২৭ বছর পর নির্মিত হলো যে মসজিদ

ধর্ম ডেস্ক
ধর্ম ডেস্ক ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ১২:১৮ পিএম, ০৫ মে ২০১৯

৪৪২ বছরের পুরনো অটোমান সম্রাজ্যের অনন্য কারুকার্যময় স্থাপনা আলাদজা মসজিদটি ২৭ বছর আগে বসনিয়ায় যুদ্ধ চলাকালীন সময় ধ্বংস করা হয়েছিল। তুরস্কের অর্থায়নে প্রায় ৩ দশক পর সেটি আবার পুনরায় নির্মিত হলো। আগের মতো ইবাদতের জন্যও উন্মুক্ত করা হলো।

স্থানীয়রা তাদের প্রিয় মসজিদটিতে নামাজ পড়তে উদ্বোধন অনুষ্ঠানে অংশ নেয়। প্রশান্তির সেজদায় মাথা নত করে মুসল্লিরা।

মসজিদটি পূর্ব বসনিয়ার ফোকা শহরে অবস্থিত। অটোমান সম্রাজ্যের কীর্তিমান কাজ আলাদজা মসজিদটি ১৯৯২ সালে যুদ্ধের সময় বসনিয়ান সার্ভ বাহিনী ধ্বংস করে দেয়।

মসজিদটি ধ্বংসের আগে সর্বশেষ ইমাম ছিলেন হুসেইন ইফেন্দি কার্বো। তিনি দীর্ঘ ২৭ বছর ধরে এ আশায় অপেক্ষমান ছিলেন যে, আবার নির্মিত হবে আলাদজা মসজিদ। আবার এ মসজিদে নামাজ পড়বে মুমিন মুসলমান।

Mosque

মসজিদের ইমাম বলেন, ‘গত ১৯ বছর ধরে আমি নিয়মিত এ মসজিদ পরিদর্শনে গিয়েছি। ১৯৭৩ সাল থেকে আমি এ মসজিদে ইমাম হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি। আমার জীবনের সবচেয়ে খারাপ দিনগুলোর মধ্যে একটি ছিল সেদিন, যেদিন আমি মসজিদটি ধ্বংসের খবর শুনেছিলাম।

তিনি আরো বলেন, আজ আমার আত্মা সবচেয়ে বেশি প্রশান্ত। আশি খুবই আনন্দিত যে, আলাদজা মসজিদ এ অঞ্চলের সবা মুসলিমের কেন্দ্র বিন্দুতে পরিণত হবে।

৪৭০ বছর আগে নির্মিত প্রাচীন আলাদজা মসজিদটি সে যুগেও স্থাপত্য নকশা, কাঠামোগত অনুপাত পাথরে খোদাই করা ডিজাইন ও সাজ-সজ্জার জন্য ‘পেইন্টেড মসজিদ’ হিসেবে সুপরিচিত ছিল।

অটোমান স্থাপত্য শিল্পের সুন্দর এ মসজিদটি দেখে পরবর্তী সময়ে অনেক অলংকৃত মসজিদ তৈরি হয়েছিল। এ মসজিদটি ১৯৯২ সালের ২ আগস্ট বসনিয়ার সার্ভ বাহিনী ধ্বংস করে দেয়।

Mosque

অটোমান যুগে পূর্ব বসনিয়ার ফোকা শহরে মোট ১৭টি মসজিদ নির্মাণ করা হয়েছিল। যার ৫টি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ধ্বংস করা হয়। আর বাকি ১২টি মসজিদ ১৯৯২ থেকে ১৯৯৫ সালে সার্ভ বাহিনী ধ্বংস করে দেয়।

২০১২ সালে তুরস্কের আর্থিক সহায়তা ও বসনিয়ার যৌথ উদ্যোগে এ মসজিদটি পুনঃনির্মাণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। স্থানীয়দের জন্য আশা-আকাঙ্খার স্থল আলাদজা মসজিদ খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। রমজানের আগ মুহূর্তে মসজিদটির উদ্বোধন হওয়ায় স্থানীয়রা মহান আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করেন।

নব নির্মিত বর্তমান মসজিদটির সামনে পুরাতন মসজিদটির ধ্বংসাবশেষ সামগ্রীগুলো সংরক্ষণ করা হয়েছে। যা নতুন মসজিদ নির্মাণের সময় ব্যবহার করা সম্ভব হয়নি।

ধ্বংসাবশেষ কারুকাজ ও খোদাই করা নকশাগুলো এ মসজিদের স্মৃতিস্তম্ভ হিসেবেই থাকবে। মসজিদটি পুনঃনির্মাণে ২ মিলিয়ন ইউরো খরচ হয়েছে।

এমএমএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।