রোজায় যেসব কাজ নিষিদ্ধ

ধর্ম ডেস্ক
ধর্ম ডেস্ক ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৩:৪৩ পিএম, ০৮ মে ২০১৯

হাদিসে প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘এমন অনেক রোজাদার আছেন, যাদের রোজা পালন উপবাস করা ছাড়া আর কিছুই হয় না। আবার এমন অনেক রাত জেগে ইবাদত করা লোক আছেন, যাদের রাতজাগরণে কোনো ফল অর্জিত হয় না।’

কারণ রোজা যেভাবে পালন করা উচিত কিংবা রাত জেগে যেভাবে ইবাদত করা উচিত তারা সেভাবে রোজা ও ইবাদত করে না। ফলে তাদের রোজা পালন শুধু উপবাস করায় গণ্য হয় আর রাত জেগে ইবাদত শুধু রাতজগরণ হিসেবে গণ্য হয়।

এ অবস্থায় রোজাদারের করণীয় হলো রোজা ও ইবাদতের বিষয়ে সতর্ক থাকা। রোজার পরিপূর্ণ হক আদায়ে কিছু বিষয় থেকে বিরত থাকা জরুরি। আর তাহলো-

>> মিথ্যা ও গিবত

সাওম বা রোজা তার পালনকারীর জন্য ঢাল স্বরূপ। কোনো ব্যক্তি যখন রোজা রাখে আর মিথ্যা ও মন্দ কাজ থেকে বিরত থাকে না। সে ব্যক্তির রোজা তার জন্য ঢালস্বরূপ নয়। তাই রোজা অবস্থায় মিথ্যা, গিবত, কড়া কথা, ঝগড়া-বিবাদসহ যাবতীয় মন্দ কাজ থেকে বিরত থাকা জরুরি।

>> অন্যায় আচরণ

সাওম বা রোজা পালন যেন মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য হয়। অশ্লীল কাজে নিজেকে জড়িয়ে রোজার মর্যাদা ও সফলতা লাভের আশা করা একেবারেই ভুল। তাই রোজা রেখে অশ্লীল কাজ থেকে বিরত থাকা জরুরি।

এমনকি কোনো ব্যক্তি যদি কোনো রোজাদারের সঙ্গে খারাপ আচরণ করে তবে রোজাদার যেন ওই ব্যক্তির সঙ্গে খারাপ আচরণ না করে। বরং রোজাদারের এ কথা বলা উচিত- আমি আল্লাহর রাজি-খুশির জন্য রোজা পালন করছি।

>> কৃদৃষ্টি

চলা-ফেরাসহ সবসময় নিজেদের দৃষ্টির হেফাজত করা জরুরি। কারো কুদৃষ্টি দেয়া থেকে বিরত থাকা। প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘শয়তানের তীরসমূহের মধ্যে মানুষের দৃষ্টি শক্তিও একটি। যে ব্যক্তি আল্লাহর ভয়ে এ তীর বিদ্ধ হওয়া থেকে মুক্ত থাকতে প্রচেষ্টা করে, আল্লাহ তার হৃদয়ে ঈমানের এমন এক দৃষ্টি শক্তি দান করেন, যাতে সেই ব্যীক্ত মজা ও স্বাদ অনুভব করতে পারে।

>> বদনাম ছড়ানো

কারো ব্যাপারে কুৎসা রটানো থেকে বিরত থাকা জরুরি। কোনো ব্যক্তির ব্যাপারে কুৎসা রটানোকে আরবিতে গিবত বা পরনিন্দা বলে। কুরআনে পাকে এ কাজকে মৃত মানুষের পচা গোশত খাওয়ার সঙ্গে তুলনা করেছেন।

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে এ বিষয়ে সুস্পষ্ট ধারণা লাভে গিবত সম্পর্কে জানতে চাইল তিনি বলেন, ‘কোনো ব্যক্তির পেছনে এমন কোনো কথা বলা, যা তার সামনে বললে সে ব্যক্তি নারাজ হয়।’

সাাবায়ে কেরাম জানতে চাইলেন যে, সে ব্যক্তির মাঝে যদি সেই দোষ বাস্তবেই থাকে? প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ‘তবেই তো গিবত বা কুৎসা রটনো হলো। আর যদি ঘটনা সত্য না হয়ে মিথ্যা হয় তবে তার ব্যাপারে মিথ্যা অপবাদ দেয়া হলো। যেটি আরো বড় মারাত্মক অপরাধ।

>> অশ্লীল কথা-বার্তা

রোজা রেখে অশ্লীলতা তথা গানবাদ্য বাজনা থেকে নিজেদের শ্রবণ শক্তিকে বিরত রাখা। রোজা রেখে পরনিন্দা, অন্যায় ওমন্দ আচরণ যেমন গোনাহের কাজ, তেমনি অশ্লীল কথাবার্তা তথা গান-বাদ্যবাজনাও গুরুত্বর অপরাধ। তাই রোজাকে নিরাপদ, সুন্দর ও মকবুল করতে উল্লেখিত বিষয়গুলো থেকে নিজেদের বিরত রাখা ঈমানের একান্ত দাবি।

পরিশেষে উল্লেখিত কাজগুলো শুধু রোজা অবস্থায় নিষিদ্ধ এমন নয় বরং সবসময়ের জন্যই এ কাজগুলো অন্যায় ও ঘৃণিত কাজ। বছর জুড়ে এ কাজগুলো থেকে নিজেকে বিরত রাখতে রমজানই এ কাজ থেকে বিরত থাকতে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করার উপযুক্ত সময়।

আল্লাহ তাআলা রোজাদার ব্যক্তিকে দুনিয়ার যাবতীয় অন্যায় থেকে মুক্ত থেকে যথাযথভাবে আদায় করার মাধ্যমে আল্লাহর পক্ষ থেকে শ্রেষ্ঠ পুরস্কার লাভের তাওফিক দান করুন। আমিন।

এমএমএস/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।