আঁটসাঁট ও পাতলা পোশাক পরিধানে ইসলাম কী বলে?
সুন্দর ও মার্জিত পোশাক পরিধানের নির্দেশ প্রদান করেছে ইসলাম। এমন পোশাক পরিধান করা যাবে না, যা পরিধান করলেও মনে হবে না যে, তার শরীরে পোশাক নেই। আবার এমন পাতলা পোশাকও পরিধান করা যাবে না, যা পরিধারন করার পরও মানুষের শরীর অঙ্গগুলো দেখা যাবে।
এ কারণেই ইসলামে আঁটসাঁট তথা টাইট-ফিটিং ও পাতলা পোশাক পরিধান করা নিষেধ। আর তা যদি মেয়েদের ক্ষেত্রে হয় তবে তা তো একেবারেই হারাম তথা নিষিদ্ধ। কারণ মেয়েদের জন্য পর্দা পালন করা ফরজ ইবাদত।
আঁটসাঁট পোশাক পরিধানে ইসলামের নির্দেশনা
ইসলামে হিজাব তথা পর্দার প্রথম দিক হলো তা মেয়েদের সর্বাঙ্গ আবৃত করে রাখে। আর দ্বিতীয়ত মেয়েদের এ পোশাক হতে হবে অবশ্যই ঢিলেঢালা ও স্বাভাবিক। আঁটসাঁট কিংবা পাতলা কাপড় পরিধান করতে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিষেধ করেছেন। তিনি বলেছেন-
‘দুনিয়ার অনেক সুবসনা ও সজ্জিতা নারী আখেরাতে বসনহীনা (উলঙ্গ বলে বিবেচিত) হবে।’ (বুখারি, মুয়াত্তা, তিরমিজি)
অন্য হাদিসে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন-
‘দুই শ্রেণীর দোজখবাসীকে আমি এখনো দেখিনি। ( অর্থাৎ পরবর্তী সময়ের সমাজে এদের দেখা যাবে)-
> এক শ্রেণী হলো- ওই সব নারী, যারা পোশাক পরিধান করেও উলঙ্গ। যারা নিজেরা পথচ্যুত এবং অন্যদেরকেও পথচ্যুত করবে। এদের মাথা হবে উটের পিঠের চুটির মতো ঢং করে বাঁকানো। এরা জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না। এমনকি জান্নাতের খুশবুও তারা পাবে না।
> দ্বিতীয় শ্রেণী হলো- ওই সব পুরুষ, যারা সমাজে দাপট দেখিয়ে চলে, তাদের হাতে থাকে বাঁকানো লাঠি বা আঘাত করার মতো হাতিয়ার। যা দিয়ে তারা মানুষকে মারধর করে বা কষ্ট দেয়।’ (মুসলিম, মুসনাদে আহমদ)
প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের উল্লেখিত হাদিস দু’টি থেকে এ কথা সুস্পষ্ট যে, পাতলা কিংবা আঁটসাঁট পোশাক পরিধান করা উলঙ্গতা ভিন্ন আর কিছুই নয়।
পাতলা ও আঁটসাঁট পোশাকে যেমন পর্দা পালনে অবহেলা করা থেকে সতর্ক করা হয়েছে। তেমনি এর ভয়াবহতা ও সামাজিক ক্ষতিও সুস্পষ্ট। আঁটসাঁট ও পাতলা পোশাক মানুষ বেহায়াপনায় জড়িয়ে তোলে। এ পোশাক পরিধানের এ আচরণ সমাজকেও কুলষিত করে তোলে। আর এ কারণেই আঁটসাঁট ও পাতলা পোশাক পরিধানকারীদের ভোগ করতে হবে কঠিন শাস্তি।
ইসলামী পোশাকের বৈশিষ্ট্য
ইসলামসম্মত পোশাক বলতে সেই পোশাককে বোঝায়, যা লজ্জাস্থান আবৃতকারী, মানানসই, সাদৃশ্যবর্জিত, ব্যক্তিত্বের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ, বিলাসিতাবিবর্জিত, অহংকারমুক্ত, পরিচ্ছন্ন এবং (পুরুষের বেলায়) সেটি লাল, জাফরান, উসফুর (এক ধরনের গুল্ম, যা থেকে হলুদ রং পাওয়া যায়) ও ওর্স (এক ধরনের রঙের গাছ) ইত্যাদি রঙের হতে পারবে না।
সুতরাং যদি পরিধেয় পোশাক এরূপ হয় যে, আবৃত অংশের চামড়া বা হুবহু আকৃতি তার বাইরে থেকে ফুটে ওঠে তাহলে তাতে পোশাকের উদ্দেশ্য পূরণ হয় না। এরূপ পোশাক পরিধান করা নিষিদ্ধ। কেননা শর্টকাট, আঁটসাঁট পোশাক বিবস্ত্রতার নামান্তর।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহর নারী-পুরুষ সবাইকে আঁটসাঁট ও পাতলা পোশাক পরিধান করা থেকে বিরত থাকার তাওফিক দান করুন। উভয়কে শালিন পোশাক পরিধানের পাশাপাশি পর্দা পালনের তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/এমকেএইচ