হাজি আবদুল ওয়াহাবের জানাজায় লাখো মানুষের ঢল

ধর্ম ডেস্ক
ধর্ম ডেস্ক ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৫:৩১ পিএম, ১৯ নভেম্বর ২০১৮

তাবলিগ জামাতের শীর্ষ মুরুব্বি ও আলমি শূরার প্রধান হাজি আবদুল ওয়াহাবের জানাজা সম্পন্ন হয়েছে। গতকাল পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের রাইবেন্ডের ঐতিহাসিক ইজতেমার মাঠে লাখো মুসল্লির অংশগ্রহণে মাগরিবের নামাজ আদায় করার পর পরই তার নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।

তার অসিয়ত ছিল যে, তাকে দ্রুত দাফন করা। সে কারণেই দেরি না করে হাজি আবদুল ওয়াহাবের ওসিয়ত অনুযায়ী সুন্নাত তরিকায় দ্রুত তার কাফন দাফনের ব্যবস্থা করা হয়।

পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের স্পিকার পারভেজ এলাহিসহ পাঞ্জাব পরিষদের বহু শীর্ষ নেতা তার জানাজায় উপস্থিত অংশ নেন।

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান তাবলিগ জামাতের এ শীর্ষ মুরুব্বি হাজি আব্দুল ওয়াহাবের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন।

শোক বার্তায় তিনি বলেন, হাজি আবদুল ওয়াহাব দ্বীনের অনেক বড় খাদেম ছিলেন। তার জায়গা পূরণীয় নয়। ইসলামের খেতমতে তিনি নিজের জানমাল কুরবান করেছেন। মানুষ তাকে চিরকাল স্মরণ করবে।

উল্লেখ্য, হাজি আবদুল ওয়াহাব দেশ বিভাগের আগে ১৯২৩ সালের ১ জানুয়ারি ভারতের দিল্লিতে ঐতিহাসিক রাজপুত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার মূল নাম রাও মুহাম্মদ আব্দুল ওয়াহাব। দেশ ভাগের পর তিনি পাকিস্তান চলে যান।

১৯৪৪ সালে তিনি তাবলিগ জামাতে যোগদান করেন। সে সময় তিনি ব্রিটিশ ভারতে একটি ভূমি অফিসে তহসিলদার হিসেবে কাজ করতেন। তাবলিগ জামাতের কাজে নিজেকে পুরোপুরি আত্মনিয়োগ করতে তহসিলদারের চাকরি ছেড়ে দেন।

লাহোর ইসলামিয়া কলেজ থেকে স্নাতক সম্পন্ন করা হাজি আব্দুল ওয়াহাব তাবলিগ জামাতের প্রতিষ্ঠাতা মাওলানা ইলিয়াস রহমাতুল্লাহি আলাইহির একান্ত সঙ্গী ছিলেন। তাবলিগে যোগদানের আগে তিনি মজলিসে আহরার-ই-ইসলামের জন্যও কাজ করেছিলেন।

তিনি ১৯৪৪ সালের ১ জানুয়ারি দিল্লির নিজামুদ্দিন মারকাজে আসেন। সে সময় তিনি একাধারে দীর্ঘ ৬ মাস তাবলিগের প্রতিষ্ঠাতা ইলিয়াস কান্ধলভির সোহবত গ্রহণ করেন। দাওয়াতে দ্বীনের মেহনত করে তাবলিগ জামাতের তৃতীয় শীর্ষ প্রধান মুরব্বি হিসেবে অধিষ্ঠিত হন।

আরও পড়ুন > মাওলানা হাবিবুর রহমানের জানাজায় লাখো মানুষের ঢল

পাকিস্তানে যারা তাবলিগ জামাতে সমগ্র জীবন বিলীন করে দিয়েছেন তাদের মধ্যে অন্যতম একজন ছিলেন হাজি আব্দুল ওয়াহাব। শুধু তাই নয়, তিনি পাকিস্তান তাবলিগ জামাতের আমিরের দায়িত্বও পালন করেন।

তিনি মাওলানা ইলিয়াস কান্ধলভির শিষ্য হলেও ইউসুফ কান্ধলভি এবং ইনামুল হাসান কান্ধলভির সরাসরি সাথী ছিলেন। বিশেষ করে হাকিমুল উম্মত হজরত মাওলানা আশরাফ আলি থানবি, শায়খ আব্দুল কাদের রায়পুরি ও শায়খুল ইসলাম সাইয়্যেদ হুসাইন আহমদ মাদানি রহমাতুল্লাহ আলাইহির সোহবত লাভ করেন।

হাজী আব্দুল ওয়াহাব ২০১৩ সালের অক্টোবর মাসে পাকিস্তানি তালেবানদের সাথে শান্তি আলোচনা করেন। দীর্ঘ বক্তব্য প্রদানের জন্য গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ডে যাদের নাম এসেছে, তাদের মধ্যে হাজি আব্দুল ওয়াহাবও একজন। ২০১৪-১৫ সালে বিশ্বের ৫০০ শীর্ষ মুসলিম ব্যক্তিদের তালিকায় হাজী আব্দুল ওয়াহাব ১০ নম্বরে ওঠে আসেন।

আল্লাহ তাআলা দাওয়াতে দ্বীনের এ রাহবারকে জান্নাতের সর্বোচ্চ মাকাম দান করুন। আমিন।

এমএমএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।