হজ ও ওমরা পালনকারী নারীদের পর্দা

ধর্ম ডেস্ক
ধর্ম ডেস্ক ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৬:৩৬ পিএম, ০৫ আগস্ট ২০১৮

হজ শারীরিক ও আর্থিক ইবাদত হলেও আল্লাহ তাআলার নৈকট্য অর্জনের অন্যতম মাধ্যমও এটি। তাই হজ সম্পাদনে নারী-পুরুষ উভয়েই পর্দার প্রতি যথাযথ গুরুত্বারোপ করেছেন। হজ ও ওমরা পালনে নারীদেরকে অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করা একান্ত প্রয়োজন। নারীদের চেহারা ঢেকে হজ ও ওমরার কাজ সম্পন্ন করা জরুরি। কারণ নারীদের মুখমণ্ডল তাদের সৌন্দর্যের প্রতীক।

কোনোভাবেই হজ ও ওমরা পালনকারী নারী সৌন্দর্য প্রকাশসহ সুগন্ধি লাগিয়ে কাবা শরিফ তাওয়াফ ও সাঈ করতে যাবে না। তাওয়াফ ও সাঈসহ হজের যাবতীয় রোকন পালনে পর্দা এবং সৌন্দর্য প্রকাশ করা থেকে নিজেদেরকে পরিহার করা নারীদের জন্য আবশ্যক কর্তব্য।

কেননা নারীরা শুধুমাত্র বৈধ মাহরামদের সামনে তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ করতে পারবে। আর নারীদের সৌন্দর্য প্রকাশের নির্ভরযোগ্য ব্যক্তি হলেন প্রত্যেকেরে স্বামী। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তাআলা সুস্পষ্ট ভাষায় ঘোষণা করেন-
‘বিশ্বাসী নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে সংযত করে ও তাদের লজ্জাস্থান রক্ষা করে। তারা সাধরণত যা প্রকাশ করে থাকে তা ব্যতিত তাদের সৌন্দর্য যেন প্রদর্শন না করে, তাদের বুকের ওপর যেন মাথার কাপড় দ্বারা আবৃত রাখে। তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, ছেলে, স্বামীর ছেলে, ভাই, ভাইয়ের ছেলে, বোনের ছেলে, তাদের নারীগণ, নিজ অধিকারভূক্ত দাস, যৌনকামনা রহিত অনুচর পুরুষ অথবা নারীদের গোপন অঙ্গ সম্বন্ধে অজ্ঞ বালক ব্যতিত কারও কাছে তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে। আর তারা নিজেদের যে সৌন্দর্য লুকিয়ে রেখেছে তা লোকদের সামনে প্রকাশ করে দেয়ার উদ্দেশ্যে সজোরে চলাফেরা না করে। হে মুমিনগণ! তোমরা সকলেই আল্লাহর কাছে তাওবা করো; আশা করা যায় তোমরা সফলকাম হবে।’ (সুরা নুর আয়াত ৩১)

সুতরাং হজ ও ওমরা পালনের সময় নারীদের করণীয় হলো-
- কাবা শরীফ তাওয়াফের সময় ভীড় উপক্ষো করে নিরাপদ স্থান দিয়ে চক্কর দেয়ার মাধ্যমে পর্দার সঙ্গে তাওয়াফ সম্পন্ন করা।

নারীদের হাজরে আসওয়াদ চুম্বন
হাজরে আসওয়াদ ও রোকনে ইয়ামেনিতে সব সময় প্রচণ্ড ভীড় থাকে। এ ভীড়ের মধ্যে নারীরা যদি হাজরে আসওয়াদ চুম্বন ও রোকনে ইয়ামেনি স্পর্শ করতে যায় তবে নিশ্চিত পর্দার লঙ্ঘন হবে। তাই এ ভীড়ের মধ্যে নারীদের হাজরে আসওয়াদ ও রোকনে ইয়ামেনিতে চুম্বন ও স্পর্শ করতে না যেয়ে দূর থেকে ইশারার মাধ্যমে তাওয়াফ সম্পন্ন করাই উত্তম।

- তাওয়াফের পর মাকামে ইবরাহিম বরাবর মসজিদে হারামে নারীদের জন্য নির্ধারিত স্থানে নামাজ আদায় করা।
- সাফা ও মারওয়ায় সাঈ করার সময়ও তাওয়াফের ন্যায় পর্দার সঙ্গে ৭ চক্করের মাধ্যমে সাঈ সম্পন্ন করা।
তাওয়াফ ও সাঈতে নারীরা তাদের আপনজন তথা মাহরামের পেছনে পেছনে তাওয়াফ ও সাঈ সম্পন্ন করবে।

মনে রাখা জরুরি
তবে হজ ও ওমরার যাবতীয় রোকনগুলো পালনে নারীরা নেকাব বা পর্দা করলেও মুখমণ্ডল খোলা রাখতে হবে। যদি কেউ মুখমণ্ডল আবৃত করতে চায় তবে মুখের সামনে যাতে খালি থাকে সে রকম নেকাব পরবে। যেমন হেলমেটের মতো নেকাব। যাতে নেকাবের কাপড় মুখের চামড়াকে স্পর্শ না করে।

পরিশেষে…
নারীদের জন্য পর্দা করা ফরজ। তাই হজ ও ওমরা পালনে নারীরা পর্দার সঙ্গে মাহরামের পেছনে পেছনে হজ ও ওমরার রোকনগুলো যথযথ পালন করাই তাদের আবশ্যক।

তবে অন্যান্য দেশ থেকে আগত নারীদের চলাফেরার প্রতি লক্ষ্য রেখে নিজেদেরকে তাদের মতো হজ ও ওমরায় অংশ গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকতে হবে। মনে রাখতে হবে নারীর জন্য হজ যেমন ফরজ, তেমনি নারীর জন্য পর্দাও ফরজ।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহর সব নারীকে পর্দার সঙ্গে হজ ও ওমরার যাবতীয় কাজগুলো যথাযথ পালন করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

এমএমএস/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।