কাবা শরিফ দেখা ও তাওয়াফের ফজিলত

ধর্ম ডেস্ক
ধর্ম ডেস্ক ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ০২:১১ পিএম, ২৩ জুলাই ২০১৮

হজ পালন আল্লাহ তাআলার নির্দেশ। যার সামর্থ রয়েছে তার জন্য হজ করা ফরজ। আল্লাহ তাআলা হজরত ইবরাহিম আলাইহিস সালাম ও ইসমাইল আলাইহিস সালামের মাধ্যমে পবিত্র কাবা শরিফ পুনঃনির্মাণ করান।

বাইতুল্লাহ নির্মাণের পর আল্লাহ তাআলা হজরত ইবরাহিম আলাইহিস সালামকে নির্দেশ দেন মানুষকে হজের আহ্বান করার জন্য। হজরত ইবরাহিম আলাইহিস সালাম আল্লাহর নির্দেশে মানুষকে হজের জন্য আহ্বান করেন। তার সে আহ্বানটি ছিল এমন-
‘এবং মানুষের মাঝে হজের ঘোষণা দাও, তারা তোমার কাছে আসবে পায়ে হেঁটে ও সর্ব প্রকার ক্ষীণকায় উটসমূহের পিঠে (সাওয়ার হয়ে), তারা আসবে দূর-দূরান্ত থেকে বহু পথ অতিক্রম করে।’ (সুরা হজ : আয়াত ২৭)

মহান আল্লাহর কুদরাতে এক অনন্য নিদর্শন এই যে, তিনি হজরত ইবরাহিম আলাইহি সালামের মুখের সে আহ্বান মক্কার পাহাড় চূড়া থেকে পৃথিবীর প্রতিটি প্রান্তে পৌছে দিয়েছেন। আর তাইতো সে সময় থেকে মুসলিম উম্মাহ ‘লাব্বায়িক’ ধ্বনিতে মুখরিত করে দূর-দূরান্ত থেকে হজের উদ্দেশ্যে বাইতুল্লায় হাজির হতে শুরু করে।

হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা মাত্র ৫ দিনে সম্পাদন হয়ে যায়। কিন্তু এ হজের এ সফরে মুসলিম উম্মাহ সবচেয়ে বেশি যে কাজটি করে তা হলো কাবা শরিফকে অন্তর দিয়ে গভীর দৃষ্টিতে দেখা এবং তাওয়াফ।

কেননা কাবা শরিফ দেখা এবং তাওয়াফে রয়েছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ফজিলত ও মর্যাদা। হাদিসে পাকে এসেছে-

হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, আল্লাহ তাআলা বাইতুল্লাহ তথা কাবা শরিফের ওপর প্রতিদিন ১২০টি রহমত নাজিল করেন। তার মধ্যে-
- ৬০টি রহমত তাওয়াফকারীদের জন্য।
- ৪০টি রহমত নামাজ আদায়কারীদের জন্য।
- ২০টি রহমত কাবা শরিফ দর্শণার্থীদের জন্য।’

অতএব কাবা শরিফে অবস্থানকালে যত বেশি সম্ভব মন ভরে দেখা এবং তাওয়াফ করা দরকার। যারা কোনো কারণে কাবা শরিফ তাওয়াফ করতে অপারগ তারা অন্তত মন ভরে কাবা শরিফকে দেখে নেবে।

কাবা শরিফ তাওয়াফের ফজিলত প্রসঙ্গে অন্য হাদিসে এসেছে-
হজরত ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি, কেউ যদি যথাযথভাবে সাত চক্করের মাধ্যমে কাবা শরিফ তাওয়াফ করে এবং দুই রাকাআত নামাজ আদায় করে তবে তার একটি ক্রীতদাস আজাদ করার সমান সাওয়াব হয়।
তাওয়াফের প্রতিটি কদমে আল্লাহ তার একটি গোনাহ ক্ষমা করে দেন এবং একটি নেকি লিখে দেন। (মুসনাদে আহমদ)

হাদিসের অন্য বর্ণনায় এসেছে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘হে বনি আবদ্ মান্নাফ! এ বাইতুল্লাহ (কাবা শরিফ) তাওয়াফে এবং নামাজ আদায়ে কাউকে বাধা দেবে না। চাই তা দিনে-রাতে যে কোনো সময়েই ইচ্ছা করুক না কেন।’ (তিরমিজি)

হজের আনুষ্ঠানিক ৫ দিনের কাজ সম্পন্ন হওয়ার আগে ও পরের বেশি বেশি তাওয়াফ, বাইতুল্লাহ নামাজ এবং হৃদয় ভরে কাবা শরিফ দেখার মাধ্যমে সময় অতিবাহিত করা জরুরি। তবে আল্লাহ তাআলা কর্তৃক প্রদত্ত ১২০টি রহমত লাভের আশা করা যায়।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে পবিত্র নগরী মক্কায় অবস্থানকালে প্রতিদিন বাইতুল্লাহ তাওয়াফ, নামাজ এবং গভীর দৃষ্টিতে বাইতুল্লাহ দেখার তাওফিক দান করুন। আমিন।

এমএমএস/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।