যে কারণে মানুষ কঠোর শাস্তি ভোগ করবে

ধর্ম ডেস্ক
ধর্ম ডেস্ক ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ১২:১১ পিএম, ১৩ ডিসেম্বর ২০১৮

পরকালীন জীবনে সফলতা লাভ করাই মুমিন-মুসলমানের একমাত্র লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য। সে কারণেই তারা তাওহিদ রেসালাত ও আখেরাতে বিশ্বাস করে। কিন্তু প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আগমনের পর যারা তাঁর আগমনের ব্যাপারে জানতো, তারা হিংসা ও অজ্ঞতাবশত তার বিরোধিতা করতো। তাঁর ওপর নাজিলকৃত কুরআনকে মিথ্যা সব্যস্ত করে বেড়াতো।

এ কারণেই আল্লাহ তাআলা তাদেরকে ফেরাউন ও তার আগের যুগের অবিশ্বাসীদের সঙ্গে তুলনা করেছেন। তাদের অবস্থা তুলে ধরেছেন, যাতে তারা সেসব বর্ণনা থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের অনুসরণ ও অনুকরণ করে। সে বর্ণনা থেকে শিক্ষা নিয়ে পরকলীন জীবনকে সুন্দর ও সফল করতে পারে।

মক্কার ইয়াহুদি, খ্রিস্টান ও মূর্তিপূজকদের উদ্দেশ্যে আয়াত নাজিল করে সে ঘটনা বর্ণনার মাধ্যমে সতর্ক করেছেন। এ সতর্কতা শুধু সে সময়ের জন্যই নয় বরং বর্তমান সময়ের অবিশ্বাসীদের জন্যও সতর্ক বার্তা। যাতে বর্তমান সময়ের অবিশ্বাসীরাও এ আয়াত থেকে শিক্ষা নিতে পারে। কেননা আল্লাহ তাআলা অবিশ্বাসীদেরকে তাদের অবিশ্বাসের কারণে পাকড়াও করবেন। আল্লাহ তাআলা অবিশ্বাসীদের উদ্দেশ্য ঘোষণা করেন-

jagonews

আয়াতের অনুবাদ

jagonews

আয়াতের পরিচয় ও নাজিলের কারণ

সুরা আল-ইমরানের ১১নং আয়াতে আল্লাহ তাআলা ফেরাউন সম্প্রদায়ের অবস্থা আগের অবিশ্বাসীদের সঙ্গে তুলনা করেছেন। আর আল্লাহর আয়াতকে মিথ্যা সাব্যস্ত করার কারণে তাদের জন্য কঠিন শাস্তির হুশিয়ারি দেয়া হয়েছে। যাতে মানুষ কোনোভাবেই মহান আল্লাহর বিধানকে অস্বীকার না করে।

এ আয়াতে কাফেরদের পরিণাম কেমন হবে তার বিবরণ দেয়া হয়েছে। যারা ইসলামকে অবিশ্বাস করে তাদের অবস্থা হলো অবিশ্বাসী ফেরাউন সম্প্রদায়ের মতো। যেভাবে ফেরাউন সম্প্রদায় এবং তার পূর্বে লোকেরা হজরত মুসা আলাইহিস সালামসহ অন্যান্য নবি-রাসুলদের বিরোধিতা ও তাদের ওপর অবতীর্ণ নির্দেশকে অমান্য করেছিল, আল্লাহর বাণীকে মিথ্যা সাব্যস্ত করেছিল।

ঠিক পূববর্তী অবিশ্বাসীদের মতো ইয়াহুদি, খ্রিস্টান এবং মূর্তিপূজকরা প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে অস্বীকার করে ক্ষ্যান্ত হননি বরং তাঁকেসহ তার ওপর নাজিল হওয়াত কুরআনের আয়াতকেও মিথ্যা সাব্যস্ত করে। ফলে আল্লাহ তাআলা এসব অবিশ্বাসীদেরকে কঠোর হুশিয়ারি ঘোষণা করেন।

যারা প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের অবাধ্যতা করবে। তাকে অস্বীকার করবে এবং কুরআনের বিধানকে মিথ্যাজ্ঞান করবে, পূববর্তী সম্প্রদায়ের মতো প্রিয়নবির দুশমনদেরকেও আল্লাহ তাআলা ধ্বংস করে দেবেন।

আয়াতের ব্যাখ্যায় এসেছে

- যেভাবে মুসা আলাইহিস সালামকে ফেরাউন সম্প্রদায় কষ্ট দিয়েছিল, ঠিক সেভাবে ইয়াহুদি, খ্রিস্টান ও পৌত্তলিক তথা মূর্তিপূজারীরা প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে কষ্ট দেয়। পক্ষান্তরে আল্লাহ তাআলা যেভাবে মুসা আলাইহিস সালামকে সাহায্য করেছেন, ঠিক সেভাবে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে আল্লাহ তাআলা সাহায্য করবেন।

- যারা কুরআনের অনুসরণ ও অনুকরণ করবে তাদের জন্য রয়েছে আল্লাহর সাহায্য। আর যারা কুরআনের বিরোধিতা করবে আল্লাহ তাআলা ঘোষণা অনুযায়ী তাদেরকে ধ্বংস করে দেবেন।

- আবার যেভাবে ফেরাউন সম্প্রদায় সত্য ধর্মের বিরোধিতার কারণে চিরকাল জাহান্নামের শাস্তি ভোগ করবে, এমনিভাবে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বিরোধিতাকারীরাও চিরকাল শাস্তি ভোগ করবে।

- আল্লাহ তাআলা যেভাবে অবিশ্বাসী ফেরাউন সম্প্রদায়কে শাস্তি দিয়েছেন। ঠিক সেভাবে প্রিয়নবি সাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বিরোধিতাকারীদেরকেও কঠোর শাস্তি প্রদান করবেন।

মূল কথা হলো

যারা প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সতত্যতা অস্বীকার করবে, ইসলামকে অস্বীকার করবে বা করছে, তাদের পরিণাম হবে অত্যন্ত ভয়াবহ। তাদের ধন-সম্পদ, সন্তান-সন্ততি পরাকালের শাস্তি থেকে নাজাত পাওয়ার ব্যাপারে কোনো সুযোগই পাবে না। যেমনি ভাবে ফেরাউন ও তার দলবল তাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্তুতি দ্বারা কোনো উপকার লাভ করতে পারেনি।

সুতরাং যারা ইসলাম ও মুসলমান বিরোধী সম্প্রদায়! তাদের জন্য রয়েছে আগের যুগের অবিশ্বাসীদের মতো কঠোর শাস্তি। যা তাদেরকে ভোগ করতেই হবে।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে উল্লেখিত আয়াত থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে ইসলাম ও কুরআনের অবিশ্বাস থেকে নিজেদের বিরত রাখার তাওফিক দান করুন। কুরআনের বিধান অনুযায়ী জীবন পরিচালনার তাওফিক দান করুন। পরকালে সফলতা লাভের তাওফিক দান করুন। আমিন।

এমএমএস/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।