রমজানের অভ্যাস ধরে রাখতে নিয়মিত যে নামাজ পড়বেন মুমিন

ধর্ম ডেস্ক
ধর্ম ডেস্ক ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ১০:৫২ এএম, ২০ জুন ২০১৯

রমজানকে বলা হয় কুরআন নাজিলের মাস। এ মাসে রহমত বরকত মাগফেরাত ও নাজাত লাভ করে মুমিন মুসলমান। রমজান পরবর্তী সময়েও তাদের জন্য এ ধারা অব্যাহত থাকে যারা রমজানের পরেও নিয়মিত নফল নামাজ আদায় করে।

রমজান মাসব্যাপী দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে রাতের নামাজ তারাবিহ পালনে নফল নামাজ আদেয়র যে ভালো অভ্যাস তৈরি হয়েছে, রমজান পরবর্তী সময়ে ওই নফল নামাজের ধারা অব্যাহত রাখতে একটু সদিচ্ছাই যথেষ্ট।

বছরজুড়ে এ অভ্যাসের চর্চা করলেই সফলতা লাভ করবে মুমিন। মানসিকভাবে নফল নামাজের ধারা অব্যাহত রাখতে যে নামাজে অভ্যস্ত হবে মুমিন। তাহলো-

>> তাহাজ্জুদ নামাজ
রমজানের বাইরে কিয়ামুল লাইল হলো তাহাজ্জুদ নামাজ। প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বছরজুড়ে এ নামাজ আদায় করতেন। তাহাজ্জুদ নামাজের ফজিলত ও গুরুত্বও অনেক বেশি। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন-
‘ফরজ নামাজের পর সর্বোত্তম (নফল) নামাজ হলো, রাতের নামাজ তথা তাহাজ্জুদ।’ (মুসলিম)

>> সুন্নাতে রাতেবা
ফরজ নামাজের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রতিদিনের নিয়মিত সুন্নাত নামাজের গুরুত্বও অনেক বেশি। অধিকাংশ আলেমগণ এ নামাজকে সুন্নাতে মুয়াক্কাদাহ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। অনেকেই শুধু ফরজ নামাজ পড়েন, এ নামাজগুলো থেকে বিরত থাকেন।

রমজানের পরিবেশ অব্যাহত রাখতে ফরজের আগে ও পরের এ নামাজগুলো নিয়মিত পড়া আবশ্যক। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ফরজের আগে পরের ১২ রাকাআত (সুন্নাত) নামাজ সম্পর্কে বলেছেন-
‘যে ব্যক্তি প্রত্যেক দিন ও রাতে ১২ রাকাআত (সুন্নাত) নামাজ আদায় করবে, বিনিময়ে তার জন্য জান্নাতে একটি ঘর নির্মাণ করা হবে।’ (মুসলিম)

>> এশরাক ও চাশতের নামাজ
ফজরের নামাজের পর তাসবিহ-তাহলিল ও কুরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে কিছু সময় অপেক্ষার পর সূর্য ওঠে গেলে দুই/চার রাকাআত নামাজ আদায় করার ফজিলত অনেক বেশি। এটিকে এশরাক বা চাশতের নামাজ। এ নামাজেও রমজানের ধারা অব্যাহত থাকবে। হাদিসে এ নামাজের ফজিলত বর্ণনায় প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন-
‘হে আদম সন্তান! দিনের শুরুতে তুমি আমার জন্য ৪ রাকাআত নামাজ আদায় কর, আমি সারাদিন তোমার জন্য যথেষ্ট হয়ে যাব।’ (তিরমিজি)

>> ওজু করার পর নামাজ
ওজু করার পর ‘তাহিয়্যাতুল ওজু’র ২ রাকাআত নামাজ আদায় করায় রয়েছে অনেক সাওয়াব। যদি সূর্য ওঠা কিংবা ডোবার নিকটবর্তী সময় না হয় তবে ওজু করে নিয়মিত ২ রাকাআত নামাজ আদায় করা। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ নামাজের ব্যাপারে বলেছেন-
‘তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি উত্তমভাবে ওজু করবে। অতঃপর দেহ-মন (আল্লাহর দিকে) ধাবিত করে দুই রাকাআত নফল নামাজ পড়বে, সে যেন নিজের জন্য জান্নাত ওয়াজিব করে নিল।’ (আবু দাউদ)

>> মসজিদে ঢুকেই নামাজ
জামাআতে নামাজ পড়ার উদ্দেশ্যে কেউ যখন মসজিদে প্রবেশ করে আর তখন যদি সূর্য ওঠা কিংবা ডোবার নিকটবর্তী সময় না হয় তবে বসার আগে দুই রাকাআত নামাজ আদায় করা মুস্তাহাব। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিয়মিত এ নামাজ আদায়ে উম্মতে মুহাম্মাদিকে তাগিদ করেছেন। হাদিসে এসেছে-
‘তোমাদের মধ্যে কেউ যখন মসজিদে প্রবেশ করবে, সে যেন বসার আগে দুই রাকাআত নামাজ আদায় করে নেয়।’ (বুখারি)

বছরজুড়ে এ নামাজগুলো আদায় করলে সারা বছরই মুমিন হৃদয়ে রমজানের আবহ কিংবা পরিবেশ বিরাজ করবে। আর তাতে সফলতা লাভ করবে মুমিন। তৈরি হবে ভারসাম্যপূর্ণ গোনাহমুক্ত পরিবেশ ও সমাজ।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে রমজানের ধারা অব্যাহত রাখতে ফরজ নামাজের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এ নামাজগুলো নিয়মিত আদায় করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

এমএমএস/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।