ঈদের আগে ফিতরা আদায়ের প্রয়োজনীয়তা ও উপকারিতা

ধর্ম ডেস্ক
ধর্ম ডেস্ক ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৩:৫১ পিএম, ২১ মে ২০১৯

বরকত ও কল্যাণের আরেক মাধ্যম ফিতরা। এ ফিতরা রমজানের ঈদের নামাজের আগেই অসহায় গরিবদের মাঝে বিতরণ করতে হয়। কেননা ফিতরা হলো রমজানের রোজা পালনের সময় সংঘঠিত ভুলত্রুটির ক্ষতিপূরণ স্বরূপ।

মাসব্যাপী রমজানের সিয়াম-সাধনার পর মুমিন মুসলমান ঈদ পালন করে। পরস্পর ঈদের খুশি উদযাপন করে। ধনীদের এ খুশির আনন্দ-উৎসবে গরিব-অসহায়দের শামিল করতেই দেয়া হয়েছে ফিতরার বিধান। যাতে ঈদের দিন সবাই একসঙ্গে ঈদের খুশি উপভোগ করতে পারে।

আরবি দ্বিতীয় হিজরির শাবান মাসে ফিতরার বিধান আবশ্যক করা হয়। আর সে বছর থেকেই অসহায়দের মাঝে বিতরণ করা হয় ফিতরা।

ফিতরা দেবে যারা
মৌলিক প্রয়োজনীয় চাহিদা পূরণ ও ঋণ আদায়ের পর যদি কারো কাছে জাকাতের নিসাব পরিমাণ সম্পদ থাকে কিংবা সে সম্পদ পরিমাণ সোনা-রূপা থাকে; তবে তাদের ওপর রমজানে ফিতরা আদায় করা ওয়াজিব।

যারা আল্লাহ ও তার রাসুলকে ভালোবাসে তারা ফিতরা আদায় করার মাধ্যমে আনন্দ অনুভব করে থাকে। কেননা ফেতরা আদায়ে রয়েছে অনেক উপকারিতা।

আরও পড়ুন > রোজা অবস্থায় ভুলে কোনো কিছু খেয়ে ফেললে যা করবেন

>> হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, অনর্থক ও অশালীন কথাবার্তা থেকে রোজাকে পবিত্র করার জন্য এবং গরিব অসহায়দের মুখে খাদ্য দেয়ার জন্য রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাদকায়ে ফিতর নির্ধারণ করেছেন। (আবু দাউদ, মিশকাত)

ফিতরা আদায় অবশ্যই ভালো কাজ। আর ভালো কাজ মানুষের সব পাপকে ধ্বংস করে দেয়। মানুষ রোজা পালনের সময় অনিচ্ছাকৃতভাবে যদি কোনো ভুল কাজ হয়ে যায়, তবে ফিতরা আদায়ের মাধ্যমে তা ত্রুটিমুক্ত হয়। আল্লাহ বলেন=
‘নিশ্চয়ই ভালো কাজ পাপকে ধ্বংস করে দেয়।’ (সুরা হুদ : আয়াত ১১৪)

ঈদের আগে ফিতরা আদায় করার জরুরি। কারণ ঈদের মাঠে, পথে-ঘাটে কোনো অসহায় গরিবের মাঝে যেন দুঃখবোধ কাজ না করে। তারা যেন ফিতরার টাকা দিয়ে নিজেদের প্রয়োজনীয় চাহিদাগুলো পূরণ করতে পারে। সে জন্য ঈদের জামাআতের আগেই ফিতরা আদায় করা আবশ্যক।

আরও পড়ুন > রোজায় ইফতার বিতরণ ও আর্থিক অনুদানের তাৎপর্য

মনে রাখতে হবে
কুরআন হাদিসের নির্দেশনা অনুযায়ী ফিতরা হলো মহান আল্লাহর কাছে অনুতপ্ত হৃদয়ে গভীর কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করা। কেননা আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে দীর্ঘ এক মাস রোজা রাখার তাওফিক দান করেছেন। রোজা পালনকালে ইচ্ছা কিংবা অনিচ্ছাকৃত ছোট-খাটো ভুলগুলো থেকে ক্ষমা লাভের মাধ্যম হলো এ ফিতরা।

সুতরাং এ ফিতরা আদায়ের মাধ্যমে রমজানের পরিপূর্ণ আত্মশুদ্ধি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা। আর নিজেদেরকে পবিত্র করার জন্যই প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম গরিব-দুঃখীর জন্য ফিতরার ব্যবস্থা করেছেন।

উল্লেখ্য যে, এ বছর জনপ্রতি সর্বনিম্ন ফিতরা নির্ধারণ করা হয়েছে ৭০ টাকা ও সর্বোচ্চ এক হাজার ৯৮০ টাকা। যা গত বছরের চেয়েও কম। ফিতরার সর্ব নিম্ন হার ঠিক থাকলে সর্বোচ্চ ছিল ২ হাজার ৩১০ টাকা। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ৫ কিংবা ৬ জুন পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর উদযাপিত হবে।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে যথাযথভাবে ফিতরা আদায় করার তাওফিক দান করুন। ফিতরা উপকারিতা ও কল্যাণ লাভ করার সৌভাগ্য নসিব করুন। আমিন।

এমএমএস/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।