনআরসি এবং সিএএ-এর বিরুদ্ধে আন্দোলন; কোনও ধর্মের বিরুদ্ধে নয়। কেন্দ্রীয় সরকারের এই ভুল নীতির বিরুদ্ধে আমাদের আন্দোলন। দেশজুড়ে এ ভুল নীতির প্রতিবাদে বিক্ষোভ চলছে। প্রতিবাদে অংশগ্রহণ করছে সব ধর্মের মানুষ।

বৈঠকে উপস্থিত শিখনেতা সরদার পাটপাল সিং বলেন, যে শিখ ধর্মগোষ্ঠীর লোকেরা জাতীয় নাগরিকত্ব বিল এনআরসিতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। কিন্তু তাতে শিখ সম্প্রদায় সন্তুষ্ট নয়। কারণ আমাদের গুরুরা বলেছেন, মুসলমানদের এই আইন থেকে বাদ দেয়া কীভাবে সম্ভব? আমরা এই আইনের তীব্র বিরোধিতা করি।

হিন্দু ধর্মীয় নেতা সিভি শ্রী হরমান্দার মেহতা বলেন, আমাদের সবার এ দেশ। যদি তিনটি দেশের হিন্দু শিখ শরণার্থীরা ভারতে থাকতে পারে তবে অন্যান্য প্রতিবেশী দেশ থেকে আসা মুসলিম শরণার্থীরা থাকবে। অন্যদের নাগরিকত্ব দিলে মুসলিমরা কী দোষ করেছে।

সিএনআই ক্যালভারি চার্চের যাজক শ্রী রাম লাল মসিহ বলেন, সরকারের নাগরিকত্ব বিলে ঘৃণার গন্ধ পাওয়া যায়। সরকার অন্যান্য ধর্মের লোকদের মতো মুসলমানদেরও সমান অধিকার দেয়া উচিত।

যাজক আরও বলেন, ক্ষমতার জোরে এই বিলের আওতায় মুসলমানদের যে বাদ দেয়া হচ্ছে, আগামীতে অন্য ধর্মের লোকদের নাগরিকত্ব বাতিল করবে না মর্মে এমন কোনো গ্যারান্টি আছে কি? তাই সময় থাকতে নাগরিকত্ব বিলের বিপক্ষে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন দরকার।

এমএমএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।

আরও পড়ুন