অভাব-অনটনের সময় দান-সাদকার বিনিময় কী?

ধর্ম ডেস্ক
ধর্ম ডেস্ক ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৫:৪৯ পিএম, ১২ জুলাই ২০১৮

‘তোমরা সৎকাজে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে এগিয়ে চলো।’ (সুরা বাকারা : আয়াত ১৪৮) আল্লাহ তাআলা বান্দাকে তার পথে প্রতিযোগিতার সঙ্গে সৎ কাজ করার উপদেশ দিয়েছেন। দান-সাদকা সৎ কাজসমূহের মধ্যে অন্যতম। আল্লাহর পথে দান-সাদকার প্রতিযোগিতায় দুনিয়া ও পরকালের কল্যাণ রয়েছে। অভাব-অনটনের সময় এবং সম্পদের প্রতি লোভের সময় দান সাদকায় রয়েছে বেশি সাওয়াব লাভের ঘোষণা।

প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর উম্মতকে আল্লাহর ক্ষমা লাভ এবং প্রশস্ত জান্নাতের দিকে এগিয়ে যেতে দান-সাদকার প্রতিযোগিতায় নিজেদের ধাবিত করতে বলেছেন। হাদিসে এসেছে-

হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, একবার একলোক রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে এসে জিজ্ঞাসা করলো, হে আল্লাহর রাসুল! (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দান-সাদকার মধ্যে সবচেয়ে বেশি সাওয়াব কোন সাদকায়?

তিনি (প্রিয়নবি) বললেন, তুমি এমন অবস্থায় দান করবে যে, তুমি (শারীরিকভাবে) সুস্থ; ধন-সম্পদের প্রতি লোভ আছে; অভাব-অনটনকে ভয় করছো এবং ধন-সম্পদের আশাও পোষণ করছো।

(ওই অবস্থায় এ আশংকায়) তুমি দান করার ব্যাপারে এমন কার্পণ্য করো না যে, শেষে মৃত্যুর সময় এসে যায়। আর তখন তুমি এটা ঘোষণা কর যে, এ পরিমাণ অমুকের এবং সে পরিমাণ অমুকের। অথচ অমুকের জন্য সে মাল আগেই নির্ধারিত হয়ে গেছে। (বুখারি ও মুসলিম)

হাদিসের আলোকে বুঝা যায়-
সম্পদের প্রয়োজনের সময় গরিব-দুঃখীর মাঝে অর্থ দান করা সর্বোত্তম ইবাদত এবং সবচেয়ে বিশ সাওয়াবের কাজ। আবার সম্পদের প্রতি প্রচণ্ড লোভ-লালসা থাকা অবস্থার দানও উত্তম। আর এ কারণেই হাদিসে পাকে এ ইবাদতকে সর্বোত্তম সাওয়াবের ইবাদত হিসেবে গণ্য করা হয়েছে।

দান-সাদকার মতো সৎ কাজের দিকে প্রতিযোগিতা করে এগিয়ে গেলে আল্লাহ তাআলা ওই বান্দাকে ক্ষমা করে দেন। জান্নাতের সুসংবাদও তাদের জন্য। আল্লাহ বলেন-

‘তোমরা সেই পথে দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলো, যা তোমাদেরকে প্রভুর ক্ষমা এবং আকাশ ও পৃথিবী সমান প্রশস্ত জান্নাতের দিক এগিয়ে নিয়ে গেছে।’ (সুরা আল ইমরান : আয়াত ১৩৩)

মনে রাখতে হবে
একজন ঈমানদারের অন্যতম গুণ হলো- আল্লাহর দেয়া সম্পদ তাঁরই পথে ব্যয় করা। যারা এ গুণ অর্জন করতে সমর্থ হবে তাদের জন্য সৎপথ প্রাপ্তির ঘোষণার পাশাপাশি সফলতার ঘোষণাও রয়েছে কুরআনে পাকে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘যারা (গায়েবের) অদৃশ্যের প্রতি ঈমান আনে, নামাজ প্রতিষ্ঠা করে এবং আল্লাহর দেয়া রিজিক থেকে তাঁরই পথে দান করেন।'

এভাবে কুরআন-হাদিসে দান-সাদকাসহ যাবতীয় নেক আমলের ব্যাপারে অসংখ্য নির্দেশনা রয়েছে। যারা কুরআন-সুন্নাহর নির্দেশেনায় নিজেদের নিয়োজিত করতে পেরেছে তারাই সফল।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে তার নির্দেশ ও উপদেশ মোতাবেক সম্পদসহ দুনিয়ার যাবতীয় খাহেশাত ও অভাব থাকা সত্ত্বেও তাঁর পথে ও মতে স্থির থাকার তাওফিক দান করুন। সর্বাবস্থায় তাঁর পথে ধন-সম্পদ দান-সাদকা করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

এমএমএস/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।