যে পোশাকে নারীদের নামাজ নিষিদ্ধ
নারীদের জন্য নফল নামাজ পড়ার কোনো তাগিদ নেই। তারপরও নারীরা নফল নামাজ পড়ায় পুরুষের তুলনায় এগিয়ে। কিন্তু অনেক নারীই বসে বসে সব নামাজ আদায় করেন। নারী-পুরুষের কেউ যদি বসে ফরজ নামাজ আদায় করে তবে তাদের নামাজ হবে না।
ফরজ নামাজ অবশ্যই দাঁড়িয়ে আদায় করতে হবে। কারণ সবার জন্য দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করাও একটি ফরজ কাজ।
সাধারণত নারীরা শাড়ি পড়ে নামাজ পড়েন। আর শাড়িতে কোনোভাবেই পর্দা আদায় হয় না। কেননা শাড়ি পড়ে নামাজ আদায় করলে পর্দার লংঘন হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। যেহেতু পর্দা নামাজের মতোই ফরজ তাই নামাজের আগে পর্দা ঠিক রেখেই নামাজ আদায় করা জরুরি।
নারীরা যে পোশাকই পরিধান করুক না কেন, সে নারী যদি অন্ধকার ঘরে একাও নামাজ আদায় করে তবে নামাজের সময় এ বিষয়গুলোর প্রতি লক্ষ্য রাখতে হবে। যার ব্যতিক্রম হলে নামাজ হবে না-
- যদি কপালের কাছে কিছু চুল বেরিয়ে যায়
- কান একটা বা দুটো বেরিয়ে যায়
- কানের পাশে ঝুলফির চুল বেরিয়ে যায়
- পেছনের চুল বেরিয়ে যায়
- থুতনির নিচে গলার কাছে কোনো অংশ বেরিয়ে যায়
- হাতের কাছে কিছু অংশ বেরিয়ে যায়
- পেট বা পিঠের কাছে কিছু অংশ বেরিয়ে যায়।
অর্থাৎ শুধু মুখমণ্ডল, হাতের কব্জি ও পায়ের পাতা ছাড়া আর কোনো অংশ যদি নামাজের সময় বেরিয়ে যায় এভাবে সারা জীবন নামাজ পড়লে সে নামাজ আদায় হবে না। সে নারী বেনামাজি হিসেবে গণ্য হবে।
সর্বাবস্থায় নারীদের পোশাক যেমন হবে
- নারীদের ফরজ ও সুন্নাত পোশাক হলো কামিজ বা ম্যাক্সি। যা গলা থেকে শুরু করে পায়ের গোড়ালির নিচু বা পাতা পর্যন্ত ঝুলাবে। কামিজের বা ম্যাক্সির হাতা কব্জি কিংবা হাতের আঙ্গুল পর্যন্ত লম্বা হতে হবে।
- আর মাথায় এমন হিজাব বা ওড়না পরিধান করতে হবে যাতে কোনোভাবেই গলা, ঘাড়, কান, মাথা ও ঝুলপির চুল কিংবা বুকের কোনো অংশ তথা চামড়া দেখা না যায়।
- আর ম্যাক্সির নিচে পাজামা অথবা সায়া পরিধান করতে হবে। স্বামীর সামনে ছাড়া অন্য সব জায়গায় সর্বাবস্থায় এ পোশাকগুলো পরিধান করা নারীর জন্য ফরজ।
বাড়ি কিংবা ঘরের ভেতরে বাহিরের কাজ কর্ম করাসহ সর্বাবস্থায় এ পোশাক পরিধান করা ফরজ এবং এটিই সুন্নাতি পোশাক।
যেহেতু সর্বাবস্থায় এ পোশাক ফরজ তাই নামাজের ক্ষেত্রেও নারীকে এ পোশাক পরিধান করেই নামাজ আদায় করতে হবে। শাড়ি পরিধানে যদি এ অবস্থার ব্যতিক্রম হয় তবে শাড়িতে যেমন পর্দার ফরজ আদায় হবে না তেমনি নামাজও আদায় হবে না।
মনে রাখতে হবে
যদি কারো কাপড় না থাকে তবে সে ব্যক্তি নারী-পুরুষ যে-ই হোক; যদি একাকি ঘরে কিংবা অন্ধকার ঘরে ন্যাংটা হয়ে নামাজ আদায় করে তাতে তার নামাজ আদায় হয়ে যাবে।
কিন্তু কাপড় আছে অবহেলা করে পোশাক পরেননি, ফরজ সতর বেরিয়ে গেছে তাতে নারী-পুরুষ কারো নামাজই আদায় হবে না। জীবনভর নামাজ আদায় করলেও নামাজ আদায় হবে না।
যেমন কোনো পুরুষ কাপড় থাকা স্বত্ত্বেও একটা প্যান্ট এমনভাবে ডিল করে পরিধান করে; যার ফলে রুকু করতে গেলে নাভির কাছে কিছু অংশ কিংবা কোমরের কিছু অংশ বেরিয়ে যায় তাতে তার নামাজ আদায় হবে না।
নারীদের পোশাকের ক্ষেত্রে পুরুষ ও দায়িত্বশীলদের জন্য সতর্কতা
যে পুরুষের দায়িত্বে কোনো নারী থাকে। হতে পারে সে নারী তার মা, বোন কিংবা স্ত্রী। তাদের নামাজের পোশাক ঠিক আছে কিনা, তারা পর্দা পারন করে কিনা, সে বিষয়ে খোঁজ খবার রাখাও কর্তা ব্যক্তির একান্ত দায়িত্ব।
যদি সে দায়িত্বশীল ব্যক্তি নারীর নামাজের ব্যাপারে কোনো খোঁজ খবর না রাখে; কিংবা নারীর পর্দা ও নামাজের পোশাকের ব্যাপারে সতর্ক না করে, ব্যবস্থা না করে তবে এ সব নারী তাদের দায়িত্বশীল পুরুষকে অপরাধী হিসেবে সাব্যস্ত করবে।
সুতরাং দায়িত্বশীল সব পুরুষের উচিত নারীর নামাজের পোশাক কিংবা পর্দার পোশাক ঠিক আছে কিনা সে বিষ্র খোঁজ খবর নেয়া। এটা পুরুষের জন্য ফরজ দায়িত্ব। কেননা দুনিয়াতে প্রতিটি মানুষই দায়িত্বশীল, তাকে তার দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহর সব নারীকে পর্দা পালন করার এবং নামাজের ক্ষেত্রে উল্লেখিত বিষয়গুলো মেনে নামাজ আদায় করার তাওফিক দান করুন। দায়িত্বশীল পুরুষদেরকে এ বিষয়ে তদারকি করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/জেআইএম